গাছের বয়স ৪৬ বছর, দাম লাখ টাকা

ছবি: সমকাল
খুলনা ব্যুরো
প্রকাশ: ০১ আগস্ট ২০২৩ | ১৩:৪৩ | আপডেট: ০১ আগস্ট ২০২৩ | ১৩:৪৩
খুলনা সার্কিট হাউস মাঠের বৃক্ষমেলায় ঢুকলে এক হাত উচ্চতার পাকুড় বনসাইয়ে চোখ আটকাবেই। ক্রেতা-দর্শনার্থী এসে ঘুরেফিরে গাছটি দেখছেন। ৪৬ বছর ধরে এই গাছের যত্ন নিচ্ছেন জেলা শহরের নিউমার্কেট নার্সারির মালিক মো. জাহাঙ্গীর। এবারের মেলায় এনে তিনি গাছটির দাম হাঁকছেন ১ লাখ টাকা। ক্রেতাদের অনেকে এসে দেখে দাম শুনে ফিরে যাচ্ছেন। কেউ কেউ দর কষাকষিও করছেন।
নার্সারির কর্মচারী আদনান হাবিব রনি জানান, সোমবার এক ক্রেতা গাছটির ৪০ হাজার টাকা দাম বলেছিলেন। কিন্তু তারা বিক্রি করেননি। তাদের নার্সারিতে আরও বিভিন্ন প্রজাতির গাছের চারা রয়েছে। এগুলোর দাম ৫০ থেকে ১ লাখ টাকা পর্যন্ত।
খুলনা জেলা প্রশাসন ও বন বিভাগের যৌথ উদ্যোগে গত ২৭ জুলাই শুরু হয়েছে ১৫ দিনব্যাপী বৃক্ষমেলা। মেলার ৩১টি স্টলে রয়েছে বিভিন্ন ফুল, ফল, বনজ, ঔষধি ও শোভা বর্ধনকারী কয়েক হাজার প্রজাতির দেশি-বিদেশি গাছের চারা। রয়েছে ছাদ কৃষির স্টল, বীজ, জৈব সার, টব, কীটনাশক, কৃষি উপকরণ ও মাটি পরীক্ষা করার ব্যবস্থা। সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত সবার জন্য উন্মুক্ত মেলা প্রাঙ্গণ প্রতিদিন বিকেলে ক্রেতা-দর্শনার্থীর ভিড়ে সরগরম হয়ে উঠছে। ফেরার সময় কেউ কেউ চারা কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।
মেলার মৌসুমি নার্সারিতে আনা হয়েছে দুর্লভ প্রজাতির কিছু গাছ। ভারতীয় ‘বিলম্ব’ ফল গাছের চারা বিক্রি হচ্ছে ২৫০ টাকায়। এ ছাড়া ভারতীয় পিচ ফলের চারা ৪০০ টাকা, চায়না পেয়ারার চারা ১৫০ টাকা, থাই বাতাবি লেবু ৩০০ টাকা, লবঙ্গ ৭০০ টাকা ও গোলমরিচের চারা ৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। নার্সারির মালিক মো. ফোরকান জানান মেলায় ধীরে ধীরে ভিড় বাড়ছে। সেই সঙ্গে বাড়ছে বিক্রি।
মেলায় কিছু ব্যতিক্রমী গাছের চারা নিয়ে এসেছে রানা নার্সারি। নৌকার আদলে তৈরি করা হয়েছে স্টার জুঁই গাছের চারা। এর বয়স ৫ বছর, দাম ১৫ হাজার টাকা। নার্সারি মালিক মো. রনি বলেন, ‘মেলায় নৌকার আদলে দুটি গাছের চারা এনেছি। আগে ময়ূর, হাতি, বাঘের আকৃতিতে গাছের চারা বানাতাম। কিন্তু পরিশ্রম অনুযায়ী দাম না পাওয়ায় এবার শুধু নৌকার আদলের চারা এনেছি।’
মেলায় লাকি ব্যাম্বু দিয়ে বিভিন্ন নকশা তৈরি করেছেন বনকন্যা নার্সারির সোহাগ উদ্দিন শেখ, যার দাম ৪০ টাকা থেকে ২ হাজার টাকা। রয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির অর্কিড। বিভিন্ন নার্সারিতে মিলছে সিডলেস আতা, থাই কদবেল, জাপানি চেরি ফুল, চায়না ও থাই টগর ফুল, লজ্জাবতী, চেরি ফল, বিলুপ্ত প্রজাতির অসংখ্য ঔষধি গাছের চারাও রয়েছে।
নগরীর টুটপাড়া এলাকা থেকে সস্ত্রীক মেলায় আসা কবীর আহমেদ জানান, ছাদ বাগানের জন্য তারা ১০টি চারা কিনেছেন, আরও কিনবেন।
মেলার আয়োজকরা বলছেন, মেলার প্রথম পাঁচ দিনে ৬ হাজার ১৭০টি গাছের চারা বিক্রি হয়েছে। ধীরে ধীরে বিক্রি আরও বাড়বে।
- বিষয় :
- বৃক্ষমেলা
- খুলনায় বৃক্ষমেলা
- পাকুড়
- বনসাই