দেশজুড়ে তাপপ্রবাহ চুয়াডাঙ্গায় রেকর্ড ৪১.২ ডিগ্রি

মৃদু ও মাঝারি তাপপ্রবাহের পর শুক্রবার চুয়াডাঙ্গায় চলতি মৌসুমের প্রথম তীব্র তাপদাহ শুরু হয়েছে। প্রচণ্ড গরমেও খেটে খাওয়া মানুষকে কাজে নামতে হচ্ছে। একটু স্বস্তি পেতে গাছের ছায়ায় বসছেন কিছু সময় পরপর। শুক্রবার দুপুরে চুয়াডাঙ্গা বড়বাজার এলাকায় সমকাল
সমকাল প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০ মে ২০২৫ | ০১:২৩ | আপডেট: ১০ মে ২০২৫ | ০৯:৩৩
তীব্র তাপদাহে পুড়ছে দেশ। প্রচণ্ড গরমে জনজীবন অতিষ্ঠ। গতকাল শুক্রবার চুয়াডাঙ্গায় চলতি বছরের সর্বোচ্চ ৪১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে। রাজধানী ঢাকায়ও রেকর্ড হয়েছে চলতি বছরের সর্বোচ্চ ৩৯ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা। তাপপ্রবাহ চলছে ঢাকা, রাজশাহী, রংপুর, খুলনা ও ময়মনসিংহের প্রায় সর্বত্র।
আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, বৃহস্পতিবারের চেয়ে গতকাল তাপপ্রবাহ দেশের আরও বেশি এলাকায় ছড়িয়েছে। এ অবস্থা আরও অন্তত দুই দিন থাকতে পারে। বৃষ্টি না হলে তাপপ্রবাহ কমার তেমন সম্ভাবনা নেই।
গতকাল ঢাকা, রাজশাহী, রংপুর, খুলনা ও ময়মনসিংহের প্রায় সর্বত্র তাপপ্রবাহ বয়ে গেছে। আগের দিন চট্টগ্রাম ও বরিশাল বিভাগে তাপপ্রবাহ অপেক্ষাকৃত কম ছিল। গতকাল এসব এলাকার বেশির ভাগ স্থানে তাপপ্রবাহ বইছে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ হাফিজুর রহমান।
দেশে সবচেয়ে বেশি গরম থাকে এপ্রিল মাসে। এ মাসে গড় তাপমাত্রা ৩৩ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। মে মাস হলো দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উষ্ণ মাস। এ সময় গড় তাপমাত্রা থাকে ৩২ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকাল দুপুর ৩টায় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে চুয়াডাঙ্গায় ৪১ দশমিক ২ ডিগ্রি। একই সময় বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ ছিল ২৪ শতাংশ, যা গরমের অনুভূতি আরও তীব্র করে তুলেছে। এর আগে চলতি বছর গত ২৮ মার্চ চুয়াডাঙ্গায় এবং ২৩ এপ্রিল যশোরে সর্বোচ্চ ৩৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল।
গতকাল চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরের বিভিন্ন জায়গা ঘুরে দেখা যায়, অন্যান্য দিনের তুলনায় লোকজনের চলাচল কম। সড়কে নেই তেমন যানবাহন। জরুরি কাজ ছাড়া কেউ ঘরের বাইরে বের হচ্ছেন না। তীব্র রোদ আর প্রচণ্ড গরমে অতিষ্ঠ ময়মনসিংহ নগরীর জনজীবনও। একই অবস্থা রাজধানীবাসীর। গতকাল ছিল সাপ্তাহিক ছুটির দিন। ফলে রাজধানীর সড়কে মানুষজনের চলাফেরা ও যানবাহন ছিল কম। তার পরও যারা কাজের সূত্রে বাইরে বের হয়েছে, তাদের ছিল গরমে হাঁসফাঁস অবস্থা। সবচেয়ে বেশি কষ্ট পাচ্ছেন খেটে খাওয়া মানুষ।
আবহাওয়া অফিস সূত্র বলছে, দেশের উষ্ণতম মাস এপ্রিল এবার ততটা উষ্ণ ছিল না। চলতি মে মাসের প্রথম সপ্তাহেও তাপমাত্রা মোটামুটি সহনীয় ছিল। কিন্তু গত বুধবার থেকে তাপমাত্রা বাড়তে শুরু করে। এ মাসে এত গরম কেন– এমন প্রশ্নের জবাবে আবহাওয়াবিদ বজলুর রশীদ বলেন, ‘এই তাপমাত্রা মে মাসে একেবারে অস্বাভাবিক না।
এপ্রিল মাসে গরম অপেক্ষাকৃত কম ছিল; কারণ পশ্চিমা লঘুচাপ সক্রিয় থাকার কারণে ওই মাসে মাঝেমধ্যে বৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু পশ্চিমা লঘুচাপের প্রভাব আপাতত নেই। দুই থেকে তিন দিন পর পশ্চিমা বায়ু আবার সক্রিয় হবে। তার প্রভাবে বৃষ্টি বাড়তে পারে।’
এদিকে রোদের প্রখর তাপে বিভিন্ন জেলায় ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বেড়েছে ডায়রিয়া, জ্বরসহ বিভিন্ন রোগ। বিশেষজ্ঞরা মানুষকে, বিশেষ করে অসুস্থ ও বয়স্ক ব্যক্তিদের এ সময় ঘরের বাইরে বের হওয়া থেকে বিরত থাকতে পরামর্শ দিচ্ছেন।
(তথ্য দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধিরা)
- বিষয় :
- গরম
- তাপপ্রবাহ
- চুয়াডাঙ্গা