তুলশীগঙ্গার তীরে ঘুড়ির মেলা

সন্যাসতলীতে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা সন্যাসীকে পূজা দিয়ে দিনটি উৎযাপন শুরু করেন। ছবি: সমকাল
জয়পুরহাট প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৪ জুন ২০২৪ | ১৯:২২
জয়পুরহাটের ক্ষেতলালে তুলশীগঙ্গা নদীর তীরের সন্যাসতলী মন্দিরে শুরু হয়েছে দুই দিনব্যাপী ঘুড়ির মেলা। মেলার সঠিক ইতিহাস কেউ বলতে না পারলেও জনশ্রুতি রয়েছে সন্যাসী পূজাকে ঘিরে ২০০ বছরের বেশি সময় আগে এ মেলাটি শুরু হয়। সেই থেকে পঞ্জিকা অনুসারে বাংলা বছরের জৈষ্ঠ্য মাসের শেষ শুক্রবার বিকেলে বসে গ্রামীণ এ মেলা। মেলায় আশপাশের গ্রাম ছাড়াও দূর-দূরান্ত থেকে শত শত মানুষের আগমন ঘটে।
সন্যাসতলীতে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা সন্যাসীকে পূজা দিয়ে দিনটি উৎযাপন শুরু করেন। বিকেল থেকেই মেলায় মানুষের ঢল নামে। এই মেলাকে ঘিরে আশপাশের কয়েকটি গ্রামে জামাই ও স্বজনদের আপ্যায়ন চলে।
রঙ-বে-রঙের ঘুড়ি মেলার মূল আকর্ষণ হলেও বর্তমানে মেলায় বসে মিষ্টিসহ বিভিন্ন রকমের দোকান। যেখানে বিভিন্ন ধরণের মিষ্টি ও চিনির শাহী জিলাপি আকৃষ্ট করে দর্শকদের। মেলায় বাঁশ, কাঠ ও লোহার তৈরি বিভিন্ন গৃস্থালির সামগ্রী ও মাছ ধরার নানা যন্ত্রের আমদানিও নজর কাড়ে মানুষের। শিশুদের খেলাধুলার জিনিসপত্র এবং নারীদের বিভিন্ন ধরনের কসমেটিক্সের দোকানও বসে দুই দিনের এই মেলায়।
মহব্বতপুর গ্রামের আলী আকবর ও দেওগ্রামের জাফর আলী বলেন, আমাদের বাব-দাদারা এই মেলায় আসতেন। তাদের দেখাদেখি এখন আমরাও এই মেলাতে আসি। এই মেলা আমাদের এখানকার একটি ঐতিহ্য।
মেলাতে আসা সিরাজগঞ্জে সদর উপজেলার আক্কাস আলী, বগুড়ার সোনাতলা উপজেলার নিতাই চন্দ্র, দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলার আসলাম হোসেনসহ অনেকেই বলেন, প্রতি বছর এই সন্যাসতলী মেলাতে আসি। এখানে ঘুড়ি ছাড়াও প্রায় সব ধরনের জিনিসপত্র পাওয়া যায়।
সন্যাসতলী মেলা কমিটির সভাপতি মন্টু চন্দ্র বলেন, প্রতি বছরের মত এবারেও বসেছে সন্যাশতলী মেলা। এই মেলা প্রায় ২০০ বছর ধরে চলে আসছে। মেলাটি হিন্দু-মুসলিম সবাই মিলে পরিচালনা করি। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ব্যবসায়ীরা এ মেলায় আসেন।
ক্ষেতলাল উপজেলার মামুদপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মশিউর রহমান বলেন, সনাতন ধর্মাবলম্বীদের এই সন্যাসতলী মেলার মূল আর্কষণ ঘুড়ি। এ মেলাকে ঘিরে আশপাশের জেলা থেকে অনেক মানুষের সমাগম ঘটে। মেলাটি মানুষের মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে।