আরও ‘শিকারের খোঁজে’ সোমালিয়ার জলদস্যুরা
বাংলাদেশি জাহাজ অপহরণের পর ‘উৎসাহ’ বেড়েছে

সাগরে সোমালিয়ান জলদস্যু। ছবি: ইউএস নেভি
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ১৫ মার্চ ২০২৪ | ১৫:১৬ | আপডেট: ১৫ মার্চ ২০২৪ | ১৬:১৯
ভারত মহাসাগরে বাংলাদেশের পতাকাবাহী জাহাজ ‘এমভি আব্দুল্লাহ’ অপহরণের ‘সাফল্যে’ সোমালিয়ার জলদস্যুদের ‘উৎসাহ ও তৎপরতা’ বেড়ে গেছে। তারা আরও জাহাজকে ফাঁদে ফেলার জন্য আবারও সাগরে রওনা হয়েছে।
সমুদ্রপথে নিরাপত্তা সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ‘অ্যামব্রে’ জানতে পেরেছে, সন্দেহভাজন চারটি জলদস্যু দল ‘শিকারের সন্ধানে’ সোমালিয়ার হোবিও, নুগাল ও মুডুগ এলাকা থেকে সাগরে রওনা হয়েছে। দস্যুদের জলযানে ৩৬ জন সশস্ত্র লোক রয়েছে। খবর- স্প্ল্যাশের।
গত মঙ্গলবার (১২ মার্চ) বাংলাদেশ সময় দুপুর দেড়টার দিকে ‘এমভি আব্দুল্লাহ’ নিয়ন্ত্রণে নেয় সোমালিয়ার জলদস্যুরা। সে সময়ে জাহাজটি সোমালিয়ার রাজধানী মোগাদিসু থেকে প্রায় ৭০০ মাইল দূরে ছিল। জাহাজে থাকা ২৩ জন বাংলাদেশি নাবিক ও ক্রু বর্তমানে জলদস্যুদের হাতে জিম্মি।
যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদ মাধ্যম এবিসি নিউজের প্রতিবেদনে জানা গেছে, ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের (ইইউ) মেরিটাইম সিকিউরিটি ফোর্সের একটি যুদ্ধজাহাজ ‘এমভি আবদুল্লাহ’র পিছু নিয়েছে।
ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন বিবৃতিতে জানায়, ভারত মহাসাগরে জলদস্যুদের উৎপাত এড়াতে এবং প্রতিহত করতে কাজ করে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের অপারেশন আটলান্টা। এর অন্তর্ভুক্ত একটি জাহাজই ‘এমভি আবদুল্লাহকে’ ছায়ার মতো অনুসরণ করছে।
জাহাজের ২৩ জনকে জলদস্যুরা জিম্মি করেছে উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, জিম্মিরা নিরাপদ আছেন।
লন্ডন ও কুয়ালালামপুরভিত্তিক জলদস্যুতা পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম ব্যুরোর (আইএমবি) জানায়, শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টায় জিম্মি ২৩ নাবিক-ক্রুসহ বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহকে নিজ আস্তানায় নিয়ে গেছে সোমালিয়ার জলদস্যুরা। জাহাজটি সোমালিয়ার গারাকাদ উপকূল থেকে ৭ নটিক্যাল মাইল দূরে নোঙর করে তারা।
এদিকে জিম্মি থাকা এক নাবিক গতকাল সকাল ৮টার দিকে জাহাজের মালিকপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছেন। তারা সুস্থ আছেন, জলদস্যুরা সেহরি ও ইফতার করার সুযোগ দিচ্ছে।
শুধু এমভি আবদুল্লাহ নয়; আরও অনেক জাহাজের বাংলাদেশি নাবিক ও ক্রু সোমালিয়ার জলদস্যুদের কাছে অতীতে জিম্মি হয়েছিলেন। তাদের কেউ ২০ মাস পর, কেউ ১০ মাস পর জিম্মিদশা থেকে মুক্তি পান। ২০১২ সালে সোমালিয়ার জলদস্যুদের হাতে ২০ মাসেরও বেশি সময় জিম্মি থাকার পর বাংলাদেশি সাত নাবিক মুক্তি পান। ২০১০ সালের ২৬ নভেম্বর ভারত মহাসাগর থেকে মালয়েশিয়ার পতাকাবাহী জাহাজ এম ভি আলবেডোকে জিম্মি করে সোমালিয়ার জলদস্যুরা। এ সময় তারা জাহাজটিতে থাকা ২২ কর্মকর্তাকে জিম্মি করে। এই ২২ জনের মধ্যে ছিলেন ৭ জন বাংলাদেশি, ৭ জন পাকিস্তানি, ৬ জন শ্রীলঙ্কান এবং একজন করে ভারতীয় ও ইরানি নাগরিক। তাদের সবাই মুক্তিপণ দিয়ে দীর্ঘ সময় পর মুক্ত হয়েছিলেন।
কেএসআরএম গ্রুপের আরেকটি জাহাজ এমভি জাহান মণি সোমালিয়ার জলদস্যুদের কবল থেকে মুক্তিপণ দিয়ে ছাড়া পায় ১০০ দিন পর। জিম্মি হওয়ার আট মাস পরও সোমালীয় জলদস্যুদের কবল থেকে মুক্ত হওয়ার ঘটনার সাক্ষী আছেন দুই বাংলাদেশি নাবিক। তাদের একজন জাফর ইকবাল। অন্যজন নাবিক গিয়াসউদ্দিন আজম খান। তারা জিম্মি হওয়া ‘এমