ঢাকা শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫

ভাগাড়ের গন্ধে টেকা দায়

ভাগাড়ের গন্ধে টেকা দায়

কালিয়াকৈরের আঞ্চলিক সড়কের পাশে ফেলা ময়লা। শনিবার সিপি গেট-জোড়া পাম্প সড়কে সমকাল

কালিয়াকৈর (গাজীপুর) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১৮ মে ২০২৫ | ২৩:৩৭

কালিয়াকৈরে একটি আঞ্চলিক সড়কের পাশে দীর্ঘদিন ধরে ময়লা ফেলছেন স্থানীয় লোকজন। জমে থাকা আবর্জনার স্তূপ থেকে ছড়ানো দুর্গন্ধে আশপাশের কয়েকটি কারখানার কর্মীরা অতিষ্ঠ। পথচারীদেরও চলাচল করতে হয় নাক চেপে। এলাকাবাসী জানিয়েছেন, ভাগাড়টি সেখান থেকে সরিয়ে নেওয়ার দাবিতে কয়েক দফা পৌরসভাকে তাগদা দেওয়া হলেও তারা কোনো উদ্যোগ নেয়নি। 
শনিবার সরেজমিন দেখা গেছে, চন্দ্রা ত্রিমোড়ের পূর্ব পাশে সিপি গেট থেকে একটি সরু সড়ক জোড়া পাম্প ফুটবল খেলার মাঠ পর্যন্ত গেছে। ওই সড়কের দু’পাশেই ময়লার বিশাল বিশাল স্তূপ। স্থানীয় বাসিন্দা নাজমা সারোয়ার এদিন দুই সন্তানকে নিয়ে স্কুলে যাচ্ছিলেন। নাকে কাপড় চেপে ওই জায়গাটি পার হচ্ছিলেন তারা। নাজমা বলেন, ‘প্রতিদিন এই সড়কের পাশে ময়লা ফেলছে পৌর কর্তৃপক্ষ। আশপাশে যারা আমরা বসবাস করি, তারা দুর্গন্ধের কারণে টিকতে পারছি না। আমাদের সন্তানরাও অসুস্থ হয়ে পড়ছে। এখন পাশের গজারি বাগানেও ময়লা ফেলছে। বাসাবাড়িতে ২৪ ঘণ্টাই দুর্গন্ধ থেকে। অনেকে এলাকা ছেড়ে চলে গেছেন।’
জোড়া পাম্প উত্তরপাড়ার মাহমুদুল আলম বলেন, ‘অনেকবার পৌর কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি, তারা কোনো উদ্যোগ নেয়নি।’
জায়গাটি পড়েছে পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডে। এলাকাবাসী জানাস, কয়েক বছর আগে স্থানীয় কাউন্সিলর মো. খাত্তাব মোল্লার উদ্যোগে ওই জায়গায় ময়লা রাখা শুরু হয়। আশপাশের আবর্জনা ভ্যানে এনে রাখা হতো। পৌরসভার ট্রাক প্রতিদিনই এসব সরিয়ে ফেলত। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর মেয়র ও কাউন্সিলরদের অপসারণ করা হয়। এর পর থেকেই ময়লা আর সরানো হচ্ছে না। 
দুই ঝুট ব্যবসায়ী বলেন, তাদের গুদামে ৫০-৬০ নারী-পুরুষ শ্রমিক কাজ করেন। ময়লার দুর্গন্ধের কারণে শ্রমিকরা কাজে আসতে চান না। 
একই এলাকায় মুরগি-মাছের খাবার তৈরির প্রতিষ্ঠান সিপির কারখানা। প্রতিষ্ঠানের জেনারেল ম্যানেজার মো. এনামুল করিম বলেন, দুর্গন্ধে কর্মীরা কাজ করতে পারছেন না। পৌরসভাকে ভাগাড়টি সরিয়ে নিতে লিখিত ও মৌখিকভাবে বলা হয়েছে। কিন্তু তারা সরানোর ব্যবস্থা করেনি। কিছুদিন আগে তাই জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত দিয়েছেন। 

এলাকাবাসীর মানববন্ধন
ভাগাড়টি সরিয়ে নেওয়ার দাবিতে গতকাল রোববার সকালে মানববন্ধন পালিত হয়। চন্দ্রার পলানপাড়া এলাকায় ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের উত্তর পাশের এই কর্মসূচিতে কয়েকশ লোক অংশ নেন।  
বক্তারা বলেন, দুর্গন্ধের কারণে এলাকাবাসী বাসায় পর্যন্ত টিকতে পারছেন না। আর বারবার দাবি জানানো হলেও পৌর কর্তৃপক্ষ বা জেলা প্রশাসন কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না। 
এ বিষয়ে  পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের প্রশাসকের দায়িত্বে থাকা উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান বলেন, পৌরসভার নিজস্ব ডাম্প স্টেশন না থাকায় এ সমস্যা হচ্ছে। ওই এলাকায় ময়লা ফেলতে নিষেধ করা হয়েছে। শিগগিরই সমস্যার সমাধানের আশা করছেন।
পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তা জাহিদ হাসানের ভাষ্য, পৌরসভার নিজস্ব ডাম্প স্টেশন নেই। ৯টি ওয়ার্ডের ময়লা এক জায়গায় রাখার পর ট্রাক দিয়ে সরিয়ে নেওয়া হয়। জেলা প্রশাসকের কাছে জমি বরাদ্দ চেয়েছেন, পেয়ে গেলে এই সমস্যা থাকবে না।
 

আরও পড়ুন

×