ঢাকা শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫

ইজতেমার মাঠ দখল নিয়ে সংঘর্ষ, ঝরল ৪ প্রাণ

ইজতেমার মাঠ দখল নিয়ে সংঘর্ষ, ঝরল ৪ প্রাণ

টঙ্গীর ইজতেমা মাঠের দখল নিয়ে সংঘর্ষে জড়ান মাওলানা জুবায়ের ও সাদ কান্ধলভির অনুসারীরা। বুধবার সকালে তোলা ছবি: সমকাল

 সমকাল প্রতিবেদক, ঢাকা, গাজীপুর ও টঙ্গী প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১৯ ডিসেম্বর ২০২৪ | ০৮:০৪ | আপডেট: ১৯ ডিসেম্বর ২০২৪ | ০৮:০৫

তাবলিগ জামাতের দু’পক্ষের সংঘাতে রক্তাক্ত হলো টঙ্গীর তুরাগতীরের বিশ্ব ইজতেমা ময়দান। মঙ্গলবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে মাওলানা সাদ কান্ধলভি ও মাওলানা জুবায়ের আহমেদের অনুসারীদের পুরোনো বিরোধ সংঘাতে রূপ নেয়। দু’পক্ষের সংঘর্ষে চারজনের প্রাণ গেছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।

এর মধ্যে তিনজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। আহত হয়েছেন শতাধিক। তাদের কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। আহত ৩৩ জন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

উত্তেজনাকর পরিস্থিতিতে গতকাল বুধবার দুপুর পর্যন্ত টঙ্গী ও আশপাশ এলাকায় সাদ ও জুবায়েরপন্থিরা অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন। পুরো এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। জুবায়েরপন্থিরা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক দুই ঘণ্টা অবরোধ করেন। এতে বন্ধ হয়ে যায় যান চলাচল। পরে উভয় পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে ইজতেমা ময়দান খালি করার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। জারি করা হয় ১৪৪ ধারা। দুপুরের পর সবাইকে সরিয়ে দিয়ে মাঠের নিয়ন্ত্রণ নেন সেনা, পুলিশ, র‍্যাব ও বিজিবি সদস্যরা। এ ছাড়া পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত ইজতেমা ময়দান ও আশপাশ এলাকায় সভা-সমাবেশ, মিছিল ও বিক্ষোভ নিষিদ্ধ করেছে পুলিশ।

মাওলানা সাদ কান্ধলভির অনুসারীদের নিয়ে গতকাল বেলা ১১টায় বৈঠকে বসেন অন্তর্বর্তী সরকারের পাঁচ উপদেষ্টা। তাদের সঙ্গে বৈঠকের পর মাওলানা জুবায়ের আহমেদের অনুসারীদের সঙ্গে বৈঠক করেন তারা। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর সভাপতিত্বে বৈঠকে ভূমি উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফ, গৃহায়ন ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম, ধর্মবিষয়ক উপদেষ্টা আ ক ম খালিদ হোসেন অংশ নেন।

পরে ইজতেমা মাঠে হামলা ও সংঘর্ষে চারজন নিহত হয়েছেন জানিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, হত্যাকাণ্ডে যারা জড়িত, তাদের ছাড় দেওয়ার কোনো অবকাশ নেই। এ ঘটনায় মামলা হবে জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, মামলার পর জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে। 

সাদপন্থিরা বিশ্ব ইজতেমায় অংশ নিতে পারবেন কিনা– এ প্রশ্নে উপদেষ্টা বলেন, দুই পক্ষ যদি আলোচনা করে সমাধান করতে পারে, তাহলে সাদপন্থিরা ইজতেমায় অংশ নিতে পারবেন। ইজতেমার তারিখ সরকার বাতিল করেনি। তারা আলোচনা করুক। 

মাঠ দখল নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরেই দু’পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা চলছিল। আগামীকাল শুক্রবার থেকে সাদ কান্ধলভির অনুসারীরা পাঁচ দিনের জোড় ইজতিমা করার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। কিন্তু জুবায়েরের অনুসারীরা বলছিলেন, সাদপন্থিদের এখানে জোড় ইজতেমা করতে দেওয়া হবে না। কয়েক দিন আগে থেকেই মাঠে অবস্থান করছিলেন তারা। 

