ঢাকা বৃহস্পতিবার, ০৩ জুলাই ২০২৫

পাবনা ও কুষ্টিয়ায় পদ্মার পানি বিপদসীমার ওপরে

পাবনা ও কুষ্টিয়ায় পদ্মার পানি বিপদসীমার ওপরে

বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে পদ্মার পানি

পাবনা অফিস ও কুষ্টিয়া প্রতিনিধি

প্রকাশ: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৯ | ২৩:৫৩ | আপডেট: ০১ অক্টোবর ২০১৯ | ০৪:০৫

পাবনা ও কুষ্টিয়ায় পদ্মা নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে দুই জেলার নিম্নাঞ্চলের বহু মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন, তলিয়ে গেছে জমির ফসল। 

পাবনা পানি উন্নয়ন বোর্ড হাইড্রোলজি বিভাগের (উত্তরাঞ্চলীয়) নির্বাহী প্রকৌশলী কেএম জহিরুল হক জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় পদ্মার পাকশী হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে পানি বেড়েছে ১৪ সেন্টিমিটার। আর মঙ্গলবার সকাল ১০টায় বিপদসীমা ১৪ দশমিক ২৫ সেন্টিমিটার অতিক্রম করেছে। এর আগে সকাল ৯টার পরিমাপ অনুযায়ী, বিপদসীমার এক সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল পানি।

পদ্মার পানি বিপদসীমা অতিক্রম করায় ঈশ্বরদী উপজেলার সাঁড়া, পাকশী, সাহাপুর ও লক্ষীকুন্ডা ইউনিয়নের প্রায় ১ হাজার হেক্টর জমির ফসল তলিয়ে গেছে। এতে আবাদ নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন এসব এলাকার কৃষকরা। 

কৃষকরা জানান, আর দু-একদিন এভাবে পানি বাড়তে থাকলে পদ্মার চরে আবাদ করা বাকি জমির ফসলও তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

পাবনা জেলা প্রশাসক কবীর মাহমুদ সমকালকে বলেন, পদ্মার পানি বিপদসীমা অতিক্রম করার আগে থেকেই পাবনা জেলা প্রশাসন সতর্ক দৃষ্টি রাখছে। ইতোমধ্যে স্থানীয় প্রশাসনের মাধ্যমে নদীরপাড় এলাকার এবং ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের বিষয়ে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। যখন যেভাবে প্রয়োজন প্রশাসন তখন সেখানে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

এদিকে পানি বৃদ্ধির ফলে কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার রামকৃষ্ণপুর, চিলমারির পর ফিলিপনগর ও মরিচা ইউনিয়নের কিছু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। পাশাপাশি কুমারখালী উপজেলার শিলাইদহ ইউনিয়নের কোমরকান্দি গ্রামে ভাঙন দেখা দিয়েছে।

পদ্মায় পানি বাড়ায় গড়াই নদীতে পানি বাড়ছে প্রতিনিয়ত। জিকে ঘাট ছাড়াও বড় বাজার এলাকার বেড়িবাঁধের পাশে বেশ কিছূ ঘরবাড়িতে পানি ঢূকে পড়েছে। অনেকে বাড়িঘর ছেড়ে উঁচু স্থানে আশ্রয় নিয়েছেন। 

পানি বাড়তে থাকলে কুষ্টিয়া রক্ষা বাঁধসহ অন্যান্য স্থাপনা ঝুঁকিতে পড়তে পারে বলে পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে। ভাঙন ঠেকাতে দ্রুত জিও ব্যাগ ফেলার প্রস্তুতি নিচ্ছে তারা।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী পীযুষ কৃষ্ণ কুন্ডু বলেন, পানি এই মুহূর্তে বিপদসীমার কয়েক সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে করে দৌলতপুর উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নের পর ভেড়ামারা উপজেলার মোসলেমপুরে পানি ঢুকছে। এছ্ড়া কুষ্টিয়া শহর, কুমারখালী ও খোকসার কিছু এলাকায় পানি প্রবেশ করে ক্ষয়ক্ষতি বাড়তে পারে।

জেলা প্রশাসক মো. আসলাম হোসেন বলেন, নদীর পানির উচ্চতা বাড়ায় নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করে প্রতিনিয়ত রিপোর্ট পাঠানো হচ্ছে। সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে প্রতি ঘণ্টায় বন্যা পরিস্থিতি মনিটরিং করা হচ্ছে। আমাদের একাধিক টিম ঘটনাস্থলে আছে। পর্যাপ্ত ত্রাণ প্রস্তুত রয়েছে। আরও ত্রাণ প্রয়োজন হলে আসবে।

উল্লেখ্য, দীর্ঘ ১৬ বছর পর বিপদসীমা অতিক্রম করলো পদ্মার পানি। সর্বশেষ ২০০৩ সালে এই পয়েন্টে পানি বিপদসীমা অতিক্রম করেছিল।  

আরও পড়ুন

×