ফেরি ঘাটের পন্টুন অটোরিকশার দখলে, দুর্ঘটনার শঙ্কা

দৌলতদিয়া ফেরিঘাটের পন্টুনে অটোরিকশার ভিড়
গোয়ালন্দ (রাজবাড়ী) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১২ জুলাই ২০২৪ | ১৭:০৬ | আপডেট: ১২ জুলাই ২০২৪ | ১৭:০৭
দেশের দক্ষিণাঞ্চলের অন্যতম প্রবেশদ্বার দৌলতদিয়ায় যানবাহন পারাপারে ফেরি সার্ভিস চালু রয়েছে। প্রতিদিন বিপুল সংখ্যক যানবাহন দৌলতদিয়া ফেরিঘাট দিয়ে রাজধানী ও দক্ষিণাঞ্চলের পথে চলাচল করে। কিন্তু দৌলতদিয়া ফেরিঘাটের পন্টুনগুলো অটোরিকশার দখলে চলে যাওয়ায় যানবাহন ওঠানামায় বিঘ্ন ঘটছে। একই সঙ্গে বড় ধরনের দুর্ঘটনার শঙ্কা তৈরি হয়েছে।
জানা যায়, দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দৌলতদিয়ায় ৭টি ফেরিঘাট থাকলেও পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর বর্তমানে তিনটি ঘাট চালু রয়েছে। ফেরিঘাটের পন্টুন দিয়ে যানবাহন ফেরিতে ওঠা-নামা করে থাকে। কিন্তু নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করেই ফেরিঘাটের পন্টুনে ঝুঁকি নিয়ে অবস্থান করছে অটোরিকশা।
সরেজমিনে দৌলতদিয়া ফেরিঘাট দেখা যায়, পাটুরিয়া ঘাট থেকে ফেরি দৌলতদিয়া ঘাটে এসে ভেরানোর সময় পাল্লাদিয়ে বিপুল সংখ্যক অটোরিকশা ঝুঁকি নিয়ে পন্টুনে ঢুকে পরে। ফলে ফেরি থেকে নামার সময় যানবাহনের চালকরা ভোগান্তির শিকার হন। এছাড়া ফেরিতে যানবাহন লোড–আনলোডে বাড়তি সময় লাগার পাশাপাশি দুর্ঘটনার আশঙ্কা তৈরী হয়।
বিআইডব্লিউটিসি’র দৌলতদিয়া ঘাটে কর্মরত পন্টুন ইনচার্জ মো. রাজু হাওলাদার জানান, পন্টুনে অটোরিকশা অবস্থান করায় ফেরিতে যানবাহন ওঠা-নামায় চরম অসুবিধা হয়। সেই সঙ্গে পন্টুনের শৃঙ্খলা রক্ষা করাও কঠিন হয়ে পড়ে। তারা সব সময়ই পন্টুন থেকে অটোরিকশা অপসারণে কাজ করে থাকেন। কিন্তু চালকদের বেপরোয়া আচরনে পন্টুন অটোরিকশা মুক্ত রাখা সম্ভব হচ্ছে না।
ফেরিতে পারাপার হওয়ায় কয়েকজন বাস-ট্রাক চালক জানান, পন্টুনে উপর অটোরিকশা থাকলে ফেরি থেকে গাড়ি ওঠা-নামার সময় অনেক দুর্ভোগ পোহাতে হয়। একই সঙ্গে দুর্ঘটনার ঝুঁকিও বেড়ে যায়। অটোরিকশা চালকরা কোন নিয়ম-কানুন জানে না, বোঝেও না।
রবিউল ইসলাম নামের এক ট্রাক চালক জানান, ফেরি থেকে নামার সময় পন্টুনে অটোরিকশা দাঁড়িয়ে থাকার কারণে চরম অসুবিধায় পড়তে হয়। কারণ ট্রাকে অনেক ভারী মালামাল লোড থাকে। যে কারণে ইচ্ছা করলেই গাড়ির গতি কম-বেশী করার সুযোগ থাকে না। আবার ফেরিঘাটের সংযোগ সড়কে গাড়ির গতি কমালে পরে আর ওই গাড়ি নিয়ে সড়কে উঠতে অনেক বেগ পেতে হয়। অপরদিকে অটোরিকশায় একটু ছোঁয়া লাগলেও বাস-ট্রাক চালকদের কাছ থেকে জরিমানা আদায় করা হয়।
বাস চালক মো. মিলন মিয়া জানান, পন্টুন ক্লিয়ার না থাকলে ফেরি থেকে গাড়ি নামাতে অনেক ঝামেলা পোহাতে হয়। দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কাও থাকে বেশি। কিন্তু এ বিষয়ে গাড়ি চালকরা কিছু বললে স্থানীয়দের হাতে লাঞ্চিত হতে হয়।
কয়েকজন অটোরিকশা চালক জানান, বর্তমানে ফেরিতে যাত্রী কম আসে। অটোরিকশা নিয়ে পন্টুনে না গেলে তারা যাত্রী পান না।
বিআইডব্লিউটিসি’র দৌলতদিয়া ঘাট কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) মো. সালাউদ্দিন জানা, ফেরিঘাটের পন্টুনে ওঠা অটোরিকশা চালকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ইতিমধ্যে জেলা পুলিশ ও নৌ পুলিশের সহযোগিতা চেয়েছেন তারা। শিগগিরই এ ব্যাপারে পুলিশ পদক্ষেপ নেবে বলে তিনি আশাবাদী।
এ বিষয়ে গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জ্যোতি বিকাশ চন্দ্র জানান, ফেরি ঘাটের পন্টুন অটোরিকশাসহ অবৈধ যানবাহন মুক্ত রাখতে স্থানীয় প্রশাসন থেকে মাঝে মধ্যে অভিযান পরিচালনা করা হয়। শিগগিরই আবার অভিযান পরিচালনা করা হবে।