রেকর্ড গড়তে ১০০ বিঘায় ধানের চারায় বঙ্গবন্ধুকে আঁকা শুরু

বগুড়ায় ১০০ বিঘা জমিতে ধানের চারা রোপণের মধ্যমে ফসলের মাঠে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সর্ববৃহৎ চিত্রকর্ম তৈরির পরিকল্পনা করা হয়েছে। যার নাম দেওয়া হয়েছে ‘শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধু’। ব্যতিক্রমী এই চিত্রকর্মটি ফুটিয়ে তুলতে শুক্রবার দুপুরে জেলার শেরপুর উপজেলার ভবানীপুর ইউনিয়নের বালেন্দা গ্রামে নির্ধারিত জমিতে ধানের চারা রোপণ করেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক এবং দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কৃষিবিদ বাহাউদ্দিন নাসিম।

চারা রোপনের আগে দেওয়া বক্তৃতায় আওয়ামী লীগ নেতা ও শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধু জাতীয় পরিষদের আহ্বায়ক বাহাউদ্দিন নাসিম জানান, ১০০ বিঘা বা ১২ লাখ ৯২ হাজার বর্গফুট জায়গা জুড়ে বঙ্গবন্ধুর এই চিত্রকর্মটি হবে বিশ্বের সর্ববৃহৎ শস্যচিত্র। যা সম্পন্ন হলে গিনেজ ওয়ার্ড রেকডর্স-এ জায়গা করে নিবে। এর আগে ২০১৯ সালে চীনের ফসলের মাঠে তৈরি করা সর্ববৃহৎ চিত্রকর্মের আয়তন ছিল ৮ লাখ ৫৫ হাজার ৭৮৬ বর্গফুট।

চারা রোপণ পূর্ব বক্তৃতায় আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক প্রকল্পটির উদ্দেশ্য বাখ্যা করতে গিয়ে বলেন, বঙ্গবন্ধুর জন্মশত বার্ষিকী উপলক্ষ্যে দেশজুড়ে জাকজমকপূর্ণ নানা আয়োজনের পরিকল্পনা করা হয়েছিল। কিন্তু করোনা দুর্যোগের কারণে যথাযোগ্য মর্যাদায় সেটি করা সম্ভব হয়নি। তাই কৃষি প্রধান সবুজ বাংলায় বিশাল ক্যানভাসকে ব্যবহার করে প্রথমবারের মতো আমরা বঙ্গবন্ধুর চিত্রকর্ম আঁকার পরিকল্পনা করেছি। এটি হবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর জন্মশত বার্ষিকীর এক অনন্য উদযাপন। 

চারা রোপণ পূর্ব আয়োজনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, কৃষক লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ও শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধু জাতীয় পরিষদের উপদেষ্টা কৃষিবিদ সমীর চন্দ, বগুড়া-৫ আসনের সংসদ সদস্য হাবিবর রহমান, সিরাজগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য তানভির শাকিল জয়, বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মজিবর রহমান মজনু এবং সাধারণ সম্পাদক রাগেবুল আহসান রিপু।

প্রকল্পটির প্রধান সমন্বয়ক ফয়জুল সিদ্দিকী জানান, কৃষিজ এই আয়োজনের মধ্য দিয়ে কৃষকদের অনুপ্রেরণা যোগানোর পাশাপাশি সারা বিশ্বের দৃষ্টি আকর্ষণের মধ্য দিয়ে গিনেজ ওয়ার্ল্ড রেকর্ড অর্জনের লক্ষ্য নিয়ই ব্যতিক্রমী এই উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।

তিনি জানান, প্রায় ৬ মাস আগে থেকে তারা কাজ শুরু করেছেন। প্রথমে জমি বাছাইয়ের পর তা লিজ গ্রহণ করা হয়। এরপর চিত্রকর্মটি ফুটিয়ে তুলতে মাঠের কোন স্থানে কোন রঙের ধানের চারা রোপণ করতে হবে সেটা নির্ধারণের জন্য ড্রোন প্রযুক্তির সহায়তা নেওয়া হয়। বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্যাডেট কোরের (বিএনসিসি) ১০০ সদস্যের সযোগিতা নিয়ে লে-আউট তৈরি করা হয়। তারপর চারা রোপনের জন্য নির্ধারিত মাঠকে ধানের চাষ উপযোগী করা হয়। এরপর বিদেশ থেকে বেগুনি রঙের ধান বীজ এনে বীজতলা  তৈরি করা হয়।

ফয়জুল সিদ্দিকী আরও জানান, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ন্যাশনাল এগ্রিকেয়ারের পৃষ্ঠপোষকতায় প্রকল্পটি বাস্তবায়নের পরবর্তী ধাপে তারা এক সপ্তাহ পর থেকে ড্রোনের মাধ্যমে উপর থেকে স্থির চিত্র এবং ভিডিও ধারণ করবেন। তিনি বলেন, ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে ‘শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধু’ এর ভিডিওসহ প্রয়োজনীয় দলিল গিনেজ কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আশা করা হচ্ছে- ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিনে আমরা নতুন বিশ্বরেকর্ড অর্জন উদযাপন করতে পারবো।’