দেশে পারিবারিক সহিংসতার শিকার ১০ শিশুর ৯ জনই

বাংলাদেশে ১ থেকে ১৪ বছর বয়সী প্রতি ১০ শিশুর মধ্যে ৯ জনই প্রতি মাসে সহিংস পরিস্থিতির মুখোমুখি হচ্ছে। প্রতি মাসে সাড়ে চার কোটি শিশুর ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। শিশু সুরক্ষায় অগ্রগতি সত্ত্বেও সহিংসতা, নিপীড়ন ও শোষণ-বঞ্চনার কারণে লাখ লাখ শিশু ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার ইউনিসেফ এসব তথ্য জানিয়েছে। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জাতিসংঘের শিশুবিষয়ক সংস্থাটি জানায়, বিশ্বব্যাপী পাঁচ বছরের কম বয়সী ৪০ কোটি শিশু বা এ বয়সীদের মধ্যে প্রতি ১০ শিশুর ছয়জনই নিয়মিত বাসায় শারীরিক আঘাত বা শারীরিক শাস্তি সহ্য করে।

বিশ্বে প্রথমবারের মতো পালিত আন্তর্জাতিক খেলাধুলা দিবসে (১১ জুন) শিশুদের সহিংসতার শিকার হওয়ার বিষয়ে এসব তথ্য প্রকাশ করা হয়। এর মধ্য দিয়ে বাসাবাড়িতে শিশুদের সঙ্গে যোগাযোগ এবং তাদের উদ্দীপনা দেওয়াসহ সার্বিক সেবাযত্নে ঘাটতির চিত্র ফুটে উঠেছে। এ পরিস্থিতিতে বাবা-মা, সেবাদাতা ও শিশু– সবার মানসিক স্বাস্থ্য এবং শিশুদের বিকাশের জন্য খেলাধুলার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।

মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এবং অন্যান্য মন্ত্রণালয়ের যৌথ উদ্যোগে ইউনিসেফ পরিবার, কমিউনিটি, শিশু-কিশোরসহ অসহায় জনগোষ্ঠীর জন্য সহিংসতামুক্ত ও সুরক্ষামূলক পরিবেশ গড়ে তুলতে কাজ করছে। বাংলাদেশে ইউনিসেফের কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ শেলডন ইয়েট বলেন, প্রতিটি শিশুর একটি নিরাপদ ও অনুকূল পরিবেশে বেড়ে ওঠার অধিকার আছে। বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে অংশীদারিত্ব ও কমিউনিটি নেতৃত্বাধীন কর্মপদ্ধতির মাধ্যমে আমরা পরিবারকে শক্তিশালী করতে বিনিয়োগের মাধ্যমে সহিংসতা এবং ক্ষতিকারক অনুশীলন থেকে ১৬ লাখের বেশি শিশু ও নারীকে সুরক্ষা দিতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি করছি।

ইউনিসেফ দেশের ৪৩টি জেলায় ২ হাজার ১৭০টি শিশু সুরক্ষা কমিউনিটি কেন্দ্র গড়ে তুলেছে। এর মাধ্যমে ২০২৩ সালে এক হাজারের বেশি বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ করা সম্ভব হয়েছে। এখান থেকে শিশুদের প্রয়োজনীয় সুরক্ষামূলক সেবাসমূহ, বিনোদনমূলক কর্মকাণ্ড ও মনঃসামাজিক সহায়তা দেওয়া হয়।

প্রথম আন্তর্জাতিক খেলাধুলা দিবসে ইউনিসেফ বাংলাদেশ সরকার, সুশীল সমাজ, দাতা, বেসরকারি খাত ও অন্যান্য স্টেকহোল্ডারকে অবিলম্বে শিশুদের খেলাধুলার অধিকার পূর্ণ করার আহ্বান জানিয়েছে। শিশু অধিকার সনদের ৩১ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী প্রতিটি শিশুর বিকাশ ও সুস্থতার নিশ্চয়তা দেওয়া আমাদের সবার দায়িত্ব। এ কার্যক্রম বাস্তবায়ন একটি কার্যকর শিশু সুরক্ষা ব্যবস্থার মেরুদণ্ড। এ জন্য প্রয়োজন দক্ষ সামাজিক কর্মীর সংখ্যা বাড়ানো।