ঢাকা শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫

আমার পোলারে দিয়া দাও, আহাজারি মায়ের

আমার পোলারে দিয়া দাও, আহাজারি মায়ের

বখতিয়ার হোসেন সোহেলের অফিস আইডি কার্ড

নিজস্ব প্রতিবেদক, ময়মনসিংহ

প্রকাশ: ১১ অক্টোবর ২০২৩ | ০৫:৩৯ | আপডেট: ১১ অক্টোবর ২০২৩ | ০৬:৩২

পরিবারের বড় সন্তান গার্মেন্ট কর্মী বখতিয়ার হোসেন সোহেল (৩৫)। সকালের নাস্তা খেয়ে টিফিন ক্যারিয়ারে দুপুরের খাবার নিয়ে কর্মস্থলের উদ্দেশে রওনা দেন। বাড়ি থেকে বের হওয়ার কিছুক্ষণ পরই খবর আসে তিনি দুর্ঘটনার শিকার হয়েছেন। পরিবারের লোকজন ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গেলে ‌‌‘বুকে খুব কষ্ট হচ্ছে’ বারবার এই কথা বলছিলেন সোহেল।  

মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সোহেলের মৃত্যু হলে স্বজনরা তার মরদেহ নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। মরদেহবাহী ট্রলি নিয়ে পুলিশ ও স্বজনদের মধ্যে চলে বেশ কিছুক্ষণ টানাটানি। 

সোহেলের মা মাজেদা বেগম বারবার আহাজারি করে বলছিলেন, ‘আমার বাবার বুকটাত কষ্ট হইতাছিন, আমার পোলারে দিয়া দাও তোমরা।’ 

হাসপাতালের সামনে বখতিয়ার হোসেন সোহেলের মা’র আহাজারি 

নিহতের স্ত্রী আফরোজা বেগম মরদেহ নিয়ে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে জরুরি বিভাগের সামনে আহাজারি করতে থাকেন। তাঁর ৮ বছর বয়সী একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। আফরোজা বেগম বলেন, ‘আমারে রাইখ্যা তুমি কই গেলা। আমি অহন কারে নিয়ে থাকব।’ 

ত্রিশালের রাগামারা গ্রামের আহেদ আলীর ছেলে সোহেল ভালুকার জমিরদিয়া এলাকায় মাহদিন সোয়েটার্সে ২০১৫ সাল থেকে কাজ করছিলেন। দুপুরের খাবার টিফিন ক্যারিয়ারে নিয়ে প্রতিদিন সকালে বাড়ি থেকে বের হয়ে যেতেন কর্মস্থলে। 

ভাই সুজন মিয়া বলেন, ‘আমরা দুই ভাই একই কারখানায় কাজ করি। আমি অন্য বাসে অফিসে যাচ্ছিলাম। আমার ভাই যে বাসে যাচ্ছিল তাতে বিভিন্ন গার্মেন্টের যাত্রী ছিল। বাড়ি থেকে বের হয়ে কিছু দূর যাওয়ার পর দুর্ঘটনায় আমার ভাইয়ের মৃত্যু হয়েছে।’

ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের ত্রিশালের চেলেরঘাট এলাকায় বুধবার সকাল ৮টায় গার্মেন্টস কর্মীদের বহন করা বাসটির চাকা ফেটে যায়। এ সময় গাড়ি থামিয়ে চাকা বদলানোর প্রস্তুতি চলছিল। কয়েকজন বাসের সামনে দাঁড়িয়ে তা দেখছিলেন। কেউ কেউ বাসের ভেতরেই বসে ছিলেন। তখন পেছন থেকে আরেকটি বাস ধাক্কা দিলে দুর্ঘটনাটি ঘটে। এতে সোহেলসহ পাঁচজনের মৃত্যু হয়।

ত্রিশাল থানার ওসি মো. মাইন উদ্দিন বলেন, দুর্ঘটনাকবলিত বাস দুটি জব্দ করে থানায় নেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন

×