ঔষধ প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণের বাইরে লাখের বেশি অবৈধ ফার্মেসি

সমকাল প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬ জানুয়ারি ২০২৩ | ০৯:০৪ | আপডেট: ০৬ জানুয়ারি ২০২৩ | ১৩:১৪
ব্যবস্থাপত্র ছাড়া ওষুধ বিক্রি বন্ধ এবং ওষুধের যৌক্তিক ব্যবহার নিশ্চিতে সারা দেশের ওষুধের দোকানগুলো আধুনিক করার উদ্যোগ নিয়েছে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর। একইসঙ্গে অনিবন্ধিত ১ লাখের বেশি ফার্মেসির বন্ধে ঔষধ আইন বাস্তবায়ন হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল ইউসুফ আলী।
আজ শুক্রবার ঢাকার সাভারের হেমায়েতপুরে লাজ ফার্মার সুবর্ণজয়ন্তী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
অ্যান্টিবায়োটিকের যথেচ্ছ ব্যবহারের পেছনে যত্রতত্র ফার্মেসি গড়ে ওঠাই অন্যতম কারণ উল্লেখ করে মেজর জেনারেল মোহাম্মদ ইউসুফ বলেন, বাংলাদেশে যত ফার্মেসি রয়েছে, পৃথিবীর আর কোনো দেশে নেই। এক সময় কয়েক কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে ওষুধ আনতে হতো, এখন হাত বাড়ালেই ফার্মেসি।
তিনি জানান, দেশে নিবন্ধিত ফার্মেসি দেড় লাখের মতো। এখনও নিবন্ধনের বাইরে লাখের বেশি ফার্মেসি। এগুলো বন্ধে কাজ চলছে। আইন পাস হলেই অভিযান শুরু হবে।
মাথাব্যথাসহ কিছু হলে সঙ্গে সঙ্গে অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক। তিনি বলেন, মানুষ ইচ্ছেমতো অ্যান্টিবায়োটিক নিতে পারছে। এক্ষেত্রে ফার্মেসিগুলো কোনো নিয়ম মানছে না। এসব কারণে অ্যান্টিবায়োটিকের কার্যকারিতা হারাচ্ছে। এমনকি আইসিইউতে যে অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হয়, সেটিও কাজে আসছে না।
ব্যবস্থাপত্র ছাড়া ওষুধ না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে জানিয়ে মোহাম্মদ ইউসুফ বলেন, আইন মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যেই এ ব্যাপারে সম্মতি দিয়েছে। আগামী সংসদ অধিবেশনে পাস হবে আশা করি। একইসঙ্গে অবৈধ ফার্মাসিগুলো বন্ধ করে দেওয়া হবে। উন্নত দেশে ফার্মেসি একই রকম হলেও আমাদের এখানে ফার্মেসির পাশাপাশি অন্যান্য পণ্যও চলে। তাই লাজ ফার্মার মতো মডেল ফার্মেসি ও মান নিয়ন্ত্রণ করতে পারে এমন ফার্মেসি ছাড়া সবগুলো বন্ধ করে দেওয়া হবে। ইতোমধ্যে সেই প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। আমাদের এত ফার্মেসি থাকার দরকার নেই।
ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আরও বলেন, ইন্দোনেশিয়ার মতো দেশে ২ কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে ওষুধ আনতে হয়। আমাদের এখানে হাতের কাছেই ওষুধ মেলে। এর আগে আইনের দুর্বলতার কারণে ব্যবস্থা নিতে পারিনি। নতুন আইন হলে ব্যবস্থা নেওয়া সহজ হবে।
এ সময় লাজ ফার্মার প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. লুৎফর রহমান বলেন, লাজফার্মা লিমিটেড একটি প্রতিষ্ঠিত এবং সর্বাধিক বিশ্বস্ত খুচরা ওষুধ বিক্রয়কারী প্রতিষ্ঠান, যারা মানসম্মত ঔষধ বিক্রি করে। আমাদের মূল লক্ষ্য সেবা, ব্যবসা নয়। আমরাই দেশের প্রথম সার্টিফায়েড মডেল ফার্মেসি যারা নির্ধারিত তাপমাত্রায় ওষুধ সংরক্ষণ করে।
লাজ ফার্মার চেয়ারম্যান সৈয়দা মাহফুজা বলেন, আমরা সর্বোচ্চ সেবা দেওয়ার চেষ্টা করছি। লাজ ফার্মার কর্মীদের মনে রাখতে হবে কোনো ধরনের অনৈতিক পন্থা অবলম্বন করা যাবে। প্রতিষ্ঠানের সুনাম ধরে রাখতে হবে।
অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন একুশে পদক প্রাপ্ত আন্তর্জাতিক যাদুশিল্পী জুয়েল আইচ, সাংবাদিক ও কলামিষ্ট আবেদ খান, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরষ্কার প্রাপ্ত গীতিকার রফিকউজ্জামান, ইব্রাহিম কার্ডিয়াক ও রিসার্চ ইনস্টিটিউটের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা প্রফেসর ডা. এমএ রশিদ প্রমুখ।