ঢাকা রবিবার, ০৬ জুলাই ২০২৫

সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ গণমাধ্যমের জন্য হুমকি

সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ গণমাধ্যমের জন্য হুমকি

কোলাজ

 সমকাল প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৫ জানুয়ারি ২০২৫ | ০০:৪৩ | আপডেট: ০৫ জানুয়ারি ২০২৫ | ০৭:৩৯

সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ খসড়াটি আইনে পরিণত হলে মতপ্রকাশ ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা হুমকিতে পড়বে। অধ্যাদেশে এমন কয়েকটি ধারা রয়েছে, যেগুলো ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মতোই অপব্যবহার হতে পারে। গতকাল শনিবার রাজধানীর বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে ভয়েস ফর রিফর্মের উদ্যোগে ‘সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ: রাষ্ট্রীয় নিবর্তন ব্যবস্থা বহাল ও গণঅভ্যুত্থানের প্রতি অবজ্ঞা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। 

অনুষ্ঠানে জাতিসংঘের মতপ্রকাশের স্বাধীনতাবিষয়ক বিশেষ র‍্যাপোর্টিয়ার আইরিন খান বলেন, সাইবার নিরাপত্তা আইনের সঙ্গে এই অধ্যাদেশের খসড়াটির মিল দেখে মনে হয়েছে, আমি সাইবার নিরাপত্তা আইনের সমালোচনা করে আওয়ামী লীগ সরকারকে যে চিঠি লিখেছিলাম, সেই চিঠির একটু অদলবদল করে এই সরকারকে পাঠিয়ে দেওয়া যাবে। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক আইনে সবার ওপরে থাকে মানবাধিকার। কোনো সরকারই মানবাধিকার নিয়ে আলোচনা করছে না, তারা নিরাপত্তাকে প্রাধান্য দিচ্ছে। 

আইরিন খান বলেন, অধ্যাদেশের ভাষা অস্পষ্ট। এতে ঝুঁকি থাকে। কারণ, এতে ক্ষমতাসীনরা আইনের অপব্যবহারের সুযোগ পায়। মতপ্রকাশের স্বাধীনতার জন্য ২৫ ও ২৬ দুটি ধারাতেই সমস্যা রয়েছে। অপতথ্য ও ভুল তথ্যের বিষয়গুলো অধ্যাদেশে আসেনি। মানহানি কেন ফৌজদারি আইনে থাকবে– সে প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, এতে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা হুমকিতে পড়বে।
লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্টের (ব্লাস্ট) নির্বাহী পরিচালক সারা হোসেন বলেন, এই আইনের যে বিষয়গুলো নিয়ে প্রশ্ন উঠছে, তা ২০০৬ সালে বিএনপি সরকারের আমলে আইসিটি আইনের মাধ্যমে শুরু হয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকার তা ডিজিটাল আর সাইবার আইনে রেখে দেয়। অন্তর্বর্তী সরকারও তা রেখে দেবে, সেটি আশা করিনি। রাজনৈতিক সরকারের সময়ে যেসব হয়রানিমূলক আইন হয়েছে, সেটা কেন আবার থাকবে। 

ভয়েস ফর রিফর্মের সহআহ্বায়ক শহিদুল আলম বলেন, আইন প্রণয়ন বা সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে স্বচ্ছ আলোচনা জরুরি। জনগণের স্বার্থে যদি আইন করা হয়, তবে জনস্বার্থকে আমলে নিতে হবে। এই সরকারের কাছে সবাই ভিন্ন কিছু চায়। যা কিছু বলা হবে, তা হজম করা হবে, সেটা যেন ভাবা না হয়।
সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া বলেন, সাইবার নিরাপত্তা আইনের কাঠামোর ওপরই সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশটি হয়েছে। এখানে ভাষাগত কিছু পরিবর্তন আছে। তবে আগের মতোই সাধারণ নাগরিক, বিভিন্ন পেশাজীবী শ্রেণি বিশেষ করে সাংবাদিকরা এক ধরনের উৎকণ্ঠা রয়ে গেছে। নিয়ন্ত্রণের চিন্তা থেকে অধ্যাদেশটি হয়েছে। 
আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সাইমুম রেজা তালুকদার, টেক গ্লোবাল ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক সাবহানাজ রশিদ দিয়া, ভয়েস ফর রিফর্মের সহআহ্বায়ক ফাহিম মাশরু, টিআইবির আউটরিচ অ্যান্ড কমিউনিকেশনের পরিচালক মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের অর্থনৈতিক সমন্বয়ক দিদারুল ভূঁইয়া, আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির যুগ্ম সদস্য সচিব আসাদুজ্জামান ফুয়াদ, সাংবাদিক সিমু নাসের, এনডিএম চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ প্রমুখ। 

আরও পড়ুন

×