মেট্রোরেলে মোবাইল সেবা অনিশ্চিত

ফাইল ছবি
সমকাল প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৬ ডিসেম্বর ২০২২ | ১২:০০ | আপডেট: ২৭ ডিসেম্বর ২০২২ | ০৫:৫৯
আগামীকাল যাত্রা শুরু হচ্ছে দেশের প্রথম মেট্রোরেলের। সম্ভাবনার এই গণপরিবহনে নিরবচ্ছিন্ন মোবাইল ফোন সেবা থেকে বঞ্চিত হতে পারেন গ্রাহকরা। কারণ, প্রায় ১০ মাস ধরে চেষ্টার পরও মেট্রোরেলে স্থায়ী নেটওয়ার্ক স্থাপনের অনুমতি পায়নি মোবাইল অপারেটররা। ফলে উত্তরা দিয়াবাড়ী থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত চালু হতে যাওয়া মেট্রোরেলের যাত্রাপথে গ্রাহকের মানসম্মত মোবাইল সেবা প্রাপ্তির বিষয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
মোবাইল অপারেটররা বলছে, মেট্রোরেলের রুটে স্বাভাবিক মোবাইল নেটওয়ার্কে নিরবচ্ছিন্ন মানসম্মত সেবা দেওয়া কঠিন। এ জন্য বিশেষ পরিকল্পনা প্রয়োজন, যা স্থাপনে এখন পর্যন্ত অনুমোদন পায়নি অপারেটররা। সরকারি বিভিন্ন সংস্থাকে গত ১০ মাস ধরে নানাভাবে বলা হলেও মেট্রোরেলে নেটওয়ার্ক নিশ্চিত করার জন্য স্থায়ী কোনো সমাধান এখনও মেলেনি। এ অবস্থায় মেট্রোরেলের যাত্রীরা স্বাভাবিকভাবে কাঙ্ক্ষিত নেটওয়ার্ক পাবেন না। উদ্বোধনের দিন বড় জমায়েত হলেও মোবাইল সেবার মান নিয়ে শঙ্কায় রয়েছে অপারেটররা। কারণ, এ সময়ে অস্থায়ী নেটওয়ার্ক স্থাপন করলেও তা কাঙ্ক্ষিত সেবা নাও দিতে পারে। কেননা স্থান ভেদে মোবাইল নেটওয়ার্ক স্থাপনে কিছু প্রযুক্তিগত সীমাবদ্ধতা রয়েছে।
মোবাইল অপারেটররা বলছে, যে কোনো বড় স্থাপনা উদ্বোধন হলে সেখানে অনেক মানুষের আগ্রহ থাকে। সবাই চায় ইন্টারনেটের মাধ্যমে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এসব উন্নয়নের প্রচার করতে। সেখানে অস্থায়ী নেটওয়ার্ক খুব বেশি কাজ করে না। এ বিষয়গুলো সবার জানা থাকলেও কর্তৃপক্ষের সমন্বয়ের অভাবে নেটওয়ার্ক নিয়ে সমস্যা তৈরি হয়। পরে কেউ দায়িত্ব নিতে চায় না। দায় পড়ে অপারেটরদের ওপর। অপারেটরদের দাবি, এর আগে একই কারণে পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের দিন সমাবেশস্থলে নেটওয়ার্ক নিয়ে বিপাকে পড়ে মোবাইল কোম্পানিগুলো। আগে স্থায়ী কোনো সমাধান না দিয়ে শেষ মুহূর্তে অস্থায়ী নেটওয়ার্ক স্থাপনের অনুমোদন পায় অপারেটররা। তড়িঘড়ি করে সেতুর দুই প্রান্তে বিটিআরসির তত্ত্বাবধানে নেটওয়ার্ক স্থাপন করলেও তাতে সমস্যা দেখা দেয়।
অপারেটররা জানায়, পদ্মা সেতুর ঘটনা মাথায় রেখে মেট্রোরেলের বিষয়ে গত ২৭ সেপ্টেম্বর ঢাকা মাস ট্রানজিট কোম্পানিকে (ডিএমটিসিএল) মোবাইল অপারেটরদের সংগঠন অ্যামটব একটি চিঠি পাঠায়। তাতে বলা হয়, 'মেট্রোরেলের স্টেশনগুলোতে প্রতিদিন বিপুল লোক সমাগম হবে, যেখানে ব্যাপক সংখ্যক মোবাইল সংযোগের ব্যবহার হবে। ফলে বাড়তি ডেটা ও ভয়েসের চাহিদা সামাল দিতে সব অপারেটর একসঙ্গে স্টেশন ভবনের ভেতরে যৌথ নেটওয়ার্ক ব্যবস্থা স্থাপন করতে চায়, যা টিকিট কাউন্টার, প্ল্যাটফর্ম, লাউঞ্জ, খাবারের স্টলসহ ট্রেনযাত্রীদের স্বাভাবিক নেটওয়ার্ক নিশ্চিত করবে। চিঠিতে আরও বলা হয়, এই নেটওয়ার্ক স্থাপন নিয়ে অপারেটরগুলো এমআরটি লাইন-৬ (দিয়াবাড়ী থেকে আগারগাঁও) এর ৯টি স্টেশনে টেকনিক্যাল জরিপ ও সম্ভাব্যতা যাচাই করেছে, যা তারা মেট্রো কর্তৃপক্ষকে দিয়েছে।' মোবাইল অপারেটরদের নেটওয়ার্ক স্থাপনে সহযোগিতা করতে অনুরোধ জানিয়ে মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষকে গত ১৬ নভেম্বর চিঠি দিয়েছে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনও (বিটিআরসি)। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো সমাধান আসেনি।
অ্যামটব মহাসচিব ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এস এম ফরহাদ বলেন, মেট্রোরেলে মোবাইল নেটওয়ার্ক নিশ্চিত করতে অপারেটররা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কারিগরি বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। আমরা আশা করব, সরকার, নিয়ন্ত্রক সংস্থা এবং মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ বিষয়টির গুরুত্ব বিবেচনায় নিয়ে সমাধানে দ্রুত পদক্ষেপ নেবে।
- বিষয় :
- মেট্রোরেল
- মোবাইল সেবা
- মোবাইল অপারেটর