ঢাকা শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫

সংসদে অর্থমন্ত্রী

রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে ব্যাংকের পাওনা ৫১ হাজার ৩৯১ কোটি টাকা

রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে ব্যাংকের পাওনা ৫১ হাজার ৩৯১ কোটি টাকা

ছবি: ফাইল

সমকাল প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৪ জুন ২০২৪ | ১৮:৫০

রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে দেশের বাণিজিক ব্যাংকগুলোর পাওনা ৫১ হাজার ৩৯১ কোটি ৮৯ লাখ টাকা বলে সংসদকে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। আজ সোমবার সংসদের বৈঠকে প্রশ্নোত্তরে আওয়ামী লীগ দলীয় এমপি (নোয়াখালী-২) মোরশেদ আলমের প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী এ তথ্য জানান।

এর আগে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের বৈঠক শুরু হলে প্রশ্নোত্তর টেবিলে উপস্থাপিত হয়।

একই প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রীর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, সব থেকে বেশি পাওনা রয়েছে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) কাছে। তাদের কাছে ব্যাংকগুলোর পাওনা ১৫ হাজার ৫৫০ কোটি ৩২ লাখ টাকা; চিনিকলগুলোর কাছে সাত হাজার ৮১৩ কোটি ৬৮ লাখ টাকা, ফার্টিলাইজার, কেমিক্যাল ও ফার্মাটিসিক্যাল ইন্ডাষ্ট্রিজের কাছে সাত হাজার ২৫০ কোটি ৭১ লাখ টাকা, টিসিবির কাছে পাঁচ হাজার ১৮ কোটি ৬ লাখ টাকা, বাংলাদেশ বিমান করপোরেশনের কাছে চার হাজার ৪৪১ কোটি ৩৮ লাখ টাকা পাওনা রয়েছে। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় গ্রান্ড কমিশনসহ (ইউজিসি) দেশের ১৬টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে সরকারি বা বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর বিভিন্ন অংকের টাকা পাওনা রয়েছে।

স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য সোহরাব উদ্দিনের প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী জানান, মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসের (এসএফএস) বর্তমানে (মার্চ ২০২৪) নিবন্ধিত এজেন্টের সংখ্যায় প্রায় ১৭ লাখ ৭০ হাজার। এমএফএস গ্রাহক ২২ কোটি ৪০ লাখ। এর মধ্যে নারী ৯ কোটি ৩৩ লাখের বেশি। এসএফএসসহ অন্যান্য পদ্ধতি প্রয়োগের ফলে আগের তুলনায় অনেক সহজে রেমিট্যান্স পাঠানো সম্ভব হচ্ছে।

ভোলা-১ আসনের আলী আজমের প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী জানান, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর সাময়িক হিসাবমতে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশের জনগণের মাথাপিছু আয় দুই হাজার ৭৮৪ মার্কিন ডলার।

মন্ত্রী জানান, প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বৃদ্ধির পাশাপাশি বৈদেশিক ঋণের ওপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে দেশের অর্থনীতিকে স্বাবলম্বী করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। 
বাংলাদেশ হতে বিশ্বের ১৭৬টি দেশে ২০০৯ হতে ২০২৩ পর্যন্ত সময়ে ১০ লাখ ৮৫ হাজার ১১ জন নারী কর্মীসহ ৯৭ লাখ ৭ হাজার ২৫০ জন কর্মীর বৈদেশিক কর্মসংস্থান হয়েছে। বৈদেশিক কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পাওয়ায় রেমিট্যান্স আহরণের গতি বহুলাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০০৯-১০ সালে প্রবাসী আয়ের পরিমাণ ছিল ১০ দশমিক ৯৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ২০২২-২৩ অর্থবছরে তা দ্বিগুণ হয়ে ২১ দশমিক ৬১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে।

আওয়ামী লীগ দলীয় এমপি নুর উদ্দিন চৌধুরী নয়নের প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী জানান, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মে পর্যন্ত ৫ মাসে রেমিট্যান্স এসেছে ১০ হাজার ৭৫২ দশমিক ৯০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। এ সময়ে সব থেকে বেশি রেমিট্যান্স এসেছে সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে।

পটুয়াখালী-১ আসনের এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদারের প্রশ্নের জবাবে আবুল হাসান মাহমুদ আলী জানান, মে ২০২৪-এর ভিত্তিতে দেশে বর্তমানে গ্রস রিজার্ভের পরিমাণ ২৪ হাজার ১৬১ দশমিক ৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। আইএমএফের BPM6 অনুযায়ী এই পরিমাণ ১৮ হাজার ৬৩৩ দশমিক ৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। সর্বশেষ মার্চ ২৪ ভিত্তিতে গ্রস রিজার্ভ দিয়ে সাড়ে ৪ মাসের আমদানি ব্যয় নির্বাহের সক্ষমতা রয়েছে।

ঢাকা-১৪ আসনের মইনুল হোসেন খানের প্রশ্নের জবাবে আবুল হাসান মাহমুদ আলী জানান, বর্তমানে দেশে কর প্রদানকারীর সংখ্যা এক কোটি ৩ লাখ ৪৮ হাজার ৭৪৬ জন। এর মধ্যে মে ২০২৪ পর্যন্ত রিটার্ন দাখিল করেছে ৪২ লাখ ৬২ হাজার ৭০৬ জন।

স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য মুহাম্মদ সাইফুল ইসলামের প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী জানান, চলতি ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪ লাখ ১০ হাজার কোটি টাকা। এপ্রিল ২০২৪ পর্যন্ত আদায়ের পরিমাণ দুই লাখ ৮৯ হাজার ৩৭৭ কোটি টাকা।

আরও পড়ুন

×