ইজতেমার আয়োজন নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরেই বিরোধ চলছে। দুই পক্ষ পৃথকভাবে বিশ্ব ইজতেমা করে আসছে। আগামী ৩১ জানুয়ারি থেকে ২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত প্রথম পর্ব এবং ৭ থেকে ৯ ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয় পর্বের ইজতেমা অনুষ্ঠানের অনুমতি দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। প্রথম পর্বের বিশ্ব ইজতেমার প্রস্তুতি হিসেবে জুবায়েরপন্থিদের পাঁচ দিনব্যাপী জোড় ইজতেমা শেষ হয়েছে গত ৩ ডিসেম্বর। তবে সাদের অনুসারীদের জোড় ইজতেমা করতে না দেওয়ার দাবিতে ১৩ ডিসেম্বর টঙ্গী-কালীগঞ্জ আঞ্চলিক সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন মাওলানা জুবায়েরের অনুসারীরা। 

গতকালকের সংঘর্ষের জন্য দু’পক্ষ পরস্পরকে দায়ী করছে। জুবায়েরপন্থিরা দাবি করছেন, তারা ইজতেমা মাঠে অবস্থানকালে রাত সাড়ে ৩টায় ছুরি, ক্ষুর, হাতুড়ি, ক্রিকেট স্টাম্প নিয়ে তাদের ওপর হামলা চালান সাদপন্থিরা। অন্যদিকে সাদপন্থিদের দাবি, কামারপাড়া থেকে স্লুইসগেট পর্যন্ত সড়কে তারা ঘুমানোর প্রস্তুতি নেওয়ার সময় জুবায়েরপন্থিরা তাদের দিকে ইটপাটকেল, জ্বলন্ত মশাল নিয়ে হামলা করে। 

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মঙ্গলবার কনকনে শীতের রাতে কুয়াশার দাপট ছিল। তুরাগ নদের তীরে ইজতেমা ময়দানের বিশাল শামিয়ানার নিচে অবস্থানকারী জুবায়েরপন্থিদের কেউ কেউ আদায় করছিলেন তাহাজ্জুতের নামাজ। কেউ কেউ ছিলেন গভীর ঘুমে। রাত ৩টার দিকে সাদপন্থিরা ইজতেমা মাঠে ঢুকে পড়লে সংঘাত শুরু হয়। লাঠিসোটা নিয়ে দু’পক্ষ সংঘর্ষে জড়ায়। পাল্টাপাল্টি ইটপাটকেল নিক্ষেপ করা হয়। দফায় দফায় চলে সংঘর্ষ। বুধবার ভোরে রণক্ষেত্রে পরিণত হয় ইজতেমা ময়দান। আহতদের টঙ্গীর আহ্সান উল্লাহ্‌ জেনারেল হাসপাতাল, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ বিভিন্ন ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। 

টঙ্গী পশ্চিম থানার ওসি ইস্কান্দার হাবিবুর রহমান জানান, দুই পক্ষের সংঘর্ষে তিনজন নিহত হওয়ার তথ্য তাদের কাছে আছে। তারা হলেন– কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার এগারসিন্দুর গ্রামের বাসিন্দা আমিনুল ইসলাম বাচ্চু, ফরিদপুর সদরের শেখ সামাদের ছেলে বেলাল হোসেন ও বগুড়া সদরের তাজুল ইসলাম। তবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা চারজন নিহত হওয়ার তথ্য দেন। চতুর্থ জনের নাম-পরিচয় জানা যায়নি।

গতকাল দুপুর পর্যন্ত টঙ্গী ও আশপাশ এলাকায় সাদ ও জুবায়েরপন্থিরা অবস্থান করেন। এর পর ইজতেমা ময়দানসহ আশপাশের তিন কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। কয়েকটি এলাকায় সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। ডিএমপির প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, বুধবার বেলা ২টা থেকে কামারপাড়া, আবদুল্লাহপুর, উত্তরা সেক্টর-১০ এবং তৎসংলগ্ন তুরাগ নদের দক্ষিণ-পশ্চিম এলাকায় সব ধরনের সভা-সমাবেশ, মিছিল, শোভাযাত্রা ও বিক্ষোভ পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিষিদ্ধ করা হলো। 

জুবায়ের অনুসারীদের মিডিয়া সমন্বয়কারী হাবিবুল্লাহ রায়হান বলেন, মঙ্গলবার রাত আড়াইটায় হাসনাত আবদুল্লাহ, সারজিস আলমসহ কয়েকজন সমন্বয়ক কাকরাইল মসজিদে তাদের সঙ্গে আলোচনার জন্য আসেন। কীভাবে সমস্যার সমাধান করা যায়– এ নিয়ে আলোচনা হচ্ছিল। একটু পরেই খবর আসে, সাদপন্থিরা সারাদেশ থেকে টঙ্গী ময়দানের পশ্চিম পাশে বেলাল মসজিদে অবস্থান করছে। তারা বিশ্ব ইজতেমার প্রস্তুতি কাজে নিয়োজিত ও ঘুমন্ত তাবলিগের সাথীদের ওপর হামলা চালায়।

