ঢাকা বৃহস্পতিবার, ০৩ জুলাই ২০২৫

খেলায় আগ্রহ হারাচ্ছে বটিয়াঘাটার মেয়েরা

খেলায় আগ্রহ হারাচ্ছে  বটিয়াঘাটার মেয়েরা

ফাইল ছবি

খুলনা ব্যুরো

প্রকাশ: ২৮ আগস্ট ২০২৩ | ১৮:০০

খুলনার বটিয়াঘাটায় কিশোরী ফুটবলারদের ওপর হামলার পর খেলায় আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে মেয়েরা। সামাজিক সমালোচনা ও নিরাপত্তার কথা ভেবে কন্যাসন্তানদের বাইরে খেলতে দেওয়া থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন অভিভাবকরা। এতে উপজেলা পর্যায়েও যারা অনুশীলন করত তারাও অনিয়মিত হয়ে পড়েছে। কেউ কেউ খেলাই ছেড়ে দিয়েছে। অনেকের খেলার ইচ্ছা থাকলেও নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগের কারণে মাঠে যাওয়ার সাহস করে না।

তেঁতুলতলা সুপার কুইন ফুটবল একাডেমির সাধারণ সম্পাদক দেবাশীষ কুমার মণ্ডল বলেন, অনুশীলনে মেয়েদের সংখ্যা দিন দিন কমে যাচ্ছে। আগে জায়গা দেওয়া কঠিন হলেও এখন সবাই আসে না। কারণ একবার হামলা হওয়ায় অভিভাবকরা মেয়েদের নিয়ে ঝামেলা এড়িয়ে চলছেন। উভয়পক্ষের মধ্যে কিছুটা অনাগ্রহ তৈরি হয়েছে। আগে প্রতিদিন ১৫ থেকে ২০ জন অনুশীলন করলেও এখন সেখানে সাত থেকে ১১ জন আসে। বর্তমানে নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ না থাকলেও বিষয়টি তো সাময়িক নয়, এটা দীর্ঘমেয়াদি সমস্যা। নতুনরা সাহস করে খেলায় আসবে না; পরবর্তী প্রজন্ম তৈরি হবে না।

ভুক্তভোগী সাদিয়া নাসরিন বলেন, হামলা ও সামাজিক সমালোচনার ভয়ে মেয়েদের বেশ কয়েকজন এখন ফুটবল অনুশীলনে আসে না। এখন মাত্র ৭ থেকে ৮ জন নিয়মিত আসে। এভাবে চলতে থাকলে অন্যরাও সাহস হারিয়ে ফেলতে পারে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক অভিভাবক বলেন, হামলার ঘটনার পর এখন গ্রামের কিছু মানুষ হাফপ্যান্ট ও জার্সি পরে কিশোরীদের ফুটবল খেলা নিয়ে সমালোচনা করে। সে কারণে সন্তানদের আপাতত অনুশীলন করতে নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে।

এর আগে গত ২৭ জুলাই উপজেলার তেঁতুলতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে অনুশীলন করার সময় সাদিয়ার হাফপ্যান্ট ও জার্সি পরা ছবি তুলে তার মাকে নিয়ে দেখিয়ে কটূক্তি করে প্রতিবেশী নূপুর খাতুন। ২৯ জুলাই নূপুরের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাদিয়াকে গালাগাল করা হয়। পরে ফুটবলাররা বিষয়টি জানাতে নূপুরদের বাড়িতে গেলে তার পরিবারের লোকজন সাদিয়া, মঙ্গলী বাগচী, হাজেরা খাতুন ও জুঁই মণ্ডলকে মারধর করে। এ ঘটনায় ৩০ জুলাই সাদিয়া বাদী হয়ে চারজনের নামে বটিয়াঘাটা থানায় মামলা করে। এরপর মামলা তুলে না নিলে এসিড মেরে মুখ ঝলসে দেওয়ার হুমকি দেয় এক আসামি। এর পরিপ্রেক্ষিতে ৩১ জুলাই থানায় জিডি করে সাদিয়া।

বটিয়াঘাটা থানার ওসি শওকত কবির জানান, কিশোরী ফুটবলারদের ওপর হামলা-মামলার আসামি নূপুর খাতুন, তার বাবা নূর আলম, মা রঞ্জি বেগম ও ভাই সালাউদ্দিন খাঁ বর্তমানে কারাগারে। মামলার তদন্ত প্রায় শেষ পর্যায়ে। আগামী মাসে চার্জশিট দেওয়ার প্রস্তুতি চলছে। এ ছাড়া ফুটবলারদের অনুশীলন কিংবা খেলাধুলার ক্ষেত্রে নিরাপত্তাজনিত কোনো সমস্যা নেই।

আরও পড়ুন

×