ঢাকা শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫

কিস্তি বাকি পড়ায় কৃষককে ধরে নিয়ে গেল এনজিও কর্মীরা

সমালোচনার মুখে ১০ ঘণ্টা পর মুক্তি

কিস্তি বাকি পড়ায় কৃষককে ধরে নিয়ে গেল এনজিও কর্মীরা

ছবি: সংগৃহীত

সীতাকুণ্ড (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১১ মে ২০২৪ | ২১:৩৭

কিস্তির টাকা বাকি পড়ায় কৃষককে জমি থেকে ধরে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে একটি এনজিওর বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগীকে নিয়ে আটকে রাখা হয় প্রতিষ্ঠানটির স্থানীয় কার্যালয়ে। মুহূর্তেই আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে খবরটি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও চাউর হয় নানা তথ্য। ঝড় ওঠে তীব্র সমালোচনার। এক পর্যায়ে ১০ ঘণ্টা পর ছেড়ে দেওয়া হয় ওই কৃষককে। শুক্রবার চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার ভাটিয়ারী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয়রা জানান, পরিবারে একটু সচ্ছলতা আনতে ক্ষুদ্র ঋণদাতা সংস্থা ঠেঙ্গামারা মহিলা সবুজ সংঘ (টিএমএসএস) বাংলাদেশ থেকে ৯০ হাজার টাকা ঋণ নেন নিজাম উদ্দিন। এর মধ্যে ৮৫ হাজার টাকায় তিনি একটি গরু কেনেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত তিন মাসের মাথায় অসুস্থ হয়ে মারা যায় পশুটি। এতে প্রায় সর্বস্বান্ত হয়ে পড়েন এই কৃষক। দিনমজুরি করে কিস্তি চালিয়ে যান। ১১টি কিস্তি ঠিকঠাক পরিশোধও করেন। কাজের অভাবে মাঝেমধ্যে বসে থাকতে হয় তাঁকে। এতে ছয়টি কিস্তি বকেয়া পড়ে। বিষয়টি নিয়ে তিনি ঋণদাতা সংস্থার স্থানীয় কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনাও করেছেন, যাতে তাঁকে চাপ না দিয়ে ধীরে ধীরে টাকা পরিশোধের সুযোগ দেওয়া হয়। কিন্তু তাঁর সেসব প্রতিশ্রুতিতে আস্থা রাখতে পারেনি টিএমএসএস কর্মকর্তারা। শুক্রবার মাঠে কাজ করতে গেলে সেখান থেকেই নিজামকে ধরে নিয়ে যায় এনজিওটির স্থানীয় কর্মীরা।

কৃষক নিজাম বলেন, ‘কাজকাম না থাকায় পরিবার নিয়ে খুব কষ্টে আছি। তার মধ্যে এনজিওর কিস্তির টাকা দেওয়া অসাধ্য হয়ে পড়ে। আমি আস্তে আস্তে টাকা পরিশোধ করে দেব বলার পরও চাপ দিতে থাকে। বিষয়টি তাদের বুঝাইতে পারতেছি না। এক পর্যায়ে শুক্রবার সকাল ১১টায় জোর করে ধরে নিয়ে যায় আমাকে। ভাটিয়ারীর বানুর বাজারে টিএমএসএস কার্যালয়ে আটকে রেখে টাকা পরিশোধের জন্য চাপ দেওয়া হয়। টাকা দিতে না পারায় পরিবারের সদস্যদেরও অপদস্থ করা হয়। রাত ৯টার দিকে ছেড়ে দেওয়া হয়।’

টিএমএসএসের স্থানীয় কার্যালয়ের কর্মকর্তা রবিউল আসলাম বলেন, ৯০ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে দিনমজুর নিজাম ৪৬টি কিস্তির মধ্যে ১১টি পরিশোধ করেন। তবে ছয়টি কিস্তি বাকি পড়ে। সেই টাকার জন্য শুক্রবার তাঁকে অফিসে ডেকে আনা হয়েছিল। আটক করা হয়নি। রাতে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কে এম রফিকুল ইসলাম বলেন, কোনো গ্রাহককে ঋণ আদায়ের জন্য জোর করে ধরে নেওয়ার সুযোগ নেই। যে এনজিও এ কাজ করেছে, অভিযোগ পেলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 


 

আরও পড়ুন

×