আলোচনা সভায় বিশিষ্টজন
দেশ বাঁচাতে সঠিক নেতৃত্ব গড়ার তাগিদ

সমকাল প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২২ | ১৩:১৭ | আপডেট: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২২ | ১৩:১৭
রাষ্ট্রের প্রশাসনিক, রাজনৈতিক ও সামাজিক কর্মকাণ্ড ভেঙে পড়েছে। এমন ভঙ্গুর দশা থেকে দেশ বাঁচাতে দরকার সঠিক নেতৃত্ব গড়ে তোলা। এ জন্য সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড বাড়িয়ে সাম্প্র্রদায়িকতা রুখতে মাঠে নামতে হবে। বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন আয়োজিত আলোচনা সভায় দেশের বিশিষ্টজন এসব মতামত তুলে ধরেন। তাঁরা আসন্ন দুর্গাপূজা নির্বিঘ্নে উদযাপনের জন্য সরকারের প্রতি পর্যাপ্ত নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবি জানান।
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি নাট্যব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদারের সভাপতিত্বে সভায় প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সংগঠনের প্রেসিডিয়াম সদস্য রাজশাহী বিশ্ববিদালয়ের অধ্যাপক ড. আব্দুল্লাহ আল মামুন চৌধুরী। তিনি বলেন, আজকে দেশে নৈতিক মূল্যবোধের অবক্ষয়, মাদকের ছড়াছড়ি, নারীর প্রতি সহিংসতা, সাম্প্র্রদায়িক সন্ত্রাস, সীমাহীন দুর্নীতি, কালো টাকার দৌরাত্ম্য- সবকিছুর মূলে রয়েছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা থেকে সরে গিয়ে পুঁজিবাদের কাছে আত্মসমর্পণ করা।
আলোচনায় অংশ নিয়ে ইতিহাসবিদ অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন বলেন, সামাজিক নেতৃত্ব গড়ে তোলা ছাড়া দেশ বাঁচানো যাবে না। দেশের সব কাঠামো ভেঙে পড়েছে। সুস্থ রাজনীতি নেই, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু যে স্বপ্ন নিয়ে দেশ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, সেই বাংলাদেশ আর নেই। এমন পরিস্থিতিতে আপসকামী নয়, সঠিক নেতৃত্ব দরকার।
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা সুলতানা কামাল বলেন, সব ধর্মের মানুষের সমান অধিকারের জন্য মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল। কিন্তু এখন মানুষের নিরাপত্তা, সম্মান, সামাজিক মূল্যবোধ কিছুই নেই। শুধু কীভাবে টাকা বানানো যায়, তা অগ্রাধিকার পাচ্ছে। রাজনীতিতে ধর্মের ব্যবহার চলছে। স্বাধীন দেশের প্রত্যেকটি কর্মকাণ্ড মুক্তিযুদ্ধের ভাবাদর্শের বিপরীতে চলে গেছে।
সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের সভাপতি রামেন্দু মজুমদার বলেন, প্রতিবাদহীনতার কারণে দেশে অসহিষ্ণুতা ছড়িয়ে পড়েছে। অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে সামাজিকভাবে সবাইকে প্রতিবাদ করতে হবে। আমরা অসাম্প্র্রদায়িক, যুক্তিনির্ভর ও সহিষ্ণু বাংলাদেশ চাই।
মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি সারওয়ার আলী বলেন, দেশকে রক্ষা করতে হলে তরুণ সমাজসহ সকল সামাজিক-সাংস্কৃতিক কর্মীদের এগিয়ে আসতে হবে। সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।
অধ্যাপক এম এম আকাশ বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চারটি মূলনীতির একটিও এখন দেশে বলবৎ নেই। সামাজিক যে প্রতিরোধ ছিল, তা এখন নেই। এসবের বিরুদ্ধে তরুণ সমাজের রুখে দাঁড়ানোর আগে আমাদের সাংস্কৃৃতিক কর্মকাণ্ড বাড়াতে হবে, ৬০-এর দশকের ছায়ানটের মতো।
আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে 'নিজেরা করি'র নির্বাহী ও মানবাধিকারকর্মী খুশী কবির, নুর মোহাম্মদ তালুকদার প্রমুখ বক্তব্য দেন।
- বিষয় :
- আলোচনা সভা
- বিশিষ্টজন
- রাষ্ট্র
- সামাজিক কর্মকাণ্ড