রেস্তোরাঁয় নেই ডিম ভাজা

সমকাল প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৫ অক্টোবর ২০১৯ | ০৫:০৮
রুটির সঙ্গে ডিম ভাজা, সবজি- এই তো শহুরে মধ্যবিত্ত বাঙালির সকালের নাশতা। কাজের খাতিরে কিংবা ব্যাচেলর জীবনের কারণে যারা সকালের নাশতা ঘরের বাইরে করেন, তাদের জন্য দুঃসংবাদ। ডিম, পেঁয়াজ আর কাঁচামরিচের দাম বাড়তির দিকে বলে ঢাকার পাড়া-মহাল্লার খাবার দোকানে পাওয়া যাচ্ছে না ওমলেট বা ডিম ভাজা।
রাজধানীর জিগাতলার ট্যানারি মোড়ে পাশাপাশি দুটি খাবার দোকান 'বিসমিল্লাহ রেস্টুরেন্ট' এবং 'তৃপ্তি বিরিয়ানি'। শুক্রবার সকাল ১১টার দিকে দুই দোকানেই ঢু মেরে জানা গেল, সকালের নাশতার মেন্যুতে নেই ডিম ভাজা। কারণ আর কিছু নয়, ডিম, পেঁয়াজ আর কাঁচামরিচের দাম বেশি।
বিসমিল্লাহ রেস্টুরেন্টের ম্যানেজার আবুল হাশেম জানালেন, এক ডজন ডিমের দাম ১১০ টাকা। ডিমের শ' ৯০০ টাকা। প্রতিটি ডিমের দাম পড়ে ৯ টাকা। পেঁয়াজের কেজি ৮০ থেকে ৮৫ টাকা। তিন দিন আগেও ছিল ১০০ টাকা। কাঁচামরিচের কেজি ৬০ থেকে ৭০ টাকা। এত দাম দিয়ে নানা উপকরণ কিনে ১৫ টাকায় ডিম ভাজা বিক্রি করলে লোকসান হয়। আবার দাম বেশি রাখলে কাস্টমারের সঙ্গে ঝগড়াঝাঁটি করতে হয়। এ কারণে ডিম পোচ করলেও ডিম ভাজা বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছেন।
আবুল হাশেমের দাবি, একটি ডিম ভাজায় উপকরণেই খরচ পড়ে ১২ থেকে ১৩ টাকা। তার ওপর রয়েছে তেল ও গ্যাসের খরচ। রয়েছে কর্মচারী ও দোকান খরচ। এসব মিটিয়ে বিক্রি করতে গেলে প্রতিটি ডিম ভাজার দাম পড়বে ২০ টাকার বেশি। কিন্তু ২০ টাকায় ট্যানারি মোড়ের মতো এলাকায় ডিম ভাজা বিক্রি করলে কাস্টমারের গালি খেতে হবে। তাই ঝামেলা এড়াতে বিক্রিই বন্ধ রেখেছেন।
ট্যানারি মোড়ের আমানউল্লাহ স্টোরের দোকানি আমানউল্লাহ জানালেন, ডিমের শ' ৯০০ টাকা। তারা প্রতি ডজন পাইকারি বিক্রি করেন ১১০ টাকা। কয়েক মাস আগেও ১০০ ডিমের দাম ছিল ৬০০ টাকা। বিক্রি করতেন ৭০ থেকে ৭৫ টাকা ডজন দরে। দাম তারা বাড়াননি, বেড়েছে কারওয়ান বাজার আড়তে। আড়ত থেকে বেশি দামে কিনছেন, তাই বিক্রি করতে হচ্ছে বেশি দামে।
সপ্তাহ খানেক ধরে পেঁয়াজের দাম দেশজুড়ে আলোচনার বিষয়। কারওয়ান বাজার ঘুরে জানা গেল, গত তিন দিনে দাম কমেছে। দেশি পেঁয়াজের পাল্লা (পাঁচ কেজি) এখন ৪০০ টাকার কম। দিন চারেক আগে প্রতি পাল্লার দাম উঠেছিল ৫২০ টাকা। তখন খুচরা বাজারে পেঁয়াজ বিক্রি হতো ১২০ টাকা কেজি।
বর্ষার পরও কাঁচামরিচের দাম কেন ৬০ টাকা কেজি- এর জবাব পাওয়া গেল না কারওয়ান বাজারে। সপ্তাহ দুই আগেও কাঁচামরিচের দাম ছিল ৩০ টাকার ঘরে। সিটি করপোরেশন মার্কেটের আড়তদার নুরুল ইসলামের দাবি, অকাল বন্যার কারণে দাম বাড়তি। আরেক বিক্রেতা নাজির হোসেনের দাবি, বছরের এই সময়টাতে মরিচের উৎপাদন কম থাকে। তাই দাম বেশি।
সেগুনবাগিচার ভোজন রেস্তোরাঁয় গতকাল ডিম ভাজা বিক্রি হয় ২৫ টাকায়। দোকানের ক্যাশিয়ার বললেন, কিচ্ছু করার নেই। যেমন জোগান, তেমন বিক্রি। ক্ষতি কাস্টমারের।