ঢাকা শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫

সৌদি আরবে নিহত

সৌদি আরবে নিহত দুই বাংলাদেশি পরিবার ক্ষতিপূরণ পাচ্ছে ৩০ কোটি টাকা  

৩০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ পাচ্ছেন দুই বাংলাদেশি পরিবার

সাগর পাটোয়ারী ও আবিরণ

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২১ ডিসেম্বর ২০২৩ | ১১:৩৮ | আপডেট: ২১ ডিসেম্বর ২০২৩ | ১১:৪২

সৌদি আরবে হত্যার শিকার দুই বাংলাদেশি পরিবারের অনুকূলে ক্ষতিপূরণের প্রায় ৩০ কোটি টাকা আদায় করা হয়েছে। সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারীর মধ্যস্থতায় ২০০৬ সালে দাম্মামে নিহত সাগর পাটোয়ারীর পরিবারকে ৫১ লাখ সৌদি রিয়াল এবং ২০১৯ সালে রিয়াদে নিহত আবিরণের পরিবারকে ৪৮ লাখ ৮০ হাজার সৌদি রিয়াল ক্ষতিপূরণ বাবদ পাঠানো হয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বৃহস্পতিবার এ তথ্য জানানো হয়। 

কুমিল্লার বরুড়া থানার সাগর পাটোয়ারী ২০০৬ সালের ২৭ জুন অজ্ঞাত বন্দুকধারীর গুলিতে দাম্মাম শহরে নিহত হন। দীর্ঘসময় আততায়ীকে শনাক্ত করতে না পারায় যথাসময়ে মামলাটির অগ্রগতি হয়নি। ২০১৮ সালে শ্রমকল্যাণ উইং প্রতিনিধি দাম্মাম দক্ষিণ থানায় জানতে পারে সেখানে একটি চুরির মামলায় সৌদি নাগরিক উমর আল শাম্মেরি আটক যিনি সাগর পাটোয়ারী হত্যা মামলায় সন্দেহভাজন। থানা থেকে জানানো হয়, প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ উমরকে বিবাদী করে মামলা করলে এই বিষয়ে পুনঃতদন্ত করা হবে। এর প্রেক্ষিতে নিহত সাগরের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। পরিবারের ফোন নম্বর সংগ্রহের মাধ্যমে দূতাবাসের অনুকূলে পাওয়ার অব এটর্নি নিয়ে শ্রম কল্যাণ উইংয়ের প্রতিনিধি আদালতে অভিযুক্তের মৃত্যুদণ্ডের দাবি জানিয়ে অভিযোগ দাখিল করেন। বিচারে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আদালত ২০২১ সালের ২৪ মার্চ অউমর আল শাম্মেরির বিরুদ্ধে শিরচ্ছেদের মাধ্যমে মৃত্যুদণ্ডের রায় দেন। 

অভিযুক্তের বাবা অর্থের বিনিময়ে মৃত্যুদণ্ডের দাবি প্রত্যাহারের আপস প্রস্তাব করলে রাষ্ট্রদূতের মধ্যস্থতায় ৫১ লাখ রিয়ালে সাগর পাটোয়ারীর ওয়ারিশরা সম্মত হন। আদালত অভিযুক্তের পরিবারের কাছ থেকে রক্তপণের চেক গ্রহণ করে মামলা চূড়ান্ত নিষ্পত্তি করেন। ৬ ডিসেম্বর দাম্মামে সৌদি ফ্রান্সি ব্যাংকের ফয়সলিয়া শাখা মারফত দূতাবাসের ব্যাংক হিসাবে ৫১ লাখ রিয়াল জমা হয়। 

অন্যদিকে খুলনার পাইকগাছার গৃহকর্মী আবিরণ বেগম ২০১৯ সালে রিয়াদের আজিজিয়ায় নিয়োগকর্তার বাসায় গৃহকর্ত্রী আয়েশা আহমাদ সগির আল জিজানির হাতে নিহত হন। এ হত্যায় আজিজিয়া পুলিশ আয়েশা আল জিজানী, গৃহকর্তা বাসেম সালেম সগির ও তাদের ছেলে ওয়ালিদ বাসেম সালেমকে গ্রেপ্তার করে। বিচার শেষে ২০২১ সালের শুরুর দিকে আদালত প্রধান আসামি গৃহকর্ত্রীর বিরুদ্ধে কেসাস (জীবনের বিনিময়ে জীবন) এবং অন্য আসামিদের বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার সৌদি রিয়াল অর্থদণ্ডের রায় ঘোষণা করেন। রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হলে আপিল আদালত কেসাস বা মৃত্যুদণ্ডের রায় বহাল রাখেন।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামির পরিবার ও সৌদি সরকারের পক্ষ থেকে রক্তপণের বিনিময়ে আসামিকে ক্ষমা করার জন্য অনুরোধ জানানো হলে নিহতের পরিবার সর্বোচ্চ ক্ষতিপূরণের বিনিময়ে আসামিদের ক্ষমার সম্মতি দিয়ে রাষ্ট্রদূত বরাবর আবেদন করেন। নিহতের পরিবার ৪৮ লাখ ৮০ হাজার সৌদি রিয়াল রক্তপণ পরিশোধের বিনিময়ে ক্ষমা করতে সম্মত হয়।
 

আরও পড়ুন

×