বছরে অর্ধকোটি টাকার চারা বিক্রি

হক উদ্যান নার্সারিতে ফুলের বাগান - সমকাল
কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৪ জানুয়ারি ২০২৫ | ২৩:২৮
প্রায় ১০ একরের বিশাল দুটি নার্সারি তাঁর। উৎপাদন করেন ফুল-ফল, বনজ, ঔষধি, সবজি ও মসলা জাতীয় চারা। কিশোরগঞ্জ ছাড়াও ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, ময়মনসিংহ বিভাগসহ দেশের বিভিন্ন জেলার নার্সারি ব্যবসায়ী তাঁর কাছ থেকে চারা নিয়ে যান। বছরে বিক্রি করেন প্রায় অর্ধকোটি টাকার চারা।
করিমগঞ্জের নোয়াবাদ ইউনিয়নের দরগাভিটা এলাকার নূরুল হক নার্সারি করেছেন পার্শ্ববর্তী জাফরাবাদ ইউনিয়নের মালিবাড়ি এলাকার কিশোরগঞ্জ-করিমগঞ্জ সড়কের পাশে। নাম দিয়েছেন ‘হক উদ্যান নার্সারি’। শনিবার গিয়ে দেখা গেছে, অসংখ্য প্লট তৈরি করে আলাদা আলাদা জাতের চারা সারিবদ্ধভাবে সাজিয়ে রেখেছেন। কেউ প্যাকেটে চারা রোপণ করছেন, কেউ এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় স্থানান্তর করছেন, কেউ ওষুধ স্প্রে করছেন। নার্সারিতে প্রায় ৩০০ জাতের চারা রয়েছে। অধিকাংশই গ্রাফটিং করা কলমের চারা।
নূরুল হক জানান, অধিকাংশ চারা তিনি তাঁর নার্সারিতেই তৈরি করেন। মাঝে মধ্যে অন্যান্য নার্সারিতেও চারা তৈরি করা হয়। এখানে দুই টাকা থেকে দুই হাজার টাকা দামের চারা পাওয়া যায়। মরিচের চারা দুই টাকা, আবার রাম্বুটান, রঙ্গনসহ কিছু বিদেশি ফল ও কিছু আমের কলম বিক্রি হয় দুই হাজার টাকায়। বছরে প্রায় অর্ধকোটি টাকার চারা বিক্রি করেন। এখানে ২০ জন শ্রমিক।
এখানে রয়েছে গোলাপ, জবা, নয়নতারা, চন্দ্রমল্লিকা, গাঁদাসহ বিভিন্ন জাতের ফুলের চারা। এসব চারায় হাজারও ফুল ফুটে আছে। গোলাপ, জবা এবং গাঁদা রয়েছে বিভিন্ন রঙের।
সরকারিভাবে উদ্যানতত্ত্ব বিভাগের উদ্যোগে চারা উৎপাদন হচ্ছে অনেক আগে থেকেই। পাশাপাশি সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বেসরকারি উদ্যোগেও চারা উৎপাদনের প্রচুর নার্সারি গড়ে উঠেছে। জেলায় সরকারি তিনটি নার্সারির পাশাপাশি বেসরকারি প্রায় ৫০টি নার্সারি রয়েছে।
নার্সারিতে দেখা গেছে, পলিথিনের ছোট্ট ব্যাগে, সিনথেটিক বস্তায়, মাটির টব আর ড্রাম টবে এসব চারা উৎপাদন করা হচ্ছে। এর মধ্যে ছোট ছোট পলিথিনের ব্যাগে উৎপাদন করা হচ্ছে নানা জাতের ফুল, সবজি ও মসলা জাতীয় চারা। এখন শীতকাল, অধিকাংশ চারায় বাহারি মৌসুমি ফুল ফুটে আছে। ড্রাম টবে মূলত উৎপাদন করা হয় ফলের চারা। এগুলো মূলত গ্রাফটিং কলমের চারা। অনেক টবে আমের চারায় বোল এসেছে।
শ্রমিক রুমন জানান, তারা ২০ জন শ্রমিক নার্সারিতে কাজ করেন। এখানে তাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়েছে। পরিবার-পরিজন নিয়ে মোটামুটি চলতে পারছেন।
নার্সারির মালিক নূরুল হককে দেখা গেছে, নিজেই স্প্রে মেশিন নিয়ে নার্সারিতে আগাছানাশক
ওষুধ স্প্রে করছেন। তিনি জানান, পুরো প্লটের আগাছা পরিষ্কার
করার জন্য শ্রমিক এনেছিলেন। ৫ হাজার টাকায়ও রাজি হয়নি। এখন ১১শ টাকার ওষুধ স্প্রে করে আগাছা দমন করছেন।
- বিষয় :
- ফুলেল শুভেচ্ছা