ঢাকা রবিবার, ০৬ জুলাই ২০২৫

শিশু ধর্ষণের ঘটনা চর-থাপ্পড়ে মীমাংসা

শিশু ধর্ষণের ঘটনা চর-থাপ্পড়ে মীমাংসা

প্রতীকী ছবি

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১৭ জুন ২০২৫ | ২০:০৩

কুষ্টিয়া সদর উপজেলার এক গ্রামে বৃদ্ধের বিরুদ্ধে (৫৮) পাঁচ বছরের শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনার বিচারে সালিশ বৈঠক করেন গ্রামের মাতবরেরা। সালিশে ওই বৃদ্ধকে চড়-থাপ্পড় মেরে মীমাংসা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ভুক্তভোগীর পরিবার। 

তবে মাতবরেরা বলছেন, ধর্ষণের ঘটনায় আইনের আশ্রয় নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হলেও পরিবারটি তা করেনি।

ভুক্তভোগী শিশু বর্তমানে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। আজ মঙ্গলবার দুপুরে হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, সে বেডে খেলা করছে। তার পাশেই বসে আছেন মা-বাবা। তারা শিশুটির এ অবস্থায় ভেঙে পড়েছেন।

ভুক্তভোগীর মা জানান, গত ১১ জুন শিশুটিকে ধর্ষণ করে একই এলাকার বিশা মন্ডল নামের বৃদ্ধ। ঘটনার দিন সকালে ওই শিশুর নানিকে এগিয়ে দিতে বাড়ির বাইরে যান তার মা। এর কিছুক্ষণ পর শিশুটি বিশার বাড়ি থেকে খোঁড়াতে খোঁড়াতে আসতে দেখে সন্দেহ হয়। জিজ্ঞাসা করলে সে জানায়, বিশা তার সঙ্গে খারাপ কাজ করেছে। বিষয়টি গ্রামের মুরুব্বিদের জানালে তারা পরদিন রাতে বাড়িতে সালিশ বসান। সালিশে বিশাকে চর-থাপ্পড় দিয়ে মাতবররা বলেন, সালিশ শেষ। এর পরদিন শুক্রবার ভুক্তভোগী শিশু পেট ব্যথায় অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করেন স্বজনেরা।

শিশুটির মা বলেন, মেয়ের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে থানায় যাইনি। মেম্বার ও সমাজ প্রধান বলেছেন, আগে চিকিৎসা করিয়ে আনো, তারপর মামলা করতে পারবা। এখন থানায় মামলা করবো।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ধর্ষণের ঘটনা মীমাংসা করতে বসা সালিশে সমাজপ্রধান রহিম মন্ডল ও স্থানীয় ইউপি সদস্য মতিউর রহমান লিটন উপস্থিত ছিলেন। সালিশে অভিযুক্ত বৃদ্ধকে চর-থাপ্পড় মেরে মীমাংসা করা হয়ে। সেখানে এলাকার লোকজন ছিলেন।

সালিশে উপস্থিত মতিউর রহমান বলেন, ঘটনাটি জানার পর ভুক্তভোগী পরিবারকে মামলা করতে বলেছিলাম। কিন্তু তারা থানায় যায়নি। আর সালিশে চর-থাপ্পড় মেরে মীমাংসা করেছিল অভিযুক্ত বৃদ্ধর ভাই-ভাতিজারা। আমি শুধু উপস্থিত ছিলাম। এভাবে বিচার করা ঠিক হয়নি।

ধর্ষণের মতো ঘটনার বিচার সালিশ বৈঠকে করা যায় কি-না জানতে চাইলে রহিম মন্ডল বলেন, আমি ভুক্তভোগীর পরিবারকে মামলা করতে বলেছিলাম। কিন্তু তা করেনি।

কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার হোসেন ইমাম বলেন, শিশুটিকে ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে। তার চিকিৎসা চলছে। এখন ভালো আছে। তবে মানসিকভাবে একটু দুর্বল।

কুষ্টিয়ার ইবি থানার ওসি মেহেদী হাসান বলেন, মামলা করার জন্য শিশুটির পরিবারকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। অভিযুক্ত বৃদ্ধকে আটকে কাজ করছে পুলিশ। 

আরও পড়ুন

×