কাকরাইলের সমাবেশে এ পর্যন্ত এসেছে ৫০ বাস

ক্যাম্পাস থেকে বাসে করে আসছেন জবি শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। ছবি: সমকাল
জবি প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৬ মে ২০২৫ | ১৫:০০
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনে যোগ দিতে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একের পর এক বাস আসছে কাকরাইলে। আজ শুক্রবার ৯টা থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত রোটেশনে প্রায় ৫০টি বাস ক্যাম্পাস থেকে কাকরাইল মোড়ে এসেছে।
আজ দুপুর ১২টা ৩০ মিনিটে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছোট বড়, ডাবল ডেকার বাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষার্থী কর্মকর্তা কর্মচারী আসছেন। প্রতিটি বাসে সিট ছাড়াও দাঁড়িয়ে আসতে দেখা যায় অনেককে। আন্দোলনে আসা বাসগুলো আন্দোলনস্থল কাকরাইলে শিক্ষার্থী নামিয়ে আবার ক্যাম্পাসে ফিরে যাচ্ছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন পুল দপ্তরের এক কর্মকর্তা জানান, আন্দোলনে যোগ দিতে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এখন পর্যন্ত মোট ৫০টি বাস ক্যাম্পাস থেকে ছেড়ে গেছে। অনেক ড্রাইভার অসুস্থ, ফলে প্রতিটি বাসে রোটেশন আকারে মোট ৫০টি বাস ছেড়ে গেছে। একেকটি বাস ৩ থেকে ৪ বার গেছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী প্রভাষ সরকার সমকালকে বলেন, এই দাবি আমাদের সবার। সকল জবিয়ানদের। দাবি আদায়ে বাস ভর্তি করে কাকরাইলে যাচ্ছি। আমাদের দাবি মানতে হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন প্রশাসক তারেক বিন আতিক বলেন, সকাল থেকেই বাস সার্ভিস চলমান আছে। নামাজের আগে ও পরেও চলমান থাকবে।
জবির শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা টানা তৃতীয় দিনের মতো রাজধানীর কাকরাইল মসজিদ মোড়ে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। আজ সকাল ১০টার দিকে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা কাকরাইল মসজিদ মোড়ে জড়ো হয়েছেন। জবি ঐক্যের পক্ষ থেকে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক রইছউদ্দীন বৃহস্পতিবার নতুন কর্মসূচি ঘোষণা দিয়ে বলেন, দাবি আদায়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা শুক্রবার জুমার নামাজের পর গণঅনশন শুরু করবে। এতে সকল সাবেক ও বর্তমান জবিয়ানদের অংশ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়।
এছাড়া আন্দোলনে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকদের ওপর পুলিশের হামলার প্রতিবাদে ১৪ মে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কালো দিবস পালনের ঘোষণা দেন তিনি। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) অনির্দিষ্টকালের জন্য শাটডাউন ঘোষণা করা হয়েছে।
আগের দিন বৃহস্পতিবার সকাল থেকে কাকরাইল মোড়ে জড়ো হন শিক্ষার্থীরা। অন্তত ৩০টি বাসে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যোগ দেন শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। আন্দোলনের কারণে সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। তবে শিক্ষার্থীরা অ্যাম্বুলেন্সসহ জরুরি যান চলাচলের ব্যবস্থা করে দেন।
আন্দোলনের মধ্যে দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষের সঙ্গে বৈঠক করেন শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক চৌধুরী রফিকুল আবরার। তবে আলোচনা ফলপ্রসূ হয়নি। পরে বিকেলে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার সঙ্গে বৈঠক করেন উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ। এ বৈঠকের বিষয়ে কিছু জানা যায়নি।
এর আগে বুধবার বেলা পৌনে ১২টায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনা অভিমুখে রওয়ানা হয়। পদযাত্রা প্রথমে গুলিস্তান মাজার গেটে বাধার মুখে পড়েন। পরে মৎস ভবনে ফের পুলিশের বাধা অতিক্রম করে যমুনা অভিমুখে এগিয়ে যেতে থাকেন জবি শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের পদযাত্রা কাকরাইল মসজিদ ক্রসিং মোড়ে যেতেই অতর্কিত টিয়ারগ্যাস, সাউন্ড গ্রেনেড, গরম পানি নিক্ষেপ করতে শুরু করে পুলিশ। এতে শিক্ষক-শিক্ষার্থী সাংবাদিকসহ শতাধিক আহত হন। এরপর রাতে আলোচনার জন্য উপাচার্য অধ্যাপক ড. রেজাউল করিম এবং ট্রেজারার অধ্যাপক ড. সাবিনা শরমিন শিক্ষা উপদেষ্টা ও উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের বাসায় দীর্ঘসময় মিটিং করলেও কোনো সমাধান আসেনি।