ঢাকা শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫

মামুনুর রশীদের বয়স ৭৬, জন্মদিন কেনো ১৯ তম?

মামুনুর রশীদের বয়স ৭৬, জন্মদিন কেনো ১৯ তম?

মামুনুর রশীদ। ছবি: সংগৃহীত

বিনোদন প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ | ১৪:২৪ | আপডেট: ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ | ১৪:৪৫

বয়স তার ৭৬, অথচ জন্মদিন  ১৯তম! শুনলে গোলমেলে লাগে, কিন্তু এটাই সত্যি। অধিবর্ষে জন্ম নেওয়া বরেণ্যে অভিনেতা মামুনুর রশীদের জন্মদিন আসে চার বছর পরপর। তাই দিনটি নিয়ে বাড়তি উন্মাদনা থাকে, থাকে নানা আয়োজন।  

বয়স  ছিয়াত্তরেও নিজেকে এখনও তরুণ ভাবেন মামুনুর রশীদ। তারুণ্য কীভাবে ধরে রাখেন, সে ব্যাখ্যাও দিলেন।  ‘বয়স কম থাকলে অনেক অসম্ভবকে সম্ভব করা যায়। কিন্তু বয়স বাড়তে থাকলে হয়ত কখনো কখনো ক্লান্তি আসে। আমি এমন একটি ক্ষেত্রে কাজ করছি, যার কোনো অবসর নেই- রিটায়ারমেন্ট নেই। আমি ধরেই নিয়েছি, জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত কাজ করে যাব। তার ফলে হয়েছে যেটা, তারুণ্যের যে একটা শক্তি, তা কেমন করে যেন আমি অবলীলায় পেয়ে যাই।’

মামুনুর রশীদের জন্ম ১৯৪৮ সালের ২৯ ফেব্রুয়ারি, টাঙ্গাইলের কালিহাতির পাইকড়া গ্রামে। তবে বাবার চাকরির সুবাদে দেশের বিভিন্ন জায়গায় থেকেছেন, পড়েছেন। সবশেষ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নিয়েছেন রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ওপর উচ্চতর ডিগ্রি।

অভিনেতা হিসেবে অধিক সফল ও নন্দিত হলেও মামুনুর রশীদের পথচলার শুরুটা লেখালেখির মাধ্যমে। মাত্র ১৯ বছর বয়সেই তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান টেলিভিশনের জন্য নাটক লেখা শুরু করেন তিনি। তার লেখায় উঠে আসে গ্রামীণ জীবনের পটভূমি, পরিবার, সামাজিক ইস্যু ও বঞ্চিতদের অধিকারের বিষয়বস্তু।

নাট্যাঙ্গনে যোগ দেওয়ার চার বছরের মাথায় শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ। স্বাধীনচেতা, শিল্পমনা মানুষ হয়ে তিনি বসে থাকতে পারেননি। ছুটে গেছেন রণাঙ্গনে; কাজ করেছেন স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের সঙ্গেও। দেশ স্বাধীনের পর ১৯৭২ সালে গড়ে তোলেন ‘আরণ্যক’ নাট্যদল। যা বাংলাদেশের নাট্যশিল্পীদের অন্যতম আঁতুড়ঘর হিসেবে খ্যাত। এখনও এই দল নিয়ে কাজ করে চলেছেন তিনি।

জন্মদিনে আয়োজন:

এদিকে মামুনুর রশীদের জন্মদিন উপলক্ষে তিন দিনব্যাপী নাট্যোৎসবের আয়োজন করেছে আরণ্যক নাট্যদল।

বৃহস্পতিবার থেকে ২ মার্চ আরণ্যকের ‘আলোর আলো নাট্যোৎসব’ হবে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি ও মহিলা সমিতির নীলিমা ইব্রাহিম মিলনায়তনে। উৎসবে থাকবে মামুনুর রশীদ রচিত ও নির্দেশিত নাটকের মঞ্চায়ন, সংগীত, নৃত্য, সেমিনার, প্রদর্শনী ও থিয়েটার আড্ডা।

বৃহস্পতিবার বিকাল ৫টায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালায় উৎসবের উদ্বোধন করবেন অভিনেত্রী ফেরদৌসী মজুমদার। এছাড়া দেশ-বিদেশের সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বরাও আসবেন অতিথি হয়ে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করবেন অনিমা মুক্তি গোমেজ, অনিমা রায়, চঞ্চল চৌধুরী, ফজলুর রহমান বাবু ও রাহুল আনন্দ। বাঁশি বাজাবেন উত্তম চক্রবর্তী। ওয়ার্দা বিহাবের পরিচালনায় নৃত্য পরিবেশন করবে ধৃতি নর্তনালয়।

১ মার্চ সকাল ১০টায় শিল্পকলা একাডেমির সেমিনার রুমে হবে ‘একজন দায়বদ্ধ সৃজনকর্মীর নাট্যপরিভ্রমণ’ শীর্ষক সেমিনার। আলোচনার ধারণাপত্র পাঠ করবেন মলয় ভৌমিক। বিকাল সাড়ে ৪টা এবং সন্ধ্যা ৭টায় বাংলাদেশ মহিলা সমিতির নীলিমা ইব্রাহিম মিলনায়তনে হবে ‘রাঢ়াঙ’ নাটকের পরপর দুটি প্রদর্শনী। নাটকটি রচনা ও নির্দেশনা দিয়েছেন মামুনুর রশীদ।

২ মার্চ বিকাল সাড়ে ৩টায় বাংলাদেশ মহিলা সমিতির নীলিমা ইব্রাহিম মিলনায়তনে হবে থিয়েটার আড্ডা ‘নাট্যকর্মীদের মুখোমুখি মামুনুর রশীদ’। সন্ধ্যা ৭টায় একই হলে প্রদর্শিত হবে নাটক ‘কহে ফেসবুক’। নাটকটি রচনা ও নির্দেশনা দিয়েছেন মামুনুর রশীদ।

আরণ্যক নাট্যদলের প্রধান সম্পাদক ফয়েজ জহির বলেন, "বাংলাদেশের নবনাট্যযাত্রার প্রাণপুরুষ, আরণ্যক নাট্যদলের প্রতিষ্ঠাতা, বরেণ্য নাট্যকার, নির্দেশক ও অভিনেতা মামুনুর রশীদ। জীবন আর শিল্পের সীমারেখাকে একাকার করে দিয়ে নাটককে তিনি পরিণত করেছেন আন্দোলন, সংগ্রাম আর স্বপ্নপূরণের হাতিয়ারে। মানুষের কাছে দায়বদ্ধ বাংলাদেশের নাট্যযোদ্ধারা তার সুরে সুর মেলায়। তার কণ্ঠে কণ্ঠ মিলিয়ে শোনায় জাগরণের অভয়বাণী।


 

সম্পর্কিত

আরও পড়ুন

×