ঢাকা বুধবার, ০২ জুলাই ২০২৫

জমেছে ৪৩ হাজার

কনটেইনারের ভয়াবহ জট চট্টগ্রাম বন্দরে

আইসিডি ইয়ার্ডে তিন গুণ কনটেইনার

কনটেইনারের ভয়াবহ জট চট্টগ্রাম বন্দরে

চট্টগ্রাম বন্দরে কনটেইনার জট

 সারোয়ার সুমন, চট্টগ্রাম

প্রকাশ: ১২ আগস্ট ২০২৪ | ০০:৫১ | আপডেট: ১২ আগস্ট ২০২৪ | ১২:০৭

চট্টগ্রাম বন্দরে ৪৩ হাজার কনটেইনারের ভয়াবহ জট তৈরি হয়েছে। এতে ব্যাহত হচ্ছে বন্দরের অপারেশনাল কাজ। বন্দরের বহির্নোঙরে অপেক্ষমাণ ২৪টি জাহাজে থাকা কনটেইনার ইয়ার্ডে নামলে জট আরও জটিল আকার ধারণ করবে। বন্দর থেকে প্রতিদিন যে পরিমাণ কনটেইনার খালাস হচ্ছে, জাহাজ থেকে নামছে তার চেয়ে বেশি। তাই দুই সপ্তাহ ধরে ক্রমশ বেড়েছে কনটেইনারের সংখ্যা। আইসিডি ইয়ার্ডে এখন ধারণ ক্ষমতার তিন গুণ বেশি কনটেইনার রয়েছে।

চট্টগ্রাম বন্দরে কনটেইনার ধারণ ক্ষমতা ৫৩ হাজার ৫১৮ টিইইউএস (প্রতিটি ২০ ফুট দীর্ঘ)। এর বিপরীতে এখন কনটেইনার আছে ৪৩ হাজার ৪৮০ টিইইউএস। তবে চট্টগ্রাম বন্দরের আইসিডি ইয়ার্ডে কনটেইনারের ধারণ ক্ষমতা ৮০০ টিইইউএস। রোববার পর্যন্ত সেখানে ২ হাজার ৪৫০ টিইইউএস কনটেইনার জমা হয়েছে। এটি ধারণ ক্ষমতার প্রায় তিন গুণ বেশি। 

এদিকে রপ্তানি কনটেইনার নিয়েও তৈরি হয়েছে সংকট। ট্রেন না চলায় ঢাকার কমলাপুর আইসিডিতে পড়ে আছে সাড়ে ৫০০ রপ্তানি কনটেইনার। নিরাপত্তাজনিত কারণে ২৫ দিন ধরে কনটেইনারবাহী ট্রেন চলাচল বন্ধ রেখেছে রেল কর্তৃপক্ষ। আজ সোমবার থেকে ট্রেন চলাচল শুরু হলেও আইসিডিগামী কনটেইনারের এই জট কমাতে অন্তত এক মাস লাগবে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।  

রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের চিফ অপারেটিং সুপারিনটেনডেন্ট শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘বন্দর কর্তৃপক্ষ অতিরিক্ত কনটেইনার পরিবহন করার অনুরোধ করেছেন আমাদের। তবে এখনই তা করা যাচ্ছে না। আমাদের লাইনে কিছু সীমাবদ্ধতা আছে।’

চট্টগ্রাম বন্দর ও কমলাপুর আইসিডির টার্মিনাল অপারেটর সাইফ পাওয়ারটেকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তরফদার রুহুল আমিন বলেন, বন্দর থেকে কমলাপুর আইসিডিতে কনটেইনার পরিবহনের বিষয়টিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করতে হবে রেল কর্তৃপক্ষকে। অন্যথায় অচলাবস্থা তৈরি হবে চট্টগ্রাম বন্দরে। সময় মতো রপ্তানি কনটেইনার আইসিডি থেকে বন্দরে আনতে না পারলে বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়বেন ব্যবসায়ীরা।

ট্রেনের ইঞ্জিন বৃদ্ধির অনুরোধের সাড়া মেলেনি 

রেল কর্তৃপক্ষ বলছে, স্বাভাবিক সময়ে রেলওয়ে প্রতিদিন দুই জোড়া ট্রেন চট্টগ্রাম বন্দর-ঢাকা আইসিডিতে কনটেইনার পরিবহন করত। বন্দর থেকে দুটি ট্রেনে প্রতিদিন ১০০ থেকে প্রায় ১২০টি কনটেইনার নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু যে জট এখন তৈরি তা স্বাভাবিক করতে প্রতিদিন ২০০টিরও 
বেশি কনটেইনার পরিবহন করতে হবে জরুরিভিত্তিতে। তবে বাড়তি এই পরিবহনের বিষয়টি নিয়ে নিশ্চিত করে কিছু বলছে না রেল কর্তৃপক্ষ। আপাতত পূর্বের শিডিউল অনুযায়ী ট্রেন চলাচল করবে। 

সংকট নিরসনে চট্টগ্রাম বন্দরের পক্ষে টার্মিনাল ম্যানেজার (কন্ট্রোল) জরুরি চিঠি দেয় রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের চিফ অপারেটিং সুপারিনটেনডেন্টকে। ওই চিঠিতে বন্দরের আইসিডি ইয়ার্ডে অচলাবস্থা তৈরি হতে পারে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। 

বিকল্প পথ খুঁজতে বলছেন ব্যবসায়ীরা 

কমলাপুর আইসিডির কনটেইনার সড়ক বা নৌপথে পাঠানো যায় কিনা তা খতিয়ে দেখতে বলছেন ব্যবসায়ীরা। একাধিক বিকল্প থাকলে ভবিষ্যতে এমন সংকট এড়ানো যাবে বলে মনে করেন ইন্ডিপেনডেন্ট অ্যাপারেলসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এস এম আবু তৈয়ব। তবে বন্দর কর্তৃপক্ষ বলছে, এটা করতে হলে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের অনুমতির প্রয়োজন। এ ছাড়া কমলাপুর আইসিডি ও পানগাঁও আইসিডির ট্যারিফ এবং আইজিএম সংশোধনের বিষয় রয়েছে। সড়কপথে আইসিডির কনটেইনার পরিবহনে নিরাপত্তার ইস্যুটিও সামনে আসবে আবার। নৌপথে পণ্য পরিবহনে খরচ কমাতে ও আরও সহজলভ্য করতে বলছেন ব্যবসায়ীরা। 

আরও পড়ুন

×