ঢাকা বুধবার, ০২ জুলাই ২০২৫

বিএইচআরসির প্রতারণার জাল

বিএইচআরসির প্রতারণার জাল

.

জাতীয় মানবাধিকার কমিশন

প্রকাশ: ০২ এপ্রিল ২০২৪ | ০৫:১০ | আপডেট: ০২ এপ্রিল ২০২৪ | ১৫:৪৩

সমকালে ১২ মার্চ ‘বিএইচআরসি প্রতারণামূলক কাজে জড়িত নয়’ শীর্ষক প্রতিবেদনটি আমাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। বস্তুত নিবন্ধন বাতিলকৃত বেসরকারি সংস্থা কথিত ‘বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন’ তথা বিএইচআরসি নানা প্রতারণামূলক কাজে জড়িত। প্রশাসনিক সকল স্তরে (বিভাগ, জেলা, উপজেলা, পৌরসভা, ইউনিয়ন, ওয়ার্ড, গ্রাম, পাড়া/মহল্লা) কমিটি গঠন ও সংগঠনের সদস্যপদ দেওয়ার নামে বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের চাঁদা গ্রহণ ও অন্যান্য অভিযোগ বিষয়ে সিটিএসবি, পল্টন জোন- ১ এর অভিযোগ। বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন কর্তৃক ডুমুরিয়ার ফারাহ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নিয়োগ কার্যক্রমে অনিয়মের বিরুদ্ধে ভুয়া তদন্ত করা ও বিচার করার নামে প্রতারণাসংক্রান্ত। জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশন কর্তৃক নিবন্ধিত মর্মে ভুয়া তথ্য দিয়ে বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের সদস্য সংগ্রহের মাধ্যমে অবৈধভাবে অর্থ আদায়ের অভিযোগ। এ সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা সাইফুল ইসলাম দিলদারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন প্রতারণা, ভুয়া সাংবাদিক পরিচয় দেওয়া, এলাকায় অত্যাচারীর ভূমিকা পালনের অভিযোগে বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন কর্তৃক তাঁর সদস্যপদ বাতিল করা সংক্রান্ত অভিযোগ রয়েছে।

তাঁর বিরুদ্ধে আইআরডির অধীনে বিশাল হলো ব্রিকস নামক শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে তুলে কোটিপতি হওয়া, সন্ত্রাসী বাহিনী লালন ও অনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা এবং এর নামে সোনালী ব্যাংক থেকে বন্ধকি সম্পত্তির তথ্য গোপন করে ২ কোটি ৩২ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে। আরও অভিযোগ আছে, দাতব্য কাজে বিতরণের জন্য বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনকে দেওয়া গুঁড়া দুধের চালান বাজারে বিক্রি করে অর্থ আত্মসাৎ ও এরশাদ সরকারের আমলে খয়রাতি ত্রাণসামগ্রী বিক্রি করে অর্থ আত্মসাৎ ও প্রতারণাসংক্রান্ত; মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটি কর্তৃক আইআরডি ও কথিত বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের জনৈক সাইফুল ইসলাম দিলদারের প্রতারণা ও বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের নাম ব্যবহার করে দুর্নীতি, অনিয়ম ও অনৈতিক কর্মকাণ্ড ইত্যাদির প্রমাণাদি পাওয়ায় ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন সংক্রান্ত ।

জাতীয় মানবাধিকার কমিশন থেকে কথিত “বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন”-এর নিবন্ধনকারী সংস্থা এনজিও বিষয়ক ব্যুরো, যৌথ মূলধনি কোম্পানি ও ফার্মসমূহের পরিদপ্তর ও সমাজসেবা অধিদপ্তরকে এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের পরামর্শ প্রদান করা হলে ২০২০ সালের ২ জুলাই এনজিওবিষয়ক ব্যুরো, ওই বছরের ৮ জুন যৌথ মূলধনি কোম্পানি ও ফার্মসমূহের পরিদপ্তর কথিত বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের নিবন্ধন বাতিল করে। ওই একই বছরের ৫ নভেম্বর সমাজসেবা অধিদপ্তর বেসরকারি সংস্থার নামের শেষে কমিশন/কাউন্সিল ইত্যাদি শব্দ থাকলে তা বাদ দেওয়ার নির্দেশনা প্রদান করে। এনজিওবিষয়ক ব্যুরোর নিবন্ধন বাতিলসংক্রান্ত সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে হাইকোর্ট বিভাগে রিট পিটিশন নং ৬৮২০/২০২২ ও যৌথ মূলধনি কোম্পানি ও ফার্মসমূহের পরিদপ্তরের নিবন্ধন বাতিলসংক্রান্ত সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে হাইকোর্ট বিভাগে রিট পিটিশন নং ৪৬৬০/২০২০ ও সমাজসেবা অধিদপ্তর কর্তৃক নিবন্ধন বাতিলের নোটিশের বিরুদ্ধে রিট পিটিশন নং ২৩৭৬/২০১৪ দায়ের করা হয়। কোনো রিটেই আদালত থেকে কোনো স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়নি বলে জানা যায়।
এখানে কথিত বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের প্রস্তাবক প্রতিষ্ঠান হিসেবে নিজেদের দাবি করার বিষয়টি হাস্যকর। 

আরও পড়ুন

×