সেনাবাহিনীর ইএমই কোর
‘কর্নেল কমান্ড্যান্ট’ হলেন লে. জেনারেল সাইফুল

সেনাবাহিনীর ইএমই কোরের ১১তম ‘কর্নেল কমান্ড্যান্ট’ হিসেবে বৃহস্পতিবার অভিষিক্ত হয়েছেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কোয়ার্টার মাস্টার জেনারেল লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. সাইফুল আলম
সমকাল প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৯ ডিসেম্বর ২০২৩ | ০৮:৩৭
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ইএমই কোরের ১১তম ‘কর্নেল কমান্ড্যান্ট’ হিসেবে বৃহস্পতিবার অভিষিক্ত হয়েছেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কোয়ার্টার মাস্টার জেনারেল লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. সাইফুল আলম। সৈয়দপুর সেনানিবাসে ইএমই সেন্টার অ্যান্ড স্কুলের প্যারেড গ্রাউন্ডে সামরিক রীতি ও ঐতিহ্য মেনে এ অভিষেক অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়। অভিষেক অনুষ্ঠানে ইএমই কোরের জ্যেষ্ঠতম অধিনায়ক এবং মাস্টার ওয়ারেন্ট অফিসার বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কোয়ার্টার মাস্টার জেনারেলকে ‘কর্নেল কমান্ড্যান্ট র্যাংক-ব্যাজ’ পরিয়ে দেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে নবনিযুক্ত কর্নেল কমান্ড্যান্ট প্যারেড স্কয়ারে পৌঁছালে তাঁকে আনুষ্ঠানিক অভিবাদন জানানো হয়। এ সময় ইএমই কোরের একটি চৌকস দল তাঁকে ‘গার্ড অব অনার’ প্রদান করে। এর মাধ্যমে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কোয়ার্টার মাস্টার জেনারেল ‘কর্নেল কমান্ড্যান্ট’ হিসেবে ঐতিহ্যবাহী সামরিক রীতি অনুযায়ী ইএমই কোরের অভিভাবকের দায়িত্ব গ্রহণ করলেন।
অনুষ্ঠানে নবনিযুক্ত কর্নেল কমান্ড্যান্ট দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য দেন। বক্তব্যের শুরুতেই তিনি স্বাধীনতার মহান স্থপতি, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। একই সঙ্গে তিনি স্মরণ করেন মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী ইএমই কোরের বীর সেনানীসহ সকল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের। এ সময় তিনি সেনাবাহিনীর রীতিনীতির প্রতি শ্রদ্ধা রেখে দৃঢ়তা, পেশাগত দক্ষতা ও দলগত প্রচেষ্টার মাধ্যমে দেশ ও জাতির যেকোনো দায়িত্ব পালনে ইএমই কোরের সকল সদস্যদের নিরলস প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার জন্য নির্দেশনা প্রদান করেন। অনুষ্ঠানে ঊর্ধ্বতন সামরিক কর্মকর্তা, অন্যান্য অফিসার, জুনিয়র কমিশন্ড অফিসার, অন্যান্য পদবির সেনাসদস্য এবং গণমাধ্যম ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
নবনিযুক্ত কর্নেল কমান্ড্যান্ট লে. জেনারেল মো. সাইফুল আলম (এসবিপি, ওএসপি, এসইউপি, এডব্লিউসি, পিএসসি, পিএইচডি) ১৯৮৬ সালে ১৪তম দীর্ঘমেয়াদি কোর্সে বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমি থেকে পদাতিক কোরে কমিশন লাভ করেন। তিনি ২০২১ সালে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কোয়ার্টার মাস্টার জেনারেল হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমিতে প্রশিক্ষণ শেষে তিনি কোর্সের শ্রেষ্ঠ অলরাউন্ড ক্যাডেট হিসেবে বিবেচিত হয়ে ‘Sword of Honour’ এবং শ্রেষ্ঠ একাডেমিক পারফরম্যান্সের জন্য ‘BMA Gold Medal’ অর্জন করেন। এছাড়া তিনি রণকৌশলগত প্রশিক্ষণে উৎকর্ষতার জন্য ‘Tactics Plaque’ অর্জন করেন। তিনি ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ থেকে ডিফেন্স স্টাডিজ-এ মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জনের পাশাপাশি মালয়া ইউনিভার্সিটি, মালয়েশিয়া থেকে স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ডিফেন্স স্টাডিজে ডিপ্লোমা, রয়্যাল ইউনিভার্সিটি থেকে মাস্টার্স ইন বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন এবং যুক্তরাষ্ট্রের আর্মি ওয়ার কলেজ থেকে স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের ওপর মাস্টার্স ডিগ্রি সম্পন্ন করেন। তিনি বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস থেকে সিকিউরিটি অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের ওপর পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন।
৩৮ বছরের পেশাগত জীবনে সকল স্তরের কমান্ড, স্টাফ ও প্রশিক্ষকসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি দুটি পদাতিক ব্যাটালিয়ন, একটি পদাতিক ব্রিগেড এবং দুটি পদাতিক ডিভিশন কমান্ড করেন। নবগঠিত ৭ পদাতিক ডিভিশনের প্রতিষ্ঠাতা জিওসি হিসেবে দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি ১১ পদাতিক ডিভিশনও কমান্ড করেন।
তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সর্বোৎকৃষ্ট ২টি প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান স্কুল অব ইনফ্যান্ট্রি অ্যান্ড ট্যাকটিকস্ এবং বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমির কমান্ড্যান্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়া তিনি প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তরের মহাপরিচালক হিসেবে নিযুক্ত ছিলেন। ব্যক্তিগত জীবনে লে. জেনারেল মো. সাইফুল আলম এবং তাঁর সহধর্মিনী বেগম লুবনা আফরোজ দুই কন্যা সন্তানের বাবা-মা। সংবাদ বিজ্ঞপ্তি
- বিষয় :
- বাংলাদেশ সেনাবাহিনী