জুবায়েরপন্থিদের নেতা মুফতি আমানুল হক কাকরাইল মসজিদ থেকে সংবাদমাধ্যমের কাছে দাবি করেন, ইজতেমা মাঠে অবস্থানকালে রাত সাড়ে ৩টায় ছুরি, ক্ষুর, হাতুড়ি, ক্রিকেট স্টাম্প দিয়ে তাদের ওপর হামলা চালায় সাদপন্থিরা। জুবায়েরপন্থি নেতা মামুনুল হক বলেন, ইজতেমা মাঠে অবস্থানকারীদের ওপর ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করা হয়েছে। একপক্ষীয়ভাবে হামলা হয়েছে। এটি দুই পক্ষের সংঘর্ষ বলে সংবাদ প্রচার হচ্ছে; কিন্তু এটি একপক্ষীয় হামলা ও আক্রমণ। সাদপন্থিরা হামলা করে চারজনকে হত্যা করেছে। 

অন্যদিকে সংঘর্ষের জন্য জুবায়েরপন্থিদের উস্কানিকে দায়ী করেছেন সাদ অনুসারীরা। ইজতেমা ময়দানে সংবাদ সম্মেলনে সাদ অনুসারী মুয়াজ বিন নূর বলেন, ‘তাবলিগের এক পক্ষ সারাবছর এ মাঠ ব্যবহার করে। তারা এবার যখন মাঠটিতে পাঁচ দিনের জোড় (জমায়েত) করলেন, তখন আমরা সেখানে জোড় (জমায়েত) করার অনুমতি চাই। সরকার দুই পক্ষকে নিয়ে ৪ নভেম্বর বসার চেষ্টা করলে আমরা এসেছি; কিন্তু তারা আসেনি। সরকার আমাদের দিয়াবাড়ী মাঠে জমায়েতের অনুমতি দিলে সেটি পরিদর্শন করে দেখলাম, মাত্র ৩০ হাজার মানুষের সেখানে সংকুলান হবে। সেখানে কোনো ইউটিলিটি ফ্যাসিলিটি নেই। আমাদের চার থেকে পাঁচ লাখ মানুষের সেখানে সংকুলান হবে না। ১৮ ডিসেম্বর (গতকাল) সকাল ১০টায় উপদেষ্টারা আমাদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে চেয়েছেন। সে জন্য মাঠ প্রস্তুত করতে সরকারের অনুমতি নিয়ে আমাদের সাথীরা ঢাকায় এসেছেন।’ তিনি দাবি করেন, বিভিন্ন স্থানে সাদপন্থিরা আক্রমণের শিকার হয়েছেন। রাত সাড়ে ৩টার দিকে কামারপাড়া থেকে স্লুইসগেট পর্যন্ত সড়কে ঘুমানোর প্রস্তুতি নেওয়ার সময় জুবায়েরপন্থিরা তাদের ওপর ইটপাটকেল ও জ্বলন্ত মশাল নিক্ষেপ করে আক্রমণ শুরু করে।

সাদপন্থি মাওলানা সায়েম জায়দুলের ভাষ্য, জুবায়েরপন্থিদের হামলার শিকার হন তাবলিগের সাথীরা। হামলাকারীরা ধারালো চাকু ও চাপাতি দিয়ে আঘাত করেছে। 

