শাটডাউন কর্মসূচিতে সব পলিটেকনিকে ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ

ছয় দফা দাবিতে সারাদেশের পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে পূর্বঘোষিত টানা শাটডাউন কর্মসূচি শুরু হয়েছে। এ কারণে কোনো পলিটেকনিকেই ক্লাস-পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়নি। এদিকে ছয় দফা দাবি বাস্তবায়নে শিক্ষা মন্ত্রণালয় গঠিত কমিটি ভুল পথে হাঁটছে বলে মনে করেন আন্দোলনকারীরা। সে জন্য তারা কমিটির ওপর আর আস্থা রাখতে চাইছেন না। অবিলম্বে কারিগরি শিক্ষা সংস্কার কমিশন গঠনের দাবি জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। 

গতকাল মঙ্গলবার ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে কারিগরি ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের প্রতিনিধিরা এ দাবি জানান। সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীরা বলেন, ছয় দফা বাস্তবায়নে রূপরেখা তৈরি করতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ আট সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে। গত ২৭ এপ্রিল এই কমিটির প্রথম সভার আলোচনা থেকে প্রতীয়মান, ছয় দফা বাস্তবায়নে সঠিক পথে হাঁটছে না কমিটি। সরকারের কাছে আমাদের দাবি হলো– অবিলম্বে কারিগরি শিক্ষা সংস্কার কমিশন গঠন করা হোক।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে শাহজাদ আহমেদ নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, দাবি আদায়ে দীর্ঘ আট মাস ধরে আমরা আন্দোলন করে আসছি। কিন্তু সরকার দাবিগুলো বাস্তবায়নে পরিপূর্ণভাবে সমাধানের পথে হাঁটতে পারছে না। 

তিনি বলেন, আমরা কোনো সহিংসতায় যাব না। জনদুর্ভোগ সৃষ্টিকারী কোনো কর্মসূচিও আমরা নেব না। তবে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত সব পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।

এর আগে পূর্বঘোষিত শাটডাউন কর্মসূচি সফল করতে মঙ্গলবার সকাল ৯টার দিকে ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেন শিক্ষার্থীরা। চট্টগ্রাম, রাজশাহীসহ দেশের বিভিন্ন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরাও একই কর্মসূচি পালন করেন। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে সব পলিটেকনিক শাটডাউন রাখার ঘোষণা দিয়েছেন তারা।

গত সোমবার রাতে কারিগরি ছাত্র আন্দোলনের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছিল, মঙ্গলবার থেকে ছয় দফা দাবিতে সারাদেশের পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট একযোগে শাটডাউন থাকবে।

কারিগরি ছাত্র আন্দোলন ঘোষিত ছয় দফায় রয়েছে– জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর পদে ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টরদের পদোন্নতির হাইকোর্টের রায় বাতিলসহ ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টর পদবি পরিবর্তন, ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্স চার বছর মেয়াদি অব্যাহত রাখা, উপসহকারী প্রকৌশলী ও সমমান (দশম গ্রেড) পদ চার বছর মেয়াদি ডিপ্লোমা-ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং ও মনোটেকনোলজি (সার্ভেয়িং) থেকে পাস করা শিক্ষার্থীদের জন্য সংরক্ষিত করা, কারিগরি শিক্ষা সংস্কার কমিটি প্রকাশ করে কারিগরি সেক্টর পরিচালনায় শিক্ষিত জনবলকে দায়িত্ব/নিয়োগ দেওয়া, কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের বিতর্কিত সব নিয়োগ বিধিমালা সংশোধন ও কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত জনবল সব শূন্যপদে পলিটেকনিক ও টিএসসিতে দক্ষ শিক্ষক ও দক্ষ ল্যাব সহকারীর নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ এবং ডিপ্লোমা-ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং ও মনোটেকনোলজি থেকে পাস করা শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার জন্য আধুনিক বিশ্বের আদলে একটি বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি করার গেজেট পাস করা, বর্তমানে প্রস্তাবিত চারটি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে শতভাগ সিট নিশ্চিত করা।