পুলিশ কনস্টেবলের সহায়তায় ৫০ হাজার টাকা ফিরে পেলেন মালেকা

মালেকা বেগমকে টাকা ফেরত দিচ্ছেন পুলিশ কর্মকর্তারা- সমকাল
বগুড়া ব্যুরো
প্রকাশ: ২০ অক্টোবর ২০১৯ | ০৭:৩৮
বগুড়ায় অজিত কুমার মণ্ডল নামের ট্রাফিক পুলিশের এক কনস্টেবলের সহায়তায় পথে হারিয়ে ফেলা ৫০ হাজার টাকা ফেরত পেয়েছেন মালেকা বেগম নামের এক নারী।
রোববার দুপুরে বগুড়া শহরের ফতেহ্ আলী মোড়ের এই ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ছে এবং সবাই পুলিশ কনস্টেবলকে ধন্যবাদ জানাতে থাকেন।
অজিত কুমার মণ্ডল সমকালকে জানান, রোববার দুপুরে তিনি শহরের ফতেহ্ আলী মোড়ে দায়িত্ব পালন করছিলেন। আনুমানিক দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তিনি লক্ষ্য করেন উত্তর দিকে ফতেহ্ আলী বাজারের গেটের বাম পাশে একটি ব্যাগ পড়ে আছে। হঠাৎ করে এক রিকশা চালক পড়ে থাকা সেই ব্যাগ তুলে তার ভেতর থেকে বান্ডেল করা কিছু একটা বের করে সেটি তার কোমরে গুঁজে ফেলছে। এর পর অজিত দ্রুত ওই রিকশা চালকের কাছে যান এবং পথে পড়ে থাকা ব্যাগ থেকে কি বের করে কোমরে গুঁজেছে সে কথা জানতে চান। কিন্তু রিকশা চালক কোনো কিছু তার কোমরে গুঁজে রাখার কথা অস্বীকার করেন। তখন কনস্টেবল অজিত মোফাজ্জল হোসেন নামের ওই রিকশা চালকের কোমরে হাত দিয়ে তার ভেতরে বান্ডিল করা টাকা দেখতে পান। পরে তিনি পথে পড়ে থাকা ওই ব্যাগ এবং টাকাসহ রিকশা চালক মোফাজ্জলকে নিয়ে নওয়াববাড়ি সড়কে সদর ট্রাফিক ফাঁড়িতে যান।
অজিত কুমার বলেন, 'ফাঁড়িতে এসে বিষয়টি ইন্সপেক্টর আনোয়ার হোসেন এবং রেজা খানকে জানাই। এরপর গুণে দেখা যায় ওই বান্ডিলে ৫০ হাজার টাকা রয়েছে। সঙ্গে থাকা সেই ব্যাগের ভেতরে মালেকা বেগম নামের এক নারীর জাতীয় পরিচয়পত্র দেখে আমাদের সবার ধারণা হয় তিনিই টাকাগুলোর মালিক। পরবর্তীতে ট্রাফিক ইন্সপেক্টর রেজা খান পুরো ঘটনাটি বগুড়ার পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভূঞাকে জানান। এরই মধ্যে খোয়া যাওয়া টাকার সন্ধানে মালেকা বেগম ট্রাফিক পুলিশ ফাঁড়িতে যান। মালেকা বেগম ওই টাকাগুলো নিজের দাবি করে জানান, তার এক ছেলে বিদেশে থাকে। সেই টাকাগুলো পাঠিয়েছে। রোববার দুপুরে ইসলামী ব্যাংক থেকে টাকাগুলো তুলে তারপর ব্যাগে ভরে তিনি বাড়ি ফিরে যাচ্ছিলেন। তবে কিছদূর যাওয়ার পর তিনি বুঝতে পারেন টাকাসহ ব্যাগটি তিনি হারিয়ে ফেলেছেন। পরে আবার পথে খুঁজতে শুরু করেন এবং ফতেহ্ আলী মোড়ে আসার পর লোকজন তাকেকে ফাঁড়িতে আসতে বলেন।'
ইন্সপেক্টর রেজা খান জানান, পড়ে থাকা ব্যাগের ভেতরর জাতীয় পরিচয়পত্রের সঙ্গে মালেকা বেগমের চেহারাসহ সব বর্ণনার মিল পাওয়ায় তাকে ও কনস্টেবল অজিত কুমারকে দুপুর ২টার দিকে পুলিশ সুপার কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে টাকাগুলো ফেরত পাওয়ার আনন্দে মালেকা বেগম পুলিশ সুপার আলী আশরাফের সামনেই কেঁদে ফেলেন এবং কনস্টেবল অজিত কুমারসহ পুলিশ সদস্যদের ধন্যবাদ জানান।
মালেকা বেগম বলেন, 'টাকাগুলো হারিয়ে আমি পাগলের মত হয়ে গিয়েছিলাম। পুলিশ দেখেছে বলেই আমি টাকাগুলো ফিরে পেয়েছি। অন্য কেউ পেলে টাকাগুলো আর পেতাম না।'
বগুড়া সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সনাতন চক্রবর্তী বলেন, 'কনস্টেবল অজিত কুমার মণ্ডল মহানুভবতার পরিচয় দিয়েছেন। তার কাছ থেকে শুধু পুলিশেরই নয় আমাদের সবারই শেখার আছে।'
- বিষয় :
- পুলিশ কনস্টেবল
- টাকা ফেরত
- বগুড়া
- অজিত কুমার মণ্ডল