সংঘর্ষে হতাহতের ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ। বুধবার সকালে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া স্ট্যাটাসে তিনি লেখেন, “সাদপন্থি সমর্থিত ‘সচেতন ছাত্র সমাজের’ দেওয়া প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় ঘেরাও কর্মসূচি এবং সকাল ১০টার মধ্যে মাওলানা সাদ সাহেবের ভিসার জন্য বাসভবন ঘেরাও কর্মসূচি ঘোষণার কারণে আমরা অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে সাদপন্থিদের সঙ্গে আলোচনার জন্য টঙ্গী যাই। সেখানে আলোচনা শেষে তারা প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় ঘেরাও কর্মসূচি প্রত্যাহার করেন এবং মাওলানা সাদ সাহেবের ভিসা জটিলতা নিরসনে পুনরায় আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।” সব ধর্মপ্রাণ মুসলমানকে শান্ত ও ধৈর্য ধারণ করার অনুরোধ জানিয়ে তিনি লেখেন, ‘কোনো প্রকার বিশৃঙ্খলা না করে ধর্মীয় সম্প্রীতি বজায় রাখার জন্য আহ্বান করছি। তাবলিগ একটি দ্বীনি ও ধর্মীয় ইস্যু। ফলে আমরা মনে করি, তাবলিগসহ ধর্মীয় সকল বিষয়াদি উলামায়ে কেরামের মাধ্যমেই সুরাহা ও মীমাংসিত হবে। তবে সমগ্র বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা রক্ষার দায়ভার আমাদের প্রত্যেক নাগরিকের। দেশের শৃঙ্খলা বজায় রাখতে শান্তিপূর্ণ সমাধান ও অবস্থানের জন্য আমরা সবাই আন্তরিকভাবে কাজ করে যাব।’ 

ঢাকা মেডিকেলে সেনাবাহিনী, পুলিশ ও র‍্যাব মোতায়েন

ইজতেমা ময়দানে সংঘর্ষে আহতদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। তবে হাসপাতালের ভেতরে ও সামনে দফায় দফায় হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে নিরাপত্তার জন্য পুলিশ, র‍্যাব ও সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়। কাকরাইল মসজিদ এলাকায়ও নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। 

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান জানান, সংঘর্ষে আহত ৩৫ জন চিকিৎসা নিতে আসেন। তাদের মধ্যে সাতজনকে ভর্তি করা হয়েছে। 

রমনা থানার ওসি গোলাম ফারুক জানান, কাকরাইল মসজিদ ও আশপাশ এলাকায় পর্যাপ্তসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। যে কোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত রয়েছে পুলিশ। 

পাকুন্দিয়ায় বিক্ষোভ

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, টঙ্গীতে সংঘর্ষে নিহত হন আমিনুল হক বাচ্চু (৭০)। তিনি পাকুন্দিয়া উপজেলার এগারসিন্দুর ইউনিয়নের খামা গ্রামের মৃত উছমান আলীর ছেলে। এ ঘটনায় জড়িতদের বিচার দাবিতে গতকাল দুপুরে পাকুন্দিয়ায় বিক্ষোভ সমাবেশ হয়েছে। ওলামায়ে কেরাম ও সর্বস্তরের তাওহিদি জনতার ব্যানারে উপজেলা সদরের ঈদগাহ মাঠ থেকে মিছিল শুরু হয়। পরে উপজেলা পরিষদ চত্বরে সমাবেশ হয়। 

উপজেলা ইমাম ওলামা পরিষদ সভাপতি মাওলানা রশিদ আহমেদ জাহাঙ্গীর হুছাইনীর সভাপতিত্বে সমাবেশে শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখার আহ্বান জানিয়ে বক্তব্য দেন ইউএনও মো. বিল্লাল হোসেন। 

বিভক্তি ও বারবার সংঘাত 

২০১৭ সালে মোহাম্মদ সাদ কান্ধলভির একটি বক্তব্যকে কেন্দ্র করে বিশ্ব ইজতেমার আয়োজক তাবলিগ জামাতের নেতা ও অনুসারীদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি হয়েছিল। এর পর থেকে দুই পক্ষ আলাদা হয়ে দুই পর্বে ইজতেমার আয়োজন করছে। তাবলিগ জামাতের মধ্যে দ্বন্দ্ব প্রথম প্রকাশ্য রূপ পায় ২০১৭ সালের নভেম্বরে। ওই সময় কাকরাইলে দুই দল কর্মীর মধ্যে হাতাহাতি হয়। পরের বছর কাকরাইল মসজিদের দখল নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।

২০১৮ সালে জুলাই মাসে তাবলিগ জামাতের সাদবিরোধী অংশকে আনুষ্ঠানিক সমর্থন দিয়েছিলেন হেফাজতে ইসলামের তৎকালীন নেতা আহমদ শফী (প্রয়াত)। ওই বছরও সংঘর্ষে জড়িয়েছিল উভয় পক্ষ। এতে একজন নিহত ও শতাধিক আহত হয়েছিলেন। গত নভেম্বরে ইজতেমা ও ঢাকার কাকরাইল মসজিদের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দু’পক্ষ মুখোমুখি অবস্থান নেয়।

আরও পড়ুন

×