ঢাকা শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সহিংসতা, সরিয়ে আনা হচ্ছে এনজিও কর্মীদের

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সহিংসতা, সরিয়ে আনা হচ্ছে এনজিও কর্মীদের

ফাইল ছবি

কক্সবাজার অফিস

প্রকাশ: ০৭ অক্টোবর ২০২০ | ০৯:৪৮

অব্যাহত সহিংসতার কারণে কক্সবাজারের কুতুপালংসহ বিভিন্ন রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে এনজিও কর্মীদের সরিয়ে আনা হচ্ছে। ক্যাম্পে কর্মরত জাতিসংঘের উদ্বাস্তুবিষয়ক সংস্থাসহ এনজিও কর্মীদের নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে  বুধবার দুপুরে ক্যাম্প ত্যাগ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। নির্দেশনা পাওয়ার পর এনজিও কর্মীরা ক্যাম্প ছাড়তে শুরু করেছেন। তারা যাতে নিরাপদে ফিরতে পারেন, সেজন্য প্রয়োজনীয় অনেক গাড়ির ব্যবস্থাও করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, সন্ত্রাসী দুই গ্রুপের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে গত তিন দিনের সংঘর্ষে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সাত ব্যক্তি নিহত হয়। এ নিয়ে ক্যাম্পগুলোতে উত্তপ্ত অবস্থা বিরাজ করছে।

জাতিসংঘের উদ্বাস্তুবিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআরের কর্মকর্তা আরীজ রহমান জানিয়েছেন, এ পরিস্থিতিতে সংস্থার সব কর্মীকে বুধবার দুপুরে ক্যাম্প ত্যাগ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত ইউএনএইচসিআর কর্মীদের ক্যাম্পে যেতে মানা করা হয়েছে।

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কর্মরত আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সমন্বয় গ্রুপ আইএসসিজির কর্মকর্তা সৈকত বিশ্বাস জানান যে, সব বিদেশি সংস্থার কর্মীদের নিরাপত্তা বিষয়ে বিশেষ সতর্কবার্তার পাশাপাশি ক্যাম্প থেকে চলে আসার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

গত মঙ্গলবার রাতে কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পে দুই সন্ত্রাসী গ্রুপের সংঘর্ষে চারজন নিহত হয়। এর আগে রোববার ও সোমবার সংঘর্ষে নিহত হয় আরও তিনজন।

কক্সবাজারে অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মো. সামছুদ্দৌজা জানিয়েছেন, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে কুতুপালং ক্যাম্পে দুই গ্রুপের মধ্যে গত কয়েকদিন ধরে সংঘর্ষ চলছে। সেনাবাহিনী, র‌্যাব, পুলিশ, এপিবিএন সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছেন। তিনি বলেন, ক্যাম্পের পরিস্থিতি এখনও উত্তপ্ত। সহিংসতা দমনে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার উপস্থিতি বাড়ানো হয়েছে।

কুতুপালংয়ের নিবন্ধিত রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সন্ত্রাসী মাস্টার মুন্না গ্রুপের সঙ্গে অনিবন্ধিত ক্যাম্পের আনাস-সেলিম গ্রুপের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। এই সংঘর্ষ ঘটছে তারই জের হিসেবে।

কয়েক দিনের গোলাগুলি ও খুনের ঘটনায় আতঙ্কে কয়েকশ রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ ও শিশু কুতুপালং ক্যাম্প ছেড়ে অন্য ক্যাম্পে আশ্রয় নিয়েছে। বর্তমানে ক্যাম্পের ভেতর দোকানপাট বন্ধ রয়েছে।

র‌্যাব-১৫ কক্সবাজার ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার মেজর মেহেদী হাসান জানান, কিছু রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী কুতুপালং শিবির এলাকায় সংঘাত-সংঘর্ষে লিপ্ত। তাদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। মঙ্গলবার সকালে অভিযান চালিয়ে র‌্যাব ৯ জনকে আটক করেছে। তাদের কাছ থেকে দেশে তৈরি চারটি অস্ত্র, ২০ রাউন্ড কার্তুজ ও কিরিচ উদ্ধার করা হয়েছে।

তিনি বলেন, ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা বলে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অপরাধীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালানো আইন প্রয়োগকারী সংস্থার পক্ষে কঠিন হয়ে পড়ে। রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা নানা অপকর্ম করে এখানে সহজে আত্মগোপন করতে পারে। সাধারণ রোহিঙ্গাদের এ বিষয়ে সচেতন করতে হবে।

উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সঞ্জুর মোর্শেদ সমকালকে জানান, বুধবারও সারাদিন রোহিঙ্গাদের সন্ত্রাসী দুই গ্রুপের মধ্যে থেমে থেমে সংঘাত হয়েছে। এ ঘটনায়  এদিন ১২ জন রোহিঙ্গাকে আটক করা হয়েছে।

আরও পড়ুন

×