‘গ্রিন নার্সারি’তে সবজি আবাদে পথ দেখাচ্ছেন মুন্না

বিয়ানীবাজারে নিজের পলিনেট হাউসে শ্রমিকের সঙ্গে চারা পরিচর্যায় ব্যস্ত কৃষক মুন্না সমকাল
আহমেদ ফয়সাল, সিলেট (বিয়ানীবাজার)
প্রকাশ: ০১ অক্টোবর ২০২৪ | ২৩:৪১
জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলা করতে বাংলাদেশ কৃষি বিভাগ পলিনেট হাউস তৈরির মাধ্যমে নিরাপদভাবে সবজি উৎপাদনে কৃষকদের আগ্রহী করতে কাজ করছে। সিলেটের বিয়ানীবাজারে প্রথমবারের মতো ১০ শতক জায়গায় আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর ‘গ্রিন নার্সারি’ (পলিনেট হাউস) স্থাপন করেছে কৃষি অফিস। কৃষকদের বৈরী আবহাওয়ায় সবজি উৎপাদনে উৎসাহী করতেই এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে গ্রিন নার্সারির মাধ্যমে সবজি উৎপাদনে উপজেলার অন্য কৃষকদের পথ দেখাচ্ছেন পৌরসভা এলাকার চাষি মুন্না আহমদ।
পৌরসভা মিনিবাস টার্মিনাল এলাকায় পাঁচ বিঘা জায়গায় কৃষক মুন্না আহমদের কৃষি খামারের একটি অংশ জুড়ে তৈরি করা হয়েছে গ্রিন নার্সারি। উপজেলা কৃষি বিভাগের সহায়তায় এ নার্সারি গড়েছেন তিনি। চলতি বছর সিলেটে চার দফা বন্যায় সবজি আবাদযোগ্য ভূমি এখনও চাষের উপযোগী হয়নি। নিচু এলাকা এখনও বন্যার পানিতে তলিয়ে রয়েছে। তবে গত দুই মাস
ধরে পলিনেট হাউসে সবজির চারা উৎপাদন
করায় প্রতিদিন হাজারখানেক চারা বিক্রি করছেন কৃষক মুন্না আহমদ।
কৃষক মুন্না আহমদ চারা উৎপাদনের পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের সবজি আবাদ শুরু করেছেন। পলিনেট হাউসে ক্যাপসিকাম, ব্রকলি, রকমেলন, রঙিন তরমুজ, রঙিন ফুলকপি, বাঁধাকপি, লেটুসসহ শীতকালে গ্রীষ্মকালীন সবজি ঝিঙা, চিচিঙ্গা, করলা আবাদ শুরু করেছেন। একই সঙ্গে উন্নত জাতের পেঁপে, হাইব্রিড বেগুন, কয়েক জাতের মরিচ, লাউ, টমেটোর চারা বপন ও বিক্রি করছেন। পলিনেট হাউসের শুরুতে ১০ জন শ্রমিক কাজ করলেও বর্তমানে পাঁচজন শ্রমিক প্রতিদিন কাজ করছেন।
পলিনেট হাউসের সুফল সম্পর্কে বিয়ানীবাজার উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা লোকমান হেকিমের ভাষ্য, পলিনেট হাউসে শীতকালীন সবজি গ্রীষ্মকালে এবং গ্রীষ্মকালীন সবজি শীতকালে আবাদ করা যাবে এবং ভালো ও উন্নত পরিবেশে ফল ও সবজির চারা উৎপাদন করা যাবে। এতে প্রান্তিক চাষিদের পাশাপাশি মৌসুমি চাষিরা চারা ক্রয় করে ফল ও সবজি আবাদ করে লাভবান হতে পারবেন। এ ছাড়া ভেতর ও বাইরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করার পাশাপাশি ক্ষতিকর কীটপতঙ্গ ও পোকামাকড় পলিনেট হাউসে ঢুকতে পারবে না। ফলে চারা বা ফসল রোগবালাই থেকে মুক্ত থাকবে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, স্টিলের অবকাঠামোর সঙ্গে পলি পেপার, নেট, ভেতরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে পানির ফোয়ারা,
মোটা কাপড়ের শেড ও একটি পাম্প মিলিয়ে ১০ শতক জায়গায় পলিনেট হাউস তৈরি করতে ব্যয় হয় প্রায় ১৬ লাখ টাকা। তবে কৃষকরা চাইলে এর চেয়ে বড় কিংবা ছোট আকারেও পলিনেট হাউস তৈরি করতে পারবেন।
- বিষয় :
- চারা রোপণ