ঢাকা শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫

৯ মাসে ২২ হাজার মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্ট স্থগিত

৯ মাসে ২২ হাজার মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্ট স্থগিত

সমকাল প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | ১৮:০০

অনলাইন জুয়া, বৈদেশিক মুদ্রার অবৈধ লেনদেন এবং হুন্ডির সঙ্গে জড়িত থাকার বিশ্বাসযোগ্য তথ্য পাওয়ার পর চলতি বছরের প্রথম ৯ মাসে ২১ হাজার ৭২৫টি মোবাইল ব্যাংকিং বা এমএফএস অ্যাকাউন্ট স্থগিত করেছে অবৈধ আর্থিক লেনদেন প্রতিরোধে গঠিত সংস্থা বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)।

গতকাল বুধবার বিএফআইইউর উপপ্রধান এএফএম শাহিনুল ইসলাম সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি জানান, এসব অ্যাকাউন্টের বেশির ভাগই বিকাশ, নগদ ও রকেটের। ভবিষ্যতে এ ধরনের লেনদেনে জড়িত না হতে সংশ্লিষ্ট এমএফএস কোম্পানিকে সতর্ক করা হয়েছে।

বিএফআইইউর ওই কর্মকর্তা জানান, চলতি বছরে এখন পর্যন্ত ৩৭১টি অনলাইন গেম এবং জুয়ার লেনদেন, অনলাইন ফরেক্স ট্রেডিং সংশ্লিষ্ট ৯১ লেনদেন এবং ক্রিপ্টোকারেন্সি সংশ্লিষ্ট ৪১৩ লেনদেনের তথ্য সংগ্রহ করেছে সংস্থাটি। এর বাইরে ৮১৪টি ওয়েবসাইট, ১৫৯টি অ্যাপ এবং ৪৪২টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পেজ শনাক্ত করা হয়েছে এসব অবৈধ কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত আছে।

বিএফআইইউর উপপ্রধান আরও জানান, অবৈধ আর্থিক লেনদেনের সঙ্গে ২১টি মানি চেঞ্জার প্রতিষ্ঠানের ৩৯টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টও শনাক্ত করা হয়েছে। এসব তথ্য বিশ্লেষণ করে অধিকতর তদন্ত ও আইনি ব্যবস্থা নিতে পুলিশের ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্টের (সিআইডি) কাছে পাঠানো হয়েছে।

গত মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর মানি লন্ডারিংবিরোধী কমপ্লায়েন্স কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকেও বিএফআইইউর পক্ষ থেকে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। বিএফআইইউ প্রধান মো. মাসুদ বিশ্বাসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সংস্থাটির উপপ্রধান কর্মকর্তা এ এফ এম শাহীনুল ইসলাম, বিএফআইইউর পরিচালক মো. রফিকুল ইসলাম এবং মো. আরিফুজ্জামান।

বৈঠকে উপস্থিত সূত্র জানায়, কাগজে প্রতিষ্ঠানের নামে ঋণ গ্রহণ করে বা নন-ফান্ডেড সুবিধাকে ফান্ডেড সুবিধায় রূপান্তর ও ফোর্সড লোন সৃষ্টি করে বিদেশে অর্থ পাচার করা হচ্ছে মর্মে তথ্য রয়েছে বিএফআইইউর কাছে। বৈদেশিক বাণিজ্যের আড়ালে এসব অর্থ পাচার হচ্ছে। পাশাপাশি অনলাইন ফরেক্স ট্রেডিং, গেমিং, বেটিং, ডিজিটাল হুন্ডি, ক্রিপ্টোকারেন্সি এক্সচেঞ্জ প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে অবৈধ লেনদেন হচ্ছে। সভায় প্রবাসী বাংলাদেশিরা যাতে বৈধ পথে রেমিট্যান্সের অর্থ পাঠান, সে বিষয়ে তাদের উদ্বুদ্ধ করতে ব্যাংকগুলোকে কাজ করার আহ্বান জানানো হয়।

দুষ্কৃতকারী ও অর্থ পাচারকারীরা যাতে বাংলাদেশের ব্যাংকিং ব্যবস্থা ব্যবহার করতে না পারে, সে বিষয়ে সচেতন ও সতর্ক থাকার আহ্বান জানান বিএফআইইউ প্রধান মাসুদ বিশ্বাস। বিএফআইইউ এ ধরনের আর্থিক অপরাধের বিষয়ে কঠোর অবস্থানে থাকবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, যাদের নির্লিপ্ততা বা কাজের দুর্বলতার সুযোগে এসব অপরাধ সংঘটিত হবে, তাদের বিরুদ্ধেও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

আরও পড়ুন

×