ঢাকা শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫

ভুয়া বিল পাস করে ফেঁসে গেলেন রেলের সাত কর্মী

এক মাসের মধ্যে ৯৭ লাখ টাকা পরিশোধের নির্দেশ

ভুয়া বিল পাস করে ফেঁসে গেলেন রেলের সাত কর্মী

মহাব্যবস্থাপকের কার্যালয়

 আহমেদ কুতুব, চট্টগ্রাম

প্রকাশ: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ০০:৩৩

চট্টগ্রামে যন্ত্রপাতি সরবরাহের ভুয়া বিল পাস করে ফেঁসে গেছেন রেলওয়ের সাত কর্মী। এখন পকেট থেকে তাদের প্রায় ৯৭ লাখ টাকা পরিশোধ করতে হচ্ছে। অর্থ পরিশোধে এক মাস সময় দিয়েছে রেল কর্তৃপক্ষ। তাদের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

ওই সাতজন হলেন– এও/এম/টিএ মামুন হোসেন, পাহাড়তলী কারখানার (ডিএফএ) প্রতিস্থাপন ও সংস্থাপন শাখার হিসাবরক্ষক সৈয়দ সাইফুর রহমান, সিআরবির (পদ্ধতি) ডিএফএর অডিটর পবন কুমার পালিত, টিএ/প্রশাসন/এও আবু নাসের, সিআরবির (সিপিবি) হিসাবরক্ষক শিমুল বেগম, জুনিয়র অডিটর ইকবাল মো. রেজাউল করিম ও সিআরবির (বিঅ্যান্ডবি) অফিস সহায়ক মাকসুদুর রহমান।
চট্টগ্রামে রেলওয়ের অতিরিক্ত অর্থ উপদেষ্টা ও প্রধান হিসাব অধিকর্তা সার্বিক (পূর্ব) মো. সাইদুর রহমান সরকার বলেন, ‘ভুয়া বিল পাস করায় সরকারের ৯৬ লাখ ৯০ হাজার টাকা ক্ষতি হয়েছে।  এই অর্থ পরিশোধ করতে চিঠি দেওয়া হয়েছে।’ পরিশোধ না করলে তাদের সাময়িক বরখাস্তের আদেশ প্রত্যাহার হবে না।

সূত্র জানায়, ২০২৩ সালের ২৮ ডিসেম্বর এফএঅ্যান্ডসিএও দপ্তর থেকে যন্ত্রপাতি সরবরাহের বিপরীতে মেসার্স দি কসমোপলিটন করপোরেশনের নামে ৯৬ লাখ ৯০ হাজার টাকার একটি চেক পাস করা হয়। তিন দিন পর চেকটি নগদায়ন হয়। কিন্তু বিলটি ছিল ভুয়া। অস্থায়ী কর্মচারী হাবিবুল্লা খানের সহযোগিতায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দি কসমোপলিটন করপোরেশনের নামে বিলটি দাখিল করেন সোহাগ আলী নামে এক ব্যক্তি। যাচাই-বাছাই ছাড়াই বিলটি পাস করে দেন ওই সাতজন। পরে তদন্ত করে দেখা যায়, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স দি কসমোপলিটন করপোরেশন থেকে বিলটি দাখিল হয়নি। তাদের নামে বিল দাখিল করে একটি প্রতারক চক্র। 
ঘটনাটি জানাজানি হলে আদালতে হাবিবুল্লা খান ও সোহাগ আলীকে আসামি করে মামলা করে রেলওয়ে। পাশাপাশি অভিযুক্ত সাতজনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত শুরু হয়। তদন্তে জালিয়াতি প্রমাণ হলে তাদের সাময়িক বরখাস্ত ও অর্থদণ্ড করা হয়।

গত ২৯ আগস্ট এক চিঠিতে মামুন হোসেনকে ১৯ লাখ ৩৮ হাজার টাকা, সৈয়দ সাইফুর রহমানকে ১৯ লাখ ৩৮ হাজার, পবন কুমার পালিতকে ১৯ লাখ ৩৮ হাজার, আবু নাসেরকে ১৪ লাখ ৫৩ হাজার, শিমুল বেগমকে ৯ লাখ ৬৯ হাজার, ইকবাল মো. রেজাউল করিমকে ৮ লাখ ৭২ হাজার ও মাকসুদুর রহমানকে ৫ লাখ ৮১ হাজার ৪০০ টাকা অর্থদণ্ড দিয়ে তা পরিশোধের নির্দেশ দেয় রেলওয়ের অতিরিক্ত অর্থ উপদেষ্টা ও প্রধান হিসাব অধিকর্তা সার্বিক (পূর্ব) কার্যালয়। চিঠিতে এক মাসের মধ্যে সরকারি কোষাগারে নির্দিষ্ট অঙ্কের অর্থ জমা দিতে বলা হয়। একই সঙ্গে তাদের বেতন গ্রেড সর্বনিম্ন ধাপে অবনমন ও কাজ থেকে বিরত রাখা হয়। 

তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, অডিটর পবন কুমার পালিতের আইডি, পাসওয়ার্ড ও ওটিপি ব্যবহার করে ভুয়া বিলটি এন্ট্রি ও অডিটর মামুন হোসেনের আইডি-পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে সেটি অনুমোদন দেওয়া হয়। 
এ বিষয়ে হিসাবরক্ষক সৈয়দ সাইফুর রহমান বলেন, ‘এটি আসলে একটি ভুল। আমরা কোনো অপরাধের সঙ্গে জড়িত নই। তারপরও কর্তৃপক্ষের নির্দেশে অর্থদণ্ড পরিশোধ করব।’

আরও পড়ুন

×