ফরিদপুরে বদ্ধঘরে মায়ের মরদেহ, মেয়েকে উদ্ধার করল পুলিশ

ছবি: সমকাল
ফরিদপুর অফিস
প্রকাশ: ১১ জুন ২০২৫ | ০৪:৪৯
ফরিদপুর শহরের একটি ভাড়া বাসা থেকে বদ্ধ অবস্থায় রিনা বেগম (৩০) নামে এক নারীর বিবস্ত্র মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ সময় তার ৫ বছর বয়সী মেয়েকে ওই বাসা থেকে উদ্ধার করা হয়।
মঙ্গলবার দুপুরে শহরের রঘুনন্দনপুর এলাকার হাবিব ভিলার তিনতলা ভবনের নিচতলা থেকে মরদেহটি উদ্ধার করে পুলিশ। রিনা বেগম জেলা সদরের অম্বিকাপুর ইউনিয়নের আজহার মন্ডলের ডাঙ্গী এলাকার মান্নান বেপারীর মেয়ে। তার ৫ বছরের মেয়ে ও ৮ বছরের ছেলে রয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, ওই বাসার বাথরুমের সামনে বিবস্ত্র অবস্থায় পড়ে ছিলেন রিনা বেগম। পাশের কক্ষে বিছানায় অচেতন হয়ে পড়েছিল তার কন্যাশিশু। সেখানে একাধিক ওষুধ ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে এবং তরকারি ও ভাত মাখা খাবারের প্লেটও পড়ে রয়েছে। ভেতর থেকে বাসাটির দরজায় ছিটকিনি দেওয়া ছিল। ঘরের ভেতর থেকে পানি বেয়ে বাইরে চলে এসেছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা বাসার জানালা দিয়ে বিষয়টি দেখে পুলিশকে খবর দেয়। পরে পুলিশের একাধিক টিম এসে দরজা ভেঙে রিনা বেগমকে উদ্ধার করে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠালে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। মেয়েশিশুটি সুস্থ রয়েছে।
বাড়ির মালিক হাবিবুর রহমান জানান, চলতি মাসে স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে বাসাটি ভাড়া নেন মনিরুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি। মাত্র এক সপ্তাহ আগে ওই নারী উঠেছিলেন। আজ সকালে ঘটনাটি শুনে মনিরুলকে ফোন দিয়ে ঘটনাটি জানালে তিনি আর আসেননি, পরবর্তী সময়ে তার নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, প্রায় ১৫ বছর আগে পাশের ঈশাণগোপালপুর ইউনিয়নের শহীদ মোল্যার সঙ্গে বিয়ে হয় রিনার। বিয়ের দুই বছর পর স্বামী শহীদ সৌদি আরবে পাড়ি জমান। এক পর্যায়ে রিনাকেও নিয়ে যান। কয়েক বছর আগে রিনা দেশে চলে আসেন। এর মধ্যে এক বছর আগে ঈশাণগোপালপুর ইউনিয়নের দয়ারামপুর গ্রামের মনিরুল ইসলামের (৪০) সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়ান রিনা। এ নিয়ে স্বামী শহীদের সঙ্গে তার মনোমালিন্য হয়। পরে শহরের একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারের কাজ শুরু করেন রিনা। তার সঙ্গে মেয়ে থাকতো আর ছেলে থাকতো নানা-নানির কাছে।
রিনার চাচা আব্দুস সালাম বেপারী বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, গত ৬ মাস আগে শহীদের সঙ্গে রিনার বিচ্ছেদ হয়। এরপর মনিরুলকে বিয়ে করে। আজ জানতে পেরেছি, রিনা মারা গেছে। তবে কী কারণে, কীভাবে মারা গেছে জানি না।
এ বিষয়ে কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসাদউজ্জামান বলেন, বাসার ভেতরে বিবস্ত্র অবস্থায় এক নারীর মরদেহ পড়ে রয়েছে এমন সংবাদের ভিত্তিতে ঘটনাস্থলে আমিসহ একাধিক টিম সেখানে যাই। জানালা দিয়ে দেখা যায় দরজায় ভেতর থেকে ছিটকিনি দেওয়া। পরে দরজা ভেঙে বাসায় প্রবেশ করে ওই নারীর মরদেহ উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়। এসময় তার কন্যাশিশুকে উদ্ধার করা হয়। শিশুটি সুস্থ রয়েছে।