আসছে বাজেট
পানি, স্যানিটেশন ও স্বাস্থ্যবিধি খাতে আঞ্চলিক বৈষম্য

বাজেটে ওয়াশ খাতে বরাদ্দ বিষয়ে সোমবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন পিপিআরসির চেয়ারম্যান ড. হোসেন জিল্লুর রহমান, ওয়াটারএইডের কান্ট্রি ডিরেক্টর হাসিন জাহান প্রমুখ
সমকাল প্রতিবেদক
প্রকাশ: ৩০ মে ২০২২ | ২১:৫৮ | আপডেট: ৩০ মে ২০২২ | ২১:৫৮
পানি, স্যানিটেশন ও হাইজিন বা স্বাস্থ্যবিধি (ওয়াশ) খাতে বাজেট বরাদ্দ গ্রামাঞ্চল ও দুর্গম এলাকার বিপরীতে শহর ও মহানগরে অনেক বেশি। চলতি অর্থবছরে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) মোট বরাদ্দের মধ্যে এ খাতে ছিল ৫ দশমিক ৪৪ শতাংশ বা ১৪ হাজার ৫১৭ কোটি টাকা। এ ছাড়া দুর্গম অঞ্চলে বরাদ্দ ছিল মাত্র শূন্য দশমিক ২৬ শতাংশ। অথচ চারটি প্রধান নগরীর ওয়াসায় এবং ১২টি সিটি করপোরেশনে বরাদ্দ ছিল ৭২ শতাংশ। এ অবস্থায় সব ধরনের নাগরিকের সমতা বিধান নিশ্চিত করা এবং এসডিজি অর্জনে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে এ খাতে বাজেট বরাদ্দ বাড়ানোর পাশাপাশি বৈষম্য দূর করতে হবে।
সোমবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে 'ওয়াশ খাতে এডিপি বরাদ্দে আঞ্চলিক বৈষম্য: এসডিজি-৬ অর্জনে একটি বাধা' শীর্ষক প্রতিবেদনে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। '২০২২-২৩ জাতীয় বাজেটে নিরাপদ পানি, স্যানিটেশন ও হাইজিন (ওয়াশ) খাতে বরাদ্দ' শিরোনামে বাজেট-পূর্ব সংবাদ সম্মেলনে প্রতিবেদনটি তুলে ধরেন পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টারের (পিপিআরসি) চেয়ারম্যান ও অর্থনীতিবিদ ড. হোসেন জিল্লুর রহমান।
ওয়াটারএইড বাংলাদেশ, পিপিআরসি, ইউনিসেফ বাংলাদেশ, ফানসা-বিডি, এফএসএম নেটওয়ার্ক, বাংলাদেশ ওয়াটার ইন্টিগ্রিটি নেটওয়ার্ক (বাউইন), স্যানিটেশন অ্যান্ড ওয়াটার ফর অল অ্যান্ড ওয়াটার পভার্টি, এমএইচএম প্ল্যাটফর্ম এবং ওয়াশ অ্যালায়েন্স ইন্টারন্যাশনাল যৌথভাবে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।
ড. হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, চারটি বড় শহরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বরাদ্দ পায় ঢাকা ও চট্টগ্রাম ওয়াসা। রাজশাহী মোটামুটি পেলেও খুলনা একেবারেই কম বরাদ্দ পায়। ওয়াসার মোট বরাদ্দের মাত্র ৩ শতাংশ পায় খুলনা ওয়াসা। শহরাঞ্চলের মাঝেও বাজেট বরাদ্দে বৈষম্য কমাতে হবে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, এসডিজি বাস্তবায়নের জন্য হাতে আর মাত্র আট বছর সময় থাকলেও ওয়াশ সম্পর্কিত লক্ষ্যমাত্রাগুলোর অগ্রগতি সন্তোষজনক নয়, যা বড় উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। জাতীয় অগ্রাধিকার সূচক অনুযায়ী নিরাপদ খাবার পানির ক্ষেত্রে শতভাগ লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ২০২১ সাল পর্যন্ত অর্জন মাত্র ৫৯ শতাংশ। জাতীয় অগ্রাধিকার সূচক অনুযায়ী শতভাগ মানুষের জন্য নিরাপদ স্যানিটেশন সেবার যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে, সেখানে ২০২১ সাল পর্যন্ত অগ্রগতি মাত্র ৩৯ শতাংশ। তার মধ্যে গ্রামে ৪২ ও শহরে ৩৪ শতাংশ।
প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, স্বাস্থ্যবিধি বা হাইজিনের অন্যান্য মৌলিক নির্দেশকের অগ্রগতি মাত্র ৫৮ শতাংশ এবং 'সাবান অথবা পানি ছাড়া' নির্দেশকের জাতীয় অগ্রগতি মাত্র ৩৬ শতাংশ। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবস্থান দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে নিচের দিক থেকে দ্বিতীয়। এ বিষয়ে হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, অগ্রগতির এ মাত্রা বলে দেয় বাংলাদেশকে পানি, নিরাপদ স্যানিটেশন ও পরিচ্ছন্নতার (হাইজিন) ক্ষেত্রে এসডিজির লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে আরও অনেক পথ পাড়ি দিতে হবে।
ওয়াটারএইডের কান্ট্রি ডিরেক্টর হাসিন জাহান বলেন, সঠিক এডিপি প্রকল্প নির্বাচনে মনোযোগী হওয়া এবং গ্রাম ও প্রত্যন্ত অঞ্চলে ওয়াশ বিষয়ে বরাদ্দের ব্যবধান কমানোর প্রয়োজনীয়তাকে গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করার উচিত। তবে শুধু অর্থ বরাদ্দ বাড়ালেই চলবে না, সে অর্থের সদ্ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।
- বিষয় :
- স্যানিটেশন
- হাইজিন
- স্বাস্থ্যবিধি
- বাজেট বরাদ্দ