ঢাকা শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫

মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের প্রয়াত তিন ট্রাস্টি স্মরণে বিশেষ উদ্যোগ

মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের প্রয়াত তিন ট্রাস্টি স্মরণে বিশেষ উদ্যোগ

সমকাল প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৭ নভেম্বর ২০২২ | ০৯:০৮ | আপডেট: ০৭ নভেম্বর ২০২২ | ১০:৪৫

মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের প্রতিষ্ঠাতা ট্রাস্টিদের মধ্যে অন্যতম কবি ও স্থপতি রবিউল হুসাইন, বীর মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউদ্দিন তারিক আলী এবং কণ্ঠযোদ্ধা, নাট্যজন ও বরেণ্য সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব আলী যাকের। যারা গত তিন বছরে গেছেন না ফেরার দেশে। তারা ছিলেন বহুমাত্রিক প্রতিভার অধিকারী। আটজন ট্রাস্টির ব্যক্তিগত উদ্যোগে সর্বজনের সহায়তায় ১৯৯৬ সালে দেশে গড়ে উঠেছিল এই জাদুঘর। এটি ছিল মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি সংরক্ষণে দেশের প্রথম জাদুঘর।

প্রয়াত তিন ট্রাস্টিদের স্মরণে এবার তিনটি বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করেছে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর। এ লক্ষ্যে আগামীকাল মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে চারটায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বাংলাদেশ স্থপতি ইনস্টিটিউটের ৫০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অংশ হিসেবে ‌'প্রথম রবিউল হুসাইন স্মারক বক্তৃতা' অনুষ্ঠিত হবে। স্মারক বক্তা হিসেবে উপস্থিত থাকবেন মার্কিন জাদুঘর বিশারদ বারবারা এফ চার্লস। স্থপতি ইনস্টিটিউটের সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর যৌথভাবে প্রতিবছর আয়োজন করবে স্মারক বক্তৃতা।

জিয়াউদ্দিন তারিক আলী স্মরণে প্রবর্তন করা হয়েছে গণহত্যা অধ্যয়ন ফেলোশিপ। মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর এবং ইন্টারন্যাশনাল কোয়ালিশন অব সাইটস অব কনসায়েন্স যৌথভাবে গণহত্যা, ন্যায়বিচার ও স্মৃতিসংরক্ষণ অধ্যয়নবিষয়ক এই ফেলোশিপ কর্মসূচি চালু করছে। যেখানে তরুণ গবেষকরা বাংলাদেশ ও কম্বোডিয়ার গণহত্যার তুলনামূলক অধ্যয়নে নিয়োজিত হবে। তিন মাসব্যাপী এই ফেলোশিপ প্রোগ্রামে কম্বোডিয়ার আয়োজক সংস্থা হিসেবে থাকছে 'ইয়ূথ ফর পিস'। এই ফেলোশিপের আওতায় ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে দু’জন তরুণ গবেষক মাঠ পর্যায়ের গবেষণার জন্য ৪৫ দিন কম্বোডিয়ায় অবস্থান করবেন। বাংলাদেশে ফিরে ফেলোশিপের প্রতিপাদ্য নিয়ে গবেষণাপত্র মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে উপস্থাপন করবে। আগামী ১৫ নভেম্বর থেকে ফেলোশিপের কার্যক্রম শুরু হবে।

এছাড়া আলী যাকের স্মরণে ‘মুক্তিযুদ্ধের গ্রন্থপাঠ উদ্যোগ’ গ্রহণ করা হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের আহ্বানে সাড়া দিয়ে এই উদ্যোগে যুক্ত হয়েছে ঢাকা মহানগরীর দশটি বেসরকারি পাঠাগার। এই প্রতিষ্ঠানগুলো মিলে রাজধানী ঢাকার দনিয়া পাঠাগারের মোহাম্মদ শাহনেওয়াজকে দলপ্রধান করে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের তত্ত্বাবধানে ‘আলী যাকের মুক্তিযুদ্ধের গ্রন্থপাঠ উদ্যোগ’ পরিচালিত হবে। এই উদ্যোগে সহায়তা করছে মঙ্গলদীপ ফাউন্ডেশন। ঢাকা মহানগর ও সংশ্লিষ্ট কয়েকটি জেলার ৫০টি বেসরকারি পাঠাগারকে সম্পৃক্ত করে পরিচালিত হবে এই উদ্যোগ। তিন মাসব্যাপী বইপাঠ কর্মসূচির সূচনা হবে চলতি মাসে। প্রতিটি গ্রন্থাগারে নির্বাচিত তিনটি বইয়ের পাঁচটি করে সেট দেওয়া হবে।

নির্বাচিত গ্রন্থগুলো হলো- স্কুল পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের জন্য মুহাম্মদ জাফর ইকবাল রচিত ‘আমার বন্ধু রাশেদ’, কলেজ পর্যায়ে আলী যাকেরের আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ ‘সেই অরুণোদয় থেকে’ এবং বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হক রচিত ‘একাত্তর: করতলে ছিন্নমাথা’। বিভিন্ন পাঠাগার তাদের পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের বই প্রদান এবং পাঠ শেষে তা ফেরত নেওয়ার ব্যবস্থা করবে। বই পাঠ শেষে প্রত্যেকে উক্ত বই সম্পর্কে স্বীয় মূল্যায়ন লিখে জমা দেবে। স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর মধ্যে প্রতি বিভাগে সেরা দশ পাঠক নির্বাচনের জন্য জাতীয়ভাবে গঠিত বিচারকমণ্ডলী পাঠপ্রতিক্রিয়ার মধ্য থেকে প্রতি বিভাগে সেরা দশ রচনা নির্বাচিত করবে। অংশগ্রহণকারী প্রত্যেক পাঠককে সনদ প্রদান করা হবে।

আরও পড়ুন

×