চট্টগ্রামে মাইনুলের বাড়ির আঙিনায় ‘মিনি সুন্দরবন’

গবেষক সৈয়দ মোহাম্মদ মাইনুল আনোয়ারের ‘মিনি সুন্দরবন। ছবি: মো. রাশেদ
বিশেষ প্রতিনিধি, চট্টগ্রাম
প্রকাশ: ০৩ মে ২০২৫ | ২৩:৩২
চট্টগ্রাম নগরীর আসকার দীঘির পাড় থেকে সার্সন রোডের দিকে ১০০ গজ এগোলেই জয়পাহাড় আবাসিক এলাকা। এই এলাকাতেই নিজ বাড়ির আঙিনার আনুমানিক ৫০০ বর্গফুট জায়গাজুড়ে সুন্দরবনের বিভিন্ন প্রজাতির গাছ নিয়ে গড়ে উঠেছে এক বন। গবেষক সৈয়দ মোহাম্মদ মাইনুল আনোয়ার এর নাম দিয়েছেন ‘মিনি সুন্দরবন’।
তাঁর এই বনে বেড়ে উঠছে সুন্দরী, গরান, গর্জন, হারগোজা, কালিলতা, গোলপাতাসহ নানা জাতের গাছ। সমুদ্র উপকূলবর্তী অঞ্চলের নোনাপানিতে জন্ম নেওয়া এসব গাছ সংরক্ষণে তিনি তৈরি করেছেন বিশেষ মাটি ও প্রাকৃতিক পরিবেশ। সেই পরিবেশে আসে জোয়ার ভাটাও। শনিবার সেই ‘মিনি সুন্দরবন’ দেখতে যান কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব এমদাদ উল্লাহ মিয়ান। পরিদর্শন শেষে তিনি গবেষক মাইনুল আনোয়ারের এই উদ্যোগ সারাদেশে ছড়িয়ে দেওয়ার ঘোষণা দেন।
মিনি সুন্দরবনের পাশেই আছে আলওয়ান মধু জাদুঘর ও গবেষণা কেন্দ্র। সেখানে দুইশরও বেশি ভেজাল মধুর ধরন শনাক্ত করা আছে। থরেবিথরে সাজানো পটে আছে বিভিন্ন জায়গা থেকে সংগৃহীত ৭০ রকমের মধু। কোন মধু কখন উৎপাদন করতে হয়, কোনটির গুণগত মান কখন ভালো হয়, মধু কীভাবে সংরক্ষণ করলে ভালো থাকে, ভেজাল করার সময় কোন মধুতে কী রকমের উপকরণ মেশানো হয়– এসবের উত্তর আছে গবেষক সৈয়দ মোহাম্মদ মাইনুল আনোয়ারের জাদুঘর ও গবেষণা কেন্দ্রে। কৃষি সচিব মধু জাদুঘরটিও ঘুরে দেখেন। এ সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন অতিরিক্ত সচিব ড. মোহাম্মদ মাহমুদুর রহমান, বাংলাদেশ সুগারক্রপ রিসার্চ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক কবির উদ্দিন আহমেদ, জাতীয় কৃষি প্রশিক্ষণ একাডেমির মহাপরিচালক সাইফুল আজম খান, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সাইফুল আলম, চট্টগ্রামের উপপরিচালক মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন, গবেষক মাইনুল আনোয়ারের ভাই এস এম রাশেদ আনোয়ার প্রমুখ।
কৃষি সচিব এমদাদ উল্লাহ মিয়ান বলেন, ‘মাইনুল আনোয়ার ব্যক্তি উদ্যোগে বাড়ির আঙিনায় যে ম্যানগ্রোভ বন ও মধুর জাদুঘর গড়ে তুলেছেন; তা অনেকের জন্য দৃষ্টান্ত হতে পারে। তাঁর এই উদ্যোগ সারাদেশে ছড়িয়ে দিতে পারলে উপকৃত হবে কৃষি ও পরিবেশ।’ অতিরিক্ত সচিব ড. মোহাম্মদ মাহমুদুর রহমান বলেন, ‘দেশে মধুর ভালো চাহিদা রয়েছে। ভেজালের ভিড়ে আসল মধু চেনা কঠিন। এই জাদুঘরে যেভাবে ভেজাল মধু শনাক্ত করা হচ্ছে তা ব্যতিক্রম।’ গবেষক সৈয়দ মোহাম্মদ মাইনুল আনোয়ার বলেন, ‘২০ বছর ধরে সাধনা করে শহরের বুকে এই মিনি সুন্দরবন গড়ে তুলেছি। জায়গার দিক থেকে এই বন ছোট হলেও সুন্দরবনের গাছ ও মধু নিয়ে আমি যে কাজ করেছি তা বাংলাদেশে অদ্বিতীয়। এই প্রচেষ্টা দেশজুড়ে ছড়িয়ে দিতে চাই।’