টানলেই উঠছে কার্পেটিং, কাজ বন্ধ করে দিলেন হাসনাত আব্দুল্লাহ

ছবি: সমকাল
দেবিদ্বার (কুমিল্লা) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৩ জুন ২০২৫ | ২১:২৭
কুমিল্লার দেবীদ্বারে এলজিইডির একটি সড়কের কার্পেটিংয়ের কাজ নিম্নমানের হওয়ায় বন্ধ করে দিয়েছেন এনসিপির মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আব্দুল্লাহ। সোমবার বিকেল ৫টায় হাসনাত আব্দুল্লাহ তার নিজ এলাকায় একটি অনুষ্ঠানে যাওয়ার পথে স্থানীয়দের অভিযোগ পেয়ে তিনি সড়কটি পরিদর্শনে গিয়ে কাজটি বন্ধ করে দেন।
জানা যায়, সড়কটি উপজেলা সদরের সুবিল, ফতেহাবাদ, রসুলপর ইউনিয়নের প্রায় ২০ গ্রামের মানুষের যোগাযোগের অন্যতম সড়ক। দীর্ঘদিন কাজটি সম্পন্ন না করায় জনদুর্ভোগ ছিল সীমাহীন।
স্থানীয়দের অভিযোগের ভিত্তিতে সরেজমিনে গিয়ে হাসনাত দেখেন- মাত্র তিন-চার দিন আগে করা কার্পেটিং টান দিলেই উঠে আসছে। কোথাও কোথাও বিটুমিন নেই, খোয়া নেই, লাল মাটির ওপরেই ঢালাই করা হয়েছে। পরে তিনি উপজেলা প্রকৌশলীকে ঘটনাস্থলে ডেকে এনে তাৎক্ষণিকভাবে কাজ বন্ধের জন্য বলেন।
জানা গেছে, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) আওতায় দুই কোটি টাকার বেশি ব্যয়ে সড়কটির নির্মাণকাজ পায় ‘মেসার্স আরতার অ্যান্ড ইয়েস্টেড ইন্টারন্যাশনাল’ লিমিটেড। চার বছর আগে মেকাডামের কাজ হলেও নির্মাণ সামগ্রীর মূল্যবৃদ্ধির অজুহাতে তখন কার্পেটিং স্থগিত রাখা হয়। সম্প্রতি নতুন করে কাজ শুরু হলে অনিয়মের অভিযোগ ওঠে।
এই প্রকল্পের ঠিকাদার সুবিল ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও সাবেক আওয়ামী লীগ নেতা মো. আবু তাহের। স্থানীয়দের অভিযোগ, তাদের রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে কেউ মুখ খুলতে সাহস পাননি।
আব্দুল্লাহপুরের বাসিন্দা আব্দুস সালাম ও অলিউল্লাহ খান বলেন, ‘আবু তাহের সাবেক এমপি রাজী মোহাম্মদ ফখরুলের ঘনিষ্ঠ এবং সাবেক পৌর মেয়র সাইফুল ইসলাম শামীমের মামা। তাই এলাকাবাসী দীর্ঘদিন নিস্নমানের কাজ মুখ বুজে সহ্য করেছে।’
তবে অভিযোগের বিষয়ে ঠিকাদার আবু তাহের বলেন, ‘আমি কাজ করছি, উপজেলা ইঞ্জিনিয়ার বুঝে নেবে। সমস্যা থাকলে ঠিক করে দেওয়া হবে।’
একপর্যায়ে তিনি স্বীকার করেন কাজ নিম্নমানের হয়েছে এবং দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, ‘সরি, আমি ঠিক করে দেব।’
হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, ‘সরকার যে টাকা দেয়, তা জনগণের রক্ত-ঘামের টাকা। এসব টাকায় তৈরি রাস্তা জনসাধারণের জন্য, কারও পকেট ভারী করার জন্য নয়। এভাবে কাজ হলে জনসাধারণ চলাচলে কষ্ট পাবে। জনগণের স্বার্থে অনিয়মের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিতে হবে।’
দেবিদ্বার উপজেলা প্রকৌশলী সবুজ চন্দ্র সরকার বলেন, ‘সড়কটি আমি নিজে পরিদর্শন করেছি। সত্যিই নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হয়েছে। ঠিকাদারের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
- বিষয় :
- হাসনাত আব্দুল্লাহ