ঢাকা রবিবার, ০৬ জুলাই ২০২৫

ঝুঁকি নিয়ে ঝুপড়ি ঘরে পাঠদান

দুই যুগ আগে পরিত্যক্ত ঘোষণা

ঝুঁকি নিয়ে ঝুপড়ি  ঘরে পাঠদান

ডুমুরিয়ার গজালিয়া অগ্নিবীণা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবনটি দুই বছর আগে পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। সেখানেই ঝুঁকি নিয়ে চলছে পাঠদান সমকাল

ডুমুরিয়া (খুলনা) প্রতিনিধি 

প্রকাশ: ২১ মার্চ ২০২৪ | ২২:০১

মাথার ওপর টিনের চালা। চারপাশে বাঁশ দিয়ে ঘিরে রাখার চেষ্টা হয়েছে। ঝড় শুরু হলে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা আশপাশে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নেয়। এ ঘরেই ঝুঁকি নিয়ে চলছে শিক্ষার্থীর পাঠদান। এই চিত্র ডুমুরিয়ার গজালিয়া অগ্নিবীণা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের। 

উপজেলা সদর থেকে ৩০ কিলোমিটার দক্ষিণে মাগুরখালী ইউনিয়ন পরিষদ। পরিষদ থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরে গজালিয়া অগ্নিবীণা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। দুই যুগ আগে বিদ্যালয়ের ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করে ডুমুরিয়া এলজিইডি। এরপর স্কুলের পাশে একটি ঝুপড়ি ঘর তুলে শিক্ষার্থীদের পাঠদান চলছে। সেখানেও রয়েছে নানা সমস্যা। টিনের চালা ছিদ্র হয়ে গেছে। বর্ষায় পানিতে একাকার হয়ে যায় শ্রেণিকক্ষ। সে সময় বন্ধ রাখতে হয় পাঠদান। 
তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী অর্থি মণ্ডল ও বিলাস বৈরাগী জানায়, বৃষ্টি হলেই টিনের চাল দিয়ে পানি পড়ে। শ্রেণিকক্ষ পানিতে একাকার হয়ে যায়। বই-খাতা ভিজে যায়। তাই বর্ষাকালে তারা স্কুলে আসে না। গরমের দিনও প্রচণ্ড তাপে হিমশিম খেতে হয়। 

অভিভাবক দীপংকর মণ্ডল ও কাজল বৈরাগী বলেন, মূল ভবনের জানালা-দরজা নেই। দেয়ালের পলেস্তারা খসে পড়েছে। ভবনটি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। পাশে ঝুপড়ি ঘরে একাধিক শ্রেণির শিক্ষার্থীর পাঠদান চলছে। প্রতিবছর অনেক শিক্ষার্থী এ বিদ্যালয় ছেড়ে বিভিন্ন স্কুলে চলে যাচ্ছে।     
১৯৮৯ সালে বিদ্যালয়টি স্থাপিত হয়। ১৯৯৫ সালে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের অর্থায়নে চার কক্ষের সেমিপাকা ভবন নির্মাণ হয়। ২০১৩ সালে বিদ্যালয়টি জাতীয়করণ হয়। কিন্তু অবকাঠামোগত কোনো উন্নয়ন হয়নি। শিক্ষার মান উন্নয়ন ও পরিবেশ না থাকায় বাধ্য হয়ে শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয় ছাড়ছে। শিক্ষকরা বিদ্যালয় আসেন নেহাত চাকরি বাঁচাতে। বিদ্যালয়টিতে চারজন শিক্ষক আর প্রাক-প্রাথমিকসহ ৫৯ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। 

প্রধান শিক্ষক দেবপ্রসাদ রায় বলেন, একই ঘরে তিন-চারটি শ্রেণির শিক্ষার্থীকে পাশাপাশি বসিয়ে পাঠদান করতে হয়। এ সময় শিক্ষকদের কথা শোনা শিক্ষার্থীদের জন্য মুশকিল হয়ে পড়ে। স্বাভাবিকভাবেই তারা অমনোযোগী থাকে। অনেক দিন থেকেই শুনছি নতুন ভবন হবে। কিন্তু কবে হবে জানি না। 
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান বলেন, স্কুল ভবনের বিষয়ে গত ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে খুলনা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের মাধ্যমে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা অধিদপ্তরে চিঠি দেওয়া হয়েছে। বরাদ্দ পেলেই কাজ শুরু হবে। 
 

আরও পড়ুন

×