ঐক্যই রাষ্ট্রের প্রতিটি অঙ্গের স্বাধীনতা বজায় রাখতে পারে: প্রধান বিচারপতি

জাতীয় ঐক্যই রাষ্ট্রের প্রতিটি অঙ্গের স্বাধীনতা বজায় রাখতে পারে বলে জানিয়েছেন প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ। তিনি বলেন, ‘জাতীয় ঐক্য পরিণত হোক এমন এক প্রাতিষ্ঠানিক ঐক্যমতে, যার ওপর ভর করে রাষ্ট্রের প্রতিটি অঙ্গ বা স্তম্ভ নিজ নিজ অবস্থান থেকে প্রকৃত অর্থে নিজ নিজ স্বাধীনতা বজায় রাখতে পারে। একইসঙ্গে এই ঐক্যকে আরও সুদৃঢ় করতে সক্ষম হয়।’

আজ বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি (বার) মিলনায়তনে আয়োজিত বিজয়া পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সুপ্রিম কোর্ট বার এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। সমিতির সভাপতি ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকনের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন বিশেষ অতিথি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান, বিজয়া পুনর্মিলনী ও বানী অর্চনা উদযাপন পরিষদের আহ্বায়ক নিতাই রায় চৌধুরী, চাঁদপুরে শ্রী রামকৃষ্ণ আশ্রমের অধ্যক্ষ শ্রীমৎ স্বামী স্থিরাত্মানন্দজী মহারাজ।

সাম্প্রদায়িক বিভেদ প্রতিহতের আহ্বান জানিয়ে প্রধান বিচারপতি রেফাত আহমেদ বলেন, ‘ধর্ম আমাদের উদারতা, মানবিকতা, অসাম্প্রদায়িকতা ও সহিষ্ণুতা শিক্ষা দেয়। আবার ধর্মের অপব্যাখ্যাই অনেক সময় মানুষে মানুষে বিভেদ সৃষ্টি করে। তাই ধর্মের মানবিক শিক্ষা গ্রহণ করে আমাদের বৈষম্যহীন সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বাংলার ইতিহাস মূলত সৌহার্দ ও সম্প্রীতির ইতিহাস। সেই আবহমান কাল থেকে এই ভূখণ্ডের মানুষ ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে একে অপরের পাশে দাঁড়িয়েছে। উৎসব, তা যে ধর্মেরই হোক না কেন; আমাদের একাত্মতার প্রতীক। আমাদের মনে রাখতে হবে, বিভেদের দেয়ালগুলোকে সম্প্রীতির বন্ধনে রূপান্তরিত করার মধ্যেই মানবজাতির মুক্তির পথ নিহিত।’

ন্যায়বিচার প্রসঙ্গে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘ন্যায়বিচার প্রাপ্তির অধিকার কোনো বিশেষ শ্রেণি বা গোষ্ঠীর ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধ নয়; বরং এটি সবার অধিকার।’

অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ‘আমরা যখন মহান মুক্তিযুদ্ধের কথা ভাবি, জুলাই অভ্যুত্থানের কথা চিন্তা করি, তখন আমরা ধর্মীয় চিন্তা-চেতনার ঊর্ধ্বে থেকে চিন্তা করি, সবাইকে বাংলাদেশি মনে করি। সেই জায়গা থেকে গুটি কয়েক মানুষের উস্কানিতে যদি আমরা বাংলাদেশকে অশান্ত করতে চাই, তাহলে আগুন যেখানেই লাগুক না কেন, কারও দেবালয়, কারও মসজিদ, কারও মন্দির, কারও ঘর কোনো কিছুরই অস্তিত্ব থাকবে না।’

ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, ‘সাম্প্রদায়িকতা হচ্ছে ফৌজদারী অপরাধ, যারা এটা করে তারা অপরাধী। আইনজীবীরা হচ্ছেন সামাজিক নেতা। আইনজীবীদের সামাজিক নেতৃত্ব দিতে হবে। সাম্প্রদায়িকতা-বৈষম্য রোধে দায়িত্ব পালন করতে হবে।’