সভাপতির পদত্যাগের দাবিতে বোরহানুদ্দীন কলেজে আন্দোলন

সমকাল প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২০ অক্টোবর ২০১৯ | ০২:৪৯ | আপডেট: ২০ অক্টোবর ২০১৯ | ০৭:৪৬
গভর্নিং বডির সভাপতি অধ্যাপক হারুনর রশিদের অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার প্রতিবাদে শেখ বোরহানুদ্দীন পোস্ট গ্রাজুয়েট কলেজের শিক্ষকরা আন্দোলনে নেমেছেন।
রোববার সকাল ১০টার পর থেকে তারা অবস্থান নিয়েছেন, নিচ্ছেন না ক্লাস।
এর আগে, শনিবার রাতে সভাপতিকে ঘেরাও করেন শিক্ষকরা। গভর্নিং বডির বৈঠক চলাকালে শিক্ষকরা ঘেরাও করলে বৈঠক পণ্ড হয়ে যায়। পরে রোববার সকাল ১০টায় বৈঠক শুরুর কথা ছিল। কিন্তু শিক্ষক আন্দোলনের মুখে এখন পর্যন্ত বৈঠক শুরু করা যায়নি।
কলেজের শিক্ষকরা জানান, সভাপতি যোগদানের পর থেকে নানা কায়দায় ও ফন্দি করে টাকা লুটপাট করছিলেন। প্রায় ১৭ কোটি টাকায় কেরানীগঞ্জে জমি কেনেন। এ ব্যাপারে শিক্ষকদের মতামত উপেক্ষা করা হয়েছে। জমি কেনায় জাল দলিলের অভিযোগ আছে। কোনো কোনো দলিলে প্রদেয় অর্থের বেশি উল্লেখ করা হয়েছে। এভাবে জমি কেনার নামে অর্থ লুটের অভিযোগ উঠেছে।
শিক্ষকদের অভিযোগ, সরকারি ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম ভেঙে ৪৫ জন শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। নিয়োগ পরীক্ষার উত্তরপত্র তাৎক্ষণিক মূল্যায়ন না করে ১৫-২০ দিন পর ফল প্রকাশ করা হয়। ফলে নিয়োগ নিয়ে প্রশ্ন আছে। সভাপতি প্রতি মাসে গড়ে ৬৫ হাজার টাকা কলেজ থেকে নেন। নির্মাণসহ বিভিন্ন উন্নয়ন কাজে বেহিসাবে ব্যয়ের অভিযোগ আছে।
এর মধ্যে বানোয়াট অভিযোগে শনিবার স্থায়ী অধ্যক্ষকে বরখাস্ত করে নতুন অধ্যক্ষ নিয়োগের উদ্যোগ নিলে শিক্ষকরা সভাপতিকে ঘেরাও করেন। একপর্যায়ে অন্য সদস্যদের হস্তক্ষেপে সভাপতি মুক্ত হন। পরে রোববার সকাল পর্যন্ত বৈঠক মুলতবি করা হয়।
আন্দোলনরত ইংরেজি বিভাগের সাবেক প্রধান আসমা পারভীন বলেন, এই সভাপতির কাছে কলেজের সম্পদ নিরাপদ নয়। তিনি শিক্ষকদের অশোভন, আপত্তিজনক ও মানহানিকর ভাষায় গালাগাল করেন।
কলেজের স্টাফ কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ খালিদ মাহমুদ বলেন, সভাপতি একজন শিক্ষক। কিন্তু তার কর্মকাণ্ড শিক্ষকসুলভ নয়। সব শিক্ষক ও কর্মচারী তার পদত্যাগ চান। সভাপতির পদত্যাগ বা অপসারণ না হওয়া পর্যন্ত শিক্ষক-কর্মচারীর আন্দোলন করবেন।
জানতে চাইলে অধ্যক্ষ মো. আবদুর রহমান কলেজে দুইদিনের ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, শিক্ষকরা অন্যায়ের প্রতিবাদ করছেন। তিন শিক্ষক প্রতিনিধির যোগসাজশে এত অপকর্ম হয়েছে যে, তারা আর এই সভাপতিকে মেনে নিতে পারছেন না।
এ ব্যাপারে সভাপতির সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বলা চেষ্টা করা হলে তিনি মিটিংয়ে আছেন বলে জানান।