যানজট, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, জলজট বড় চ্যালেঞ্জ
ময়মনসিংহের মেয়র টিটুর সাক্ষাৎকার

মো. ইকরামুল হক টিটু
নিজস্ব প্রতিবেদক, ময়মনসিংহ
প্রকাশ: ১১ মার্চ ২০২৪ | ০০:২৫ | আপডেট: ১১ মার্চ ২০২৪ | ০৭:০২
ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে এক লাখের বেশি ভোটের ব্যবধানে জয়ী হয়ে টানা দ্বিতীয়বার মেয়র হয়েছেন মো. ইকরামুল হক টিটু। আগামী দিনে নগরের উন্নয়ন পরিকল্পনা ও চ্যালেঞ্জ নিয়ে কথা বলেছেন সমকালের সঙ্গে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সমকালের নিজস্ব প্রতিবেদক মোস্তাফিজুর রহমান
সমকাল: দু’বার পৌর মেয়র থাকার পর টানা দ্বিতীয়বারের মতো সিটি মেয়র হয়েছেন, নগরবাসীর আস্থার প্রতীক হলেন কীভাবে?
ইকরামুল হক: নগরবাসীর সঙ্গে আমার সম্পর্কটি আত্মার। বিগত সময়ে আন্তরিকতাপূর্ণ পরিবেশ বজায় রেখে কাজ করতে চেষ্টা করেছি এবং নাগরিকরাও স্নেহ-ভালোবাসা দিয়েছেন। জনতার কাতারে থেকে কাজ করে গেছি। দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে কখনও মানুষের কাছ থেকে দূরে সরিনি। নগরবাসীও ভালোবাসার প্রতিদানস্বরূপ বিপুল ভোটে বিজয়ী করেছে।
সমকাল: এ বিজয় কাকে উৎসর্গ করবেন।
ইকরামুল হক: নগরবাসীর অকৃত্রিম ভালোবাসার প্রতিদানস্বরূপ এ বিজয় অর্জিত হয়েছে। তাই এ বিজয় তাদেরই উৎসর্গ করেছি।
সমকাল: কেমন নগরী গড়তে চান।
ইকরামুল হক: নাগরিক সমস্যাগুলো নিরসন ও সেবার মান বাড়িয়ে স্মার্ট নগরী গড়ার স্বপ্ন নিয়ে কাজ করব।
সমকাল: বেকার যুবকদের কর্মসংস্থানের কোনো সুযোগ নেই এই নগরে, তাদের জন্য কী করবেন?
ইকরামুল হক: বেকারদের কর্মসংস্থানের জন্য প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ কাজ করতে চাই। নতুন এলাকাগুলোতে রাস্তা করার পর সেখানে অনেককে দেখেছি, শিল্পপ্রতিষ্ঠান করার জন্য আগ্রহী হচ্ছেন। এটি হলে পরোক্ষভাবে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। এ ছাড়া সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে প্রশিক্ষণ কেন্দ্র করে বেকাররা যেন আত্মনির্ভরশীল হতে পারে, সে চেষ্টা করব।
সমকাল: যানজট নিরসনে নতুন কোন পরিকল্পনা আছে?
ইকরামুল হক: যানজট সমস্যাকে প্রধান চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছি। নগরীর ভেতর থেকে তিনটি বাস টার্মিনাল সরিয়ে নেওয়া হবে, ভারী যানবাহন নির্ধারিত সময়ের বাইরে শহরে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। বিষয়টি কঠোরভাবে দেখা হলে যানজট কমবে। এ ছাড়া ট্রাফিক পুলিশের সদস্য বৃদ্ধি, তাদের প্রশিক্ষিত করে তোলা, আধুনিক ট্রাফিক সিগন্যাল ব্যবস্থা গড়ে যানজট নিয়ন্ত্রণ করা হবে। নগরীর ভেতরে বেশ কিছু রেলক্রসিং থাকায় যানজট লেগে থাকে। সেগুলোতে ওভারপাস ও আন্ডারপাস করা হবে।
সমকাল: নগরীর সড়ক প্রশস্ত করার বিষয়ে কী পদক্ষেপ নেবেন?
ইকরামুল হক: নগরীর অভ্যন্তরে ৪০ কিলোমিটার রাস্তা সড়ক ও জনপথ বিভাগের অধীন। সেই রাস্তাগুলো বড় করতে সমন্বিত উদ্যোগ নিতে চাই। আগের মেয়াদকালে নগরীর অনেক রাস্তা প্রশস্ত করা হয়েছে। আগামীতেও তা অব্যাহত থাকবে।
সমকাল: আপনার ইশতেহার বাস্তবায়নে বড় চ্যালেঞ্জ কোনটি।
ইকরামুল হক: ইশতেহারের ২৩টি পয়েন্টের মধ্যে যানজট, জলাবদ্ধতা নিরসন করা, টেকসই বর্জ্য ব্যবস্থাপনাকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছি। সমন্বিত উদ্যোগ নিয়ে অন্য বিষয়গুলোও বাস্তবায়ন করতে চাই।
সমকাল: সিটি নির্বাচন ও সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে রাজনৈতিক বিভেদ ও স্থানীয় সংসদ সদস্যের সঙ্গে দূরত্ব কমাবেন কীভাবে?
ইকরামুল হক: নির্বাচন একটি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া। জনগণই সব ক্ষমতার উৎস। নির্বাচনে একাধিক প্রার্থী থাকতেই পারেন। নির্বাচন যেহেতু শেষ, তাই এ বিষয়টি এখানেই শেষ হওয়া প্রয়োজন। দুটি নির্বাচন খুব কাছাকাছি সময়ে হওয়ার অনেকে অনেকভাবে বিশ্লেষণ করেছেন। তবে আমরা সবাই একই প্ল্যাটফর্মে কাজ করি। অনেকে নিজেদের পছন্দের লোকের পক্ষে কাজ করেছেন, এখানে দোষের কিছু নেই। আগামী দিনে সবাইকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে চাই। আশা করি, তারা আমাকে সহযোগিতা করবেন। সকলে মিলে জনগণের জন্য কাজ করব।
সমকাল: আপনার বিজয়ে এমপি শুভেচ্ছা জানিয়ে ফেসবুক পোস্ট দিয়েছেন।
ইকরামুল হক: নিঃসন্দেহে বিষয়টি ইতিবাচক। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নাগরিকরা তাদের প্রতিনিধি বেছে নেন। এটি আগামীর চলার পথকে আরও সহজ করবে। ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে সহযোগিতা কামনা করছি। নির্দ্ধিধায় বলতে পারি, আমি আগের মতোই যে কোনো অবস্থান থেকে সবাইকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করব।