ঢাকা শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫

৫ আগস্ট মৃত্যু বিদ্যুৎস্পর্শে, আবেদন হত্যা মামলার 

৫ আগস্ট মৃত্যু বিদ্যুৎস্পর্শে, আবেদন হত্যা মামলার 

রকিবুল হাসান রকি

হাসান হিমালয়, খুলনা

প্রকাশ: ২৪ নভেম্বর ২০২৪ | ০৩:১৫ | আপডেট: ২৪ নভেম্বর ২০২৪ | ১৫:৪৮

আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর খুলনার পাইকগাছার চাঁদখালী গ্রামে গত ৫ আগস্ট বিকেলে বাঁশের লাঠিতে জাতীয় পতাকা টানাতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পর্শে মারা যান বিএল কলেজের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র রকিবুল হাসান রকি। তবে এ ঘটনাকে পরিকল্পিত খুন দাবি করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে খুলনার আওয়ামী লীগ নেতাসহ ৩১৫ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলার আবেদন করেছেন নিহতের বাবা রফিকুল ইসলাম গাজী। ২১ নভেম্বর চিফ প্রসিকিউটরের কাছে অভিযোগটি জমা দেন তিনি। তবে মামলাটি গ্রহণ করা হয়েছে কিনা, জানা যায়নি।

ঘটনাস্থল পাইকগাছা উপজেলায় হলেও মামলার অভিযোগে খুলনা মহানগর ও জেলা আওয়ামী লীগ নেতা, কেসিসির কাউন্সিলর, খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) শিক্ষক, চিকিৎসক, সাংবাদিক ও আইনজীবীদের অভিযুক্ত করা হয়েছে। তাদের বেশির ভাগই সক্রিয়ভাবে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে জড়িত ছিলেন। আন্দোলন চলাকালে তাদের অনেকেই ছাত্রদের বিপক্ষে সরাসরি অবস্থান নেন। আবার ছাত্রদের পক্ষে ছিলেন এমন কয়েকজনও রয়েছেন আসামির তালিকায়।

মামলার বাদী ও নিহতের বাবা রফিকুল ইসলাম গাজী মামলার বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে সমকালকে জানিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে সমকালে সংবাদ প্রকাশ হলে রোববার সকালে প্রতিবেদককে ফোন দিয়ে তিনি জানান, রোববার ছাত্র সমন্বয়ক পরিচয় দিয়ে দুজন ছাত্র তার পাইকগাছা গ্রামের বাড়িতে যান। সেখানে তার ছেলে মৃত্যুর সব কাগজপত্র সংগ্রহ করেন এবং সাহায্যের কথা বলে স্বাক্ষর সংগ্রহ করেন।  শুক্রবার বিভিন্ন লোক তাকে মামলার বিষয়টি জানালে তিনি ভয় পেয়ে যান। শনিবার সকালে স্থানীয় আওয়ামী লীগের লোকজন মামলা প্রত্যাহারের জন চাপ দিতে থাকে। ভয়ে তিনি দোকান বন্ধ করে লুকিয়ে আছেন।

মামলার অভিযোগে নিহতের বাবা উল্লেখ করেন, গত ৫ আগস্ট সকালে চাঁদখালী গ্রামে ছাত্র-জনতা মিছিল করে। ওই মিছিলে আওয়ামী লীগ হামলা ও গুলিবর্ষণ করলে অনেকেই আহত হন। কিন্তু আন্দোলন দমাতে ব্যর্থ হয়ে আসামিরা আন্দোলনকারীদের বিদ্যুৎস্পর্শে মারার পরিকল্পনা করেন। পরিকল্পনার অংশ হিসেবে চাঁদখালীর বিভিন্ন পয়েন্টে রাস্তার মাঝে পড়ে থাকা বাঁশ ও বৈদ্যুতিক খুঁটিতে বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়ে দেওয়া হয়। এক পর্যায়ে কাঁচা বাঁশের মাথায় বাঁধা পতাকা হাতে মিছিল নিয়ে যাওয়ার সময় রকি বিদ্যুৎস্পর্শে মারা যান। 

এজাহারে অভিযুক্তদের তালিকায় রয়েছেন সাবেক এমপি শেখ হেলাল, কেসিসির সাবেক মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক, সাবেক এমপি এস এস কামাল হোসেন, শেখ সালাহ উদ্দীন জুয়েল, আব্দুস সালাম মুর্শেদী, আক্তারুজ্জামান বাবু, মন্নুজান সুফিয়ানসহ আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী।

উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের প্রথম যুগ্ম আহ্বায়ক মোল্লা ইউনুস আলী বলেন, আন্দোলনের পুরোটা সময় রকি সামনের সারিতে ছিলেন। শেখ হাসিনা পালিয়ে গেছে শুনে আমরা মিছিল নিয়ে বিএনপি অফিসের সামনে চলে আসি। এ সময় জাতীয় পতাকা টানাতে গিয়ে রকি বিদ্যুৎস্পর্শে মারা যান। খুঁটিতে পরিকল্পিতভাবে বিদ্যুৎ দেওয়া হয়েছিল বলে মনে হয়নি। তবে রকিকে শহীদের মর্যাদা দিতে আমরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। 

আরও পড়ুন

×