ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে বাকৃবি কেন্দ্রীয় মসজিদের ইমাম আটক

ছবি: সমকাল
বাকৃবি প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৭ অক্টোবর ২০২৩ | ১১:৫৬ | আপডেট: ১৭ অক্টোবর ২০২৩ | ১১:৫৬
ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে ময়মনসিংহে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) কেন্দ্রীয় মসজিদের ইমাম মুফতি জালাল উদ্দিনকে আটক করা হয়েছে। সোমবার (১৬ অক্টোবর) বিশ্ববিদ্যালয়ের শেষমোড় এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়। ময়মনসিংহ কোতোয়ালি থানার ওসি শাহ কামাল এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, মুফতি জালাল উদ্দিন বাকৃবির পেশ ইমামের দায়িত্বের পাশাপাশি স্থানীয় জামিয়া হালিমা সাদিয়া (রা.) বালিকা মাদ্রাসা পরিচালনা করতেন। মাদ্রাসাটি এর আগে খেজুরতলায় ছিল। সেখানেও মুফতি জালালের বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের কারণে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ শেষমোড়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি স্থানান্তর করে।
নাম প্রকাশ না করা শর্তে অভিযোগকারী বলেন, ‘মেয়েকে ইসলামী জ্ঞান অর্জনের জন্য মাদ্রাসায় দিয়েছিলাম। কিন্তু আমি কল্পনা করতে পারিনি ইমাম সাহেবে এমন কাজ করতে পারেন। এর আগে আমার মেয়ে ইমামের স্ত্রীর কাছে অভিযোগ দিয়েছিল। কিন্তু ইমামের স্ত্রী হুমকি দিয়ে আমার মেয়েকে মেরেছিলেন। তারা আমার মেয়েকে আটকে রেখে বাসায় ফিরতে দিতেন না। আমরা মনে করেছিলাম পড়ালেখার জন্য হয়তো বাসায় আসছে না। পরে দুই দিন আগে আমার মেয়ের সঙ্গে খারাপ আচরণ করায় এলাকাবাসী জানতে পেরে ইমামকে আটকে রাখে। আমি এই ঘটনার বিচার দাবি করছি।’
এদিকে মসজিদের মুসল্লিরা ইমামের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানি, বিভিন্ন স্থানে মহিলা মাদ্রাসা স্থাপন করে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অনৈতিক কার্যকলাপে লিপ্ত হওয়া, দোকানে বাকি খেয়ে টাকা না দেওয়া, সপ্তাহে তিন দিন ছুটি কাটানোর অভিযোগ তুলেছে। অভিযোগের প্রেক্ষিতে ইমামের পেছনে নামাজ আদায় না করার সিদ্ধান্তও নেয় মসজিদটির মুসল্লিরা। মুসল্লিদের স্বাক্ষরিত একটি আভিযোগপত্র মসজিদ কমিটির সভাপতির কাছে রয়েছে বলে জানা গেছে।
মসজিদ কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড. আলী আশরাফ বলেন, ‘ইমামের বিরুদ্ধে এর আগেও অভিযোগ এসেছিল। কিন্তু সেটি লিখিত না হওয়ায় আমরা কোনো ব্যবস্থা নিতে পারিনি। ইমাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে দায়িত্ব পালন করেন। তার বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দেখবে। তবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কোনো সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত তিনি ইমামতির দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না।’
কোতোয়ালি থানার ওসি শাহ কামাল বলেন, ‘ইমামের বিরুদ্ধে মাদ্রাসার এক ছাত্রী অভিযোগ (ডায়েরি) করেছিলেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে জালাল উদ্দিনকে আটক করা হয়।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য আব্দুল আউয়াল বলেন, ‘কেন্দ্রীয় মসজিদের ইমামকে যে আটক করা হয়েছে, পুলিশের পক্ষ থেকে আমাকে জানানো হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী কাউকে আটক করতে গেলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অনুমতি নেওয়া দরকার। কিন্তু আটকের বিষয়ে পুলিশ অনুমতি নেয়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্যের দায়িত্ব পালনের কারণে আমি একা সিদ্ধান্ত নিতে পারছি না। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র বিষয়ক উপদেষ্টা ও প্রক্টরের সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’