ঢাকা শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫

বরিশালের মেয়র পদ

মুফতি ফয়জুলের সমর্থকদের চাপে আদালত

জাপা নেতা তাপস মামলা করে চুপচাপ

মুফতি ফয়জুলের সমর্থকদের চাপে আদালত

ফাইল ছবি

 সুমন চৌধুরী, বরিশাল

প্রকাশ: ২৫ এপ্রিল ২০২৫ | ০১:০৬

বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়রের চেয়ারে বসতে চান দুই নেতা। ভোটযুদ্ধ নয়, আইনি লড়াইয়ে জিতে তারা নগর পিতা হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন। ‘আওয়ামী লীগ ভোটকেন্দ্র দখল করায় হেরেছেন’– এমন যুক্তি দেখিয়ে ইসলামী আন্দোলনের জ্যেষ্ঠ নায়েবে আমির মুফতি ফয়জুল করীম ও জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা ইকবাল হোসেন তাপস এখন আদালতে মামলা ঠুকেছেন। ঢাকা ও চট্টগ্রাম সিটিতে নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বীকে বিজয়ী ঘোষণার আদালতের রায়কে উদাহরণ হিসেবে দেখাচ্ছেন তারা। ২০২৩ সালের ১২ জুন অনুষ্ঠিত নির্বাচনে দু’জনই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে হেরেছিলেন। এ নিয়ে বরিশালে রাজনৈতিক উত্তাপ বিরাজ করছে।  

অন্যদিকে, তাদের দাবির আইনি যৌক্তিকতা ও দাবি আদায়ে ইসলামী আন্দোলনের মারমুখী ভূমিকা নিয়ে প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে। যদিও তাপস দাবি করেছেন. তিনি মেয়র পদ চান না, নির্বাচন বাতিল চেয়ে মামলা করেছেন। মামলার বর্ণনায় আদালতে সংশোধনী দিয়েছেন। 

জানা গেছে, বরিশাল নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে গত ১৭ এপ্রিল মামলা করেন মুফতি ফয়জুল। পাঁচ দিন পর তাপস গত বুধবার মামলা করেন। তাঁর মামলার পর বিষয়টি ‘ষড়যন্ত্র’ আখ্যা দিয়ে ইসলামী আন্দোলনের নেতাকর্মী ফেসবুকে জাপাকে নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার ইসলামী আন্দোলন আদালতপাড়ায় কয়েক হাজার নেতাকর্মীর বিক্ষোভ দেখিয়ে তাদের শক্তির জানান দেয়। চরমোনাই পীরের নিজের এলাকা বরিশাল। তাঁর দল বরিশালে সাংগঠনিকভাবে বেশ শক্তিশালী। মুফতি ফয়জুল ইসলামী আন্দোলনের দ্বিতীয় শীর্ষ নেতা।
নির্বাচনে ফয়জুল ৩৩ হাজার ৮২৮ ভোট পেয়ে নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী হয়েছিলেন। জাপার তাপস পান ৬ হাজার ৬২৫ ভোট। জয়ী নৌকার প্রার্থী আবুল খায়ের আবদুল্লাহ পেয়েছিলেন ৮৭ হাজার ৮০৮ ভোট। ফয়জুলের আইনজীবী শেখ আবদুল্লাহ নাসের জানান, মামলাটি বিচারযোগ্য হবে কিনা– এ সিদ্ধান্ত দিতে আদালত প্রথম তারিখ ধার্য করেছিলেন গত রোববার। সেদিন সিদ্ধান্ত না দিয়ে বৃহস্পতিবার পুনরায় তারিখ দেন। গতকাল ফের ৫ মে তারিখ ধার্য করেছেন। 

তথ্য বলছে, ২০২৩ সালের ১২ জুন নির্বাচনী ফলের গেজেট নির্বাচন কমিশন প্রকাশ করে একই বছরের ২০ জুন। গেজেট প্রকাশের ৬৬৬ দিন পর মামলা করেন ফয়জুল; তাপস করেছেন ৬৭১ দিন পর। এ ব্যাপারে বরিশালের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আজাদ রহমান বলেন, নির্বাচনী আইনে গেজেট প্রকাশের ৩০ দিনের মধ্যে মামলা করতে হয়।
এদিকে, মামলা দায়েরের পর থেকে প্রতিদিন নানা কর্মসূচি পালন করছে ইসলামী আন্দোলন। তারা আদালত ঘেরাওয়ের হুমকিও দিচ্ছেন। গতকালও কয়েক হাজার নেতাকর্মী পুলিশি বাধা উপেক্ষা করে আদালত চত্বরে ঢুকে স্লোগান দেন। 

জাপার প্রার্থী ইকবাল হোসেন তাপস বলেন, ২০১৮ সালে সাদিক আবদুল্লাহ মাস্তান দিয়ে, ২০২৩ সালে খায়ের আবদুল্লাহ প্রশাসন দিয়ে নগর ভবন দখল করেছেন। এতে উজ্জীবিত হয়ে বিক্ষোভের নামে চরমোনাই সমর্থকরাও বিচারকে ভয়ভীতি দেখিয়ে মেয়র হতে চান।  তবে ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী ফয়জুল বলেন, উৎসুক জনগণ এসব করছে। ন্যায়বিচারের দাবিতে জনগণ অনেক সময় আইন উপেক্ষা করে। তবে এটি ঠিক নয়। 

আরও পড়ুন

×