বিএডিসির বীজ কেলেঙ্কারি, দুই তদন্ত কমিটি গঠন

উপ-পরিচালক মনিরুজ্জামান।
কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪ | ০৯:৩৩
কিশোরগঞ্জে বিএডিসির বীজ কেলেঙ্কারি নিয়ে দৈনিক সমকালে প্রতিবেদন প্রকাশের প্রেক্ষিতে দুটি তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে। বিএডিসির প্রধান কার্যালয় থেকে অতিরিক্ত মহাব্যবস্থাপক (বীজ) মো. আব্দুস সামাদের নেতৃত্বে দুই সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে। এ কমিটি তদন্ত করে ঢাকায় ফিরে গেছে। আর কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক ফৌজিয়া খান জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আবুল কালাম আজাদের নেতৃত্বে বৃহস্পতিবার এক সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করেছেন।
আবুল কালাম আজাদ এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। গত ৭ ডিসেম্বর দৈনিক সমকালের শেষ পাতায় এবং ৮ ডিসেম্বর সমকালের অনলাইনে ‘ঘুষে নির্ধারণ বোরো বীজের বরাদ্দ’ শিরোনামে প্রতিবেদনটি ছাপা হয়েছিল।
সমকালের প্রতিবেদনে দাপ্তরিক বরাদ্দের চেয়েও ঘুষের বিনিময়ে কোনো কোনো ডিলারকে বাড়তি বীজ দেওয়া, কোনো কোনো ডিলারকে ঘুষ নিয়েও কথামত বীজ না দেওয়া, এলাকাভিত্তিক বীজ প্রদানে বৈষম্য করাসহ বিভিন্ন অনিয়মের কথা তুলে ধরা হয়েছিল। অতিরিক্ত মহাব্যবস্থাপক আব্দুস সামাদের নেতৃত্বাধীন কমিটি বুধবার কিশোরগঞ্জে এসে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত তদন্ত করে অভিযোগের সত্যতা পেয়েছে বলে ইঙ্গিত দেন স্থানীয় কর্মকর্তাগণ।
পাকুন্দিয়ার ডিলার আখেরুল মোমেনিন নৌশাদের কাছ থেকে ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা ঘুষ নিয়েও উপ-পরিচালক মনিরুজ্জামান ৪০ টনের স্থলে মাত্র ৫ টন বীজ দিয়েছিলেন বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ ছিল। তবে সমকালে প্রতিবেদন প্রকাশের পর নৌশাদকে উপ-পরিচালক মনিরুজ্জামান ১ লাখ টাকা ফেরত দিয়েছেন বলে নৌশাদ এ প্রতিবেদককে জানিয়েছেন।
অতিরিক্ত মহাব্যবস্থাপক আব্দুস সামাদের তদন্তকালেও তিনি ঘুষের ১ লাখ টাকা ফেরত পাওয়ার তথ্য অবহিত করেছেন বলে জানিয়েছেন। আরও কয়েকজন ডিলারকেও উপ-পরিচালক মনিরুজ্জামান ঘুষের টাকা ফেরত দিয়েছেন বলে নৌশাদ জানিয়েছেন। এছাড়া, জেলা বীজ ডিলার সমিতির সভাপতি সামিউল হক ভূঁইয়া জানিয়েছেন, তিনিও অতিরিক্ত মহাব্যবস্থাপক আব্দুস সামাদের তদন্ত কমিটির কাছে ঘুষ লেনদেন ও বরাদ্দের তারতম্য সংক্রান্ত তথ্য দিয়েছেন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণের উপ-পরিচালক আবুল কালাম আজাদ বলেছেন, সমকালের প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে বিএডিসির প্রধান কার্যালয় থেকে একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। আর আবুল কালাম আজাদের নেতৃত্বে জেলা প্রশাসক ফৌজিয়া খান বৃহস্পতিবার এক সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে দিয়েছেন। পরবর্তী ৭ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য আবুল কালাম আজাদকে সময়সীমা দেওয়া হয়েছে।
এদিকে তদন্তের বিষয়ে কথা বলার জন্য অতিরিক্ত মহাব্যবস্থাপক (বীজ) মো. আব্দুস সামাদের মোবাইল ফোন নম্বরে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি রিসিভ করেননি। হোয়াটসঅ্যাপে প্রশ্ন পাঠানোর পরও জবাব দেননি।