ঢাকা শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫

বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়

সুপারিশের ১৪ বছরেও চাকরি হয়নি ডা. আব্দুল আলীমের

মৌখিক পরীক্ষা দিতে গিয়ে অপহরণের শিকার হন

সুপারিশের ১৪ বছরেও চাকরি হয়নি ডা. আব্দুল আলীমের

ডা. এস এম আব্দুল আলীম। ছবি: সংগৃহীত

সমকাল প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৮ আগস্ট ২০২৪ | ০১:১৯ | আপডেট: ২৮ আগস্ট ২০২৪ | ০১:২৮

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) অবেদনবিদ্যা বিভাগে সহকারী অধ্যাপক পদে ডা. এস এম আব্দুল আলীমের নিয়োগের সুপারিশ করে নির্বাচন বোর্ড। তবে ১৪ বছরেও তাঁকে নিয়োগ দেয়নি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

আব্দুল আলীম জানান, সহকারী অধ্যাপক পদে তিনবার লিখিত পরীক্ষা ও দু’বার মৌখিক পরীক্ষা দেন এবং প্রতিবারই তিনি উত্তীর্ণ হন। কিন্তু বিএনপি সমর্থক হওয়ায় তাঁর চাকরি হয়নি। এমনকি মৌখিক পরীক্ষা দিতে এসে অপহরণ ও লাঞ্ছনার শিকার হতে হয়েছে। গত ১৮ আগস্ট নতুন করে বিএসএমএমইউর সহকারী অধ্যাপক পদে ভূতাপেক্ষ নিয়োগের আবেদন করেছেন তিনি।

আব্দুল আলীম বর্তমানে রাজারবাগে কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে অবেদনবিদ্যা বিভাগের সিনিয়র কনসালট্যান্ট হিসেবে কাজ করছেন। 

তিনি সমকালকে জানান, বিএসএমএমইউতে অ্যানেসথেসিওলজি বিভাগে সহকারী অধ্যাপক পদে ২০১০ সালে ছয়টি পদে নিয়োগে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর চূড়ান্ত মৌখিক পরীক্ষা নিয়ে নির্বাচন বোর্ড তাঁকে নিয়োগের সুপারিশ করে। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় সুপারিশপ্রাপ্ত ছয়জনের মধ্যে পাঁচজনের নিয়োগ অনুমোদন দেওয়া হয়। বিএনপি সমর্থক চিকিৎসকদের সংগঠন ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ড্যাব) আজীবন সদস্য হওয়ায় তাঁর নিয়োগ আটকে দেওয়া হয়। এর পর ২০১৪ সালে একই বিভাগের দুই পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে বিএসএমএমইউ। ওই বছরে লিখিত পরীক্ষা ও চূড়ান্ত মৌখিক পরীক্ষা নেওয়া হয়। যোগ্য প্রার্থী থাকলেও সেই সময় কাউকে নিয়োগ দেওয়া হয়নি। 

আব্দুল আলীম আরও জানান, ২০১৫ সালে একই বিভাগে আবার নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। চিকিৎসক আলীম সেই নিয়োগ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ওই বছরের ২৭ ডিসেম্বর মৌখিক পরীক্ষার জন্য ডাকা হয়। 

তিনি জানান, সকালে যখন পরীক্ষা দিতে যান, তখন কয়েকজন চিকিৎসক এসে বলেন, আপনাকে পরীক্ষা দিতে দেওয়া হবে না। ওই চিকিৎসকরা প্রথমে তাঁকে ক্যান্টিনে নিয়ে যান, সেখান থেকে একটি কক্ষে নিয়ে তালাবদ্ধ করে রাখেন। সারাদিন আটকে রাখার পর একজন চিকিৎসক তালা খুলে তাঁকে প্রক্টরের কক্ষে নিয়ে যান। পরে হাসপাতালের পরিচালকের কক্ষে বসতে দেওয়া হয়। সেখান থেকে তিনি বাসায় চলে যান। পরীক্ষা আর দিতে পারেননি। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ছিলেন অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান।
তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন। 

অধ্যাপক কামরুল বলেন, তখন পরীক্ষাটি আবার নেওয়ার কথা থাকলেও নানা কারণে নেওয়া হয়নি।

অপহরণ ও আটকে রাখার অভিযোগ এনে ২০১৬ সালে রাজধানীর শাহবাগ থানায় মামলা করেন আব্দুল আলীম। 

এ প্রসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন প্রক্টর হাবিবুর রহমান বলেন, স্বাচিপ নামধারী কিছু উচ্ছৃঙ্খল চিকিৎসক আব্দুল আলীমকে অপহরণ করেছিলেন। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার ডা. মো. দেলোয়ার হোসেন সমকালকে বলেন, চিকিৎসক আলীমের সঙ্গে আগের প্রশাসন অন্যায় করেছে। গত ১৬ বছরে দুই শতাধিক চিকিৎসককে লাঞ্ছনার শিকার হতে হয়েছে। দু-এক দিনের মধ্যে নতুন প্রশাসন দায়িত্ব নেবে। তারা আলীমের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে বলে প্রত্যাশা তাঁর।
 

আরও পড়ুন

×