ঢাকা শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫

খাদ্যের খোঁজে লোকালয়ে হাতি, বাড়ছে প্রাণহানি

খাদ্যের খোঁজে লোকালয়ে হাতি, বাড়ছে প্রাণহানি

চট্টগ্রামের চার উপজেলায় বেড়েছে বন্যহাতির উপদ্রব

চন্দনাইশ ও আনোয়ারা (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১৫ এপ্রিল ২০২৪ | ২২:১৪

নিজ ক্ষেতে কাজ করছিলেন কৃষক জাগির হোসেন। এ সময় বুনো হাতির হামলায় প্রাণ গেছে তাঁর। গতকাল সোমবার সকালে চট্টগ্রামের চন্দনাইশ উপজেলার বরমা ইউনিয়নে ঘটে ঘটনাটি। কাছাকাছি সময়ে একই ইউনিয়নের শেবন্দী এলাকায় আহত হয়েছেন সালাহ উদ্দীন নামের আরেক ব্যক্তি। সাম্প্রতিক সময়ে জেলার চন্দনাইশ, আনোয়ারা, কর্ণফুলী ও বাঁশখালীতে বন্যহাতির উপদ্রব বেড়েছে বলে এলাকাবাসী জানিয়েছে। 

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, চারটি উপজেলার পাহাড়সংলগ্ন লোকালয়ে হাতির আক্রমণে হতাহতের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি এলাকাবাসীর। আর বন বিভাগের কর্মকর্তাদের ভাষ্য, খাদ্যের খোঁজে লোকালয়ে চলে আসছে হাতি। এতে মানুষের সঙ্গে তাদের সংঘাত বাড়ছে।
বরমা ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাইনজুড়ি এলাকায় হাতির পায়ে পিষ্ট হয়ে প্রাণ যায় একই এলাকার জাগির হোসেনের (৫৫)। তিনি ওই এলাকার মৃত আবদুর রাজ্জাকের ছেলে। আহত সালাহ উদ্দীন (৪০) শেবন্দী এলাকার মো. নজরুল ইসলামের ছেলে। 

জানা যায়, কৃষক জাগির হোসেন সোমবার ভোরে নিজের ক্ষেতে কাজ করার সময় হঠাৎ দুটি বন্য হাতি তাঁর ওপর আক্রমণ করে। এতে ঘটনাস্থলেই মারা যান তিনি। অপর ঘটনায় আহত হন সালাহ উদ্দীন। তাঁকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে চমেক হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে আনোয়ারা উপজেলার হাইলধর ইউনিয়ন ও বটতলী ইউনিয়নের লোকালয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে দুটি বন্য হাতি। এতে এলাকাবাসীর মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। বন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, আট বছর ধরে আনোয়ারার দেয়াং পাহাড়ে তিনটি বন্য হাতি বসবাস করছে। এ হাতিগুলো মাঝেমধ্যে বাঁশখালীর বিভিন্ন পাহাড়েও যাতায়াত করে। সোমবার চন্দনাইশ পাহাড় থেকে নতুন করে আরও দুটি হাতি এসে আনোয়ারার লোকালয়ে ঢুকে পড়ে। বটতলীর বাসিন্দা এইচ এম জাহেদ বলেন, দুপুর ১২টার দিকে স্থানীয়রা নানা কৌশলে বন্য হাতি দুটিকে পাহাড়ের দিকে ফিরিয়ে দেন। ফসলের ক্ষতি করলেও মানুষ নিরাপদে ছিল।

বটতলী ইউপি চেয়ারম্যান এম এ মন্নান চৌধুরী বলেন, দেয়াং পাহাড়ে অবস্থান করা তিনটি হাতির অত্যাচারে আনোয়ারা ও কর্ণফুলীর মানুষ অতিষ্ঠ। ওই তিন হাতির পায়ে পিষ্ট হয়ে এখন পর্যন্ত অন্তত ১০ জন লোক মারা গেছে। এ ছাড়া শতাধিক ঘরবাড়িসহ দোকানপাট ভেঙে ফেলেছে। এ বিষয়ে জরুরি পদক্ষেপ না নিলে জানমালের আরও ক্ষতি হতে পারে।

বন বিভাগের বাঁশখালী জলদী অভয়ারণ্যের রেঞ্জ কর্মকর্তা আনিসুজ্জামান শেখ বলেন, দেয়াং পাহাড় থেকে হাতিগুলো তাড়ানোর কোনো সুযোগ নেই। পাহাড়ে গাছ নিধন ও পাহাড় কাটার কারণে খাবারের সন্ধানে হাতিগুলো লোকালয়ে চলে এসেছে। বন বিভাগের লোকজন সেখানে অবস্থান করছে। লোকজনকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। সন্ধ্যার পর মশাল জ্বালালে হাতিগুলো গভীর বনে চলে যাবে।

আরও পড়ুন

×