ঢাকা শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫

ঝিনাইদহ সীমান্তে পাওয়া গেল তাজা মর্টার শেল

ঝিনাইদহ সীমান্তে পাওয়া গেল তাজা মর্টার শেল

লড়াইঘাট সীমান্ত এলাকায় একটি তাজা ভারতীয় মর্টার শেল উদ্ধার করেছে বিজিবি। ছবি: সমকাল

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি

প্রকাশ: ৩১ আগস্ট ২০২৪ | ১৭:৩৯

ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার লড়াইঘাট সীমান্ত এলাকায় একটি তাজা ভারতীয় মর্টার শেল উদ্ধার করেছে বিজিবি। শুক্রবার দিবাগত রাত সাড়ে ৮টার দিকে এই মর্টার শেলের সন্ধান পাওয়া যায়। এলাকাটি ঘিরে রেখেছে বিজিবি ও পুলিশ। বোম ডিসপোজাল ইউনিটকে খবর দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ওই এলাকায় ভারতের অভ্যন্তরে ড্রোন দিয়েও নজরদারি করতে দেখা যায়।

বিজিবির পক্ষ থেকে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে স্থানীয় এক ব্যক্তি বিওপিতে এসে জানান, লড়াইঘাট সীমান্তের শূন্য লাইন হতে ১৫০ গজ বাংলাদেশের অভ্যন্তরে মর্টার শেল জাতীয় কিছু একটা পড়ে আছে। বিজিবি সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে ৫১ মিটার মর্টারের অবিস্ফোরিত ইলুমিনেটিং শেল বলে শনাক্ত করে। এরপর বিজিবি কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

ঝিনাইদহ বিজিবি ৫৮ ব্যাটালিয়নের অতিরিক্ত পরিচালক মেজর মোল্লা ওবায়দুর রহমান জানান, মর্টার শেলটি খুব ভয়াবহ এমনটি মনে হয়নি। তবুও সতর্ক অবস্থানে রয়েছে বিজিবি। স্থানীয়দেরকেও সেখান থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, গতকাল রাতে সীমান্তর ওই এলাকায় ভারতের অভ্যন্তরে ড্রোন ব্যবহার করে নজদারি করা হচ্ছে, এমনটি লক্ষ করা যায়। এ বিষয়ে বিএসএফকে প্রতিবাদ লিপি পাঠানো হয়েছে। শেলটির গায়ে লেখা ছিল 02/725A, 51mm M, ILLG। ধারণা করা হচ্ছে, এ জাতীয় মর্টার শেল ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) বা ভারতীয় সামরিক বাহিনী ব্যবহার করে।

মেজর মোল্লা ওবায়দুর রহমান জানান, আজ শনিবার পতাকা বৈঠকের জন্য বিএসএফকে আহ্বান জানানো হলেও তারা অপারগতা প্রকাশ করেছে। তবে গত কয়েকদিন আগে মধ্যরাতে অভ্যন্তরে মর্টার শেল দিয়ে নিজস্ব গ্রামীণ এলাকা আলোকিত করার কথা স্বীকার করেন তারা। কয়েকদিন আগে ভারতীয় মিডিয়ায় বিএসএফ কর্তৃক ফায়ারকৃত মর্টার শেল এক ভারতীয় গৃহস্তের উঠানে পড়ে। এতে গ্রামবাসীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ার খবর প্রচারিত হয়েছিল। তবে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে মর্টার শেল পতিত হওয়ার ঘটনার জন্য বিএসএফ দুঃখ প্রকাশ করেছে এবং আগামীতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি হবে না বলেও আশ্বস্ত করে।

বিজিবি কর্মকর্তা আরও বলেন, আগামী দুই দিন পর তারা (বিএসএফ) পতাকা বৈঠক করবে। তখন বিজিবি’র পক্ষ থেকে বিস্তারিত জানতে চাওয়া হবে। ড্রোনই বা কেন ব্যবহার করা হল, এটিও জানতে চাওয়া হবে। এ বিষয়ে জেলা পুলিশ সুপার ও স্থানীয় থানাকে অবহিত করা হয়েছে। পুলিশের একটি বোম ডিসপোজাল ইউনিট চাওয়া হয়েছে, তারা আসলে মর্টার শেলটি নিষ্ক্রিয় করা হবে। 

মহেশপুরের শ্যামকুড় ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জামিরুল হক জানান, মর্টার শেল পাওয়া গেছে, এমনটি জেনেছি। সেখানে নিরাপত্তাব্যবস্থাও জোরদার করা হয়েছে। কোথা থেকে এটি আসলো, তা এখনও জানতে পারিনি।

লড়াইঘাট গ্রামের সীমন্তবর্তী যে জমিতে মর্টার শেল পাওয়া যায়, সেই জমির মালিক নাজু হোসেন জানান, গতকাল বিকেলে জমিতে কাজ করার সময় দেখি, কি যেন একটা পড়ে আছে। পরে অন্য কৃষকদের সঙ্গে নিয়ে দেখি, বোতলের মত মাথা সুচালো। পরে সন্ধ্যা হলে আরও একজন লাইট নিয়ে জমির দিকে আসলে তাকেও এটি দেখাই। এরপর তিনিও বলেন, এটি না নাড়াচাড়া করাই ভালো। এরপর বিজিবি ক্যাম্পে খবর দেই।

নাজু হোসেন আরও বলেন, গত ১০ থেকে ১২ দিন আগে আমাদের গ্রাম, সীমান্ত এলাকা রাতে আলো হয়ে গিয়েছিল। এতে আমরা সবাই ঘর থেকে বেরিয়ে পড়ি। পরে আলো নিভে গেলে আমরা সবাই ঘুমিয়ে পড়ি।

এদিকে মহেশপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহাব্বুর রহমান জানান, বিজিবির সঙ্গে ঘটনাস্থলের নিরাপত্তার জন্য পুলিশ কাজ করছে। ঢাকা থেকে বোম ডিসপোজাল ইউনিট আসলে তারপর অন্যান্য কার্যক্রম সম্পন্ন হবে।

আরও পড়ুন

×