ফেনীতে সাপের কামড়ে কৃষকের মৃত্যু

প্রতীকী ছবি
ফেনী সংবাদদাতা
প্রকাশ: ২৮ জুন ২০২৪ | ১৯:৩৪
ফেনীর সোনাগাজীতে বিষধর সাপের কামড়ে মো. ইসমাইল (৪৫) নামের এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে এ ঘটনা ঘটে।
ইসমাইল উপজেলার চর দরবেশ ইউনিয়নের দক্ষিণ চরসাহাভিকারি গ্রামের মনছুর আলীর ছেলে।
নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, গতকাল রাত সাড়ে ১০টার দিকে ইসমাইল স্থানীয় কারামতিয়া বাজার থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। পথে একটি সাপ তাঁর ডান পায়ে কামড় দেয়। তিনি একটি রশি দিয়ে ক্ষতস্থানের ওপরে বেঁধে বাড়িতে আসেন। প্রথমে বাড়িতে ওঝা দিয়ে ঝাড়ফুঁক করা হয়। পরে শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে রাত ১টার দিকে তাঁকে সোনাগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে দায়িত্বরত চিকিৎসক কোনো চিকিৎসা না দিয়ে ইসমাইলকে ফেনী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেন। সেখানে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান।
স্থানীয় ইউপি সদস্য ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, ইসমাইলকে সাপে কামড়ানোর পর কবিরাজের ঝাড়ফুঁক দেওয়ার চার ঘণ্টা পর রাত ২টার দিকে তার নাকে মুখে দিয়ে লালা ঝরতে শুরু করে। একপর্যায়ে তাকে সোনাগাজী উপজেলা হাসপাতাল থেকে ফেনী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
সোনাগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে মেডিকেল অফিসার ডা. মো. সাদেকুল করিম আরাফাত বলেন, রাতে সাপে কামড়ানো রোগী মো. ইসমাইলকে হাসপাতালে নিয়ে আসার পর পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখা যায়, তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাই তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ফেনী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলা হয়। তবে তাকে কোন প্রজাতির সাপে কামড় দিয়েছে, সেটা জানা যায়নি।
সোনাগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা উৎপল দাশ বলেন, রাতে সাপে কামড়ানো রোগী ইসমাইলকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর দেখা যায়, তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাই তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ফেনী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। তবে সাপে কাটা রোগী আনার পর কেন ভ্যাকসিন দেওয়া হয়নি, বিষয়টি খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।
সোনাগাজী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সুদ্বীপ রায় বলেন, বিষধর সাপের ছোবলে মারা যাওয়া ওই ব্যক্তির লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ফেনী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
ফেনী সিভিল সার্জন ডা. মো. শিহাব উদ্দিন বলেন, সাপের কামড়ে রোগীর মৃত্যুর বিষয়টি আমি জানি না। তবে সাপে কাটা রোগীর চিকিৎসার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেসহ হাসপাতালে পর্যাপ্ত ভ্যাকসিন রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, সম্প্রতি রাসেলস ভাইপার নিয়ে আতঙ্ক দেখা দেওয়ার পর হাসপাতালের সব চিকিৎসক, নার্সসহ স্বাস্থ্যকর্মীদের সাপে কাটা রোগীকে প্রতিষেধক (অ্যান্টিভেনম) প্রয়োগের বিষয়ে প্রশিক্ষণও দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তাকে কেন ভ্যাকসিন দেওয়া হয়নি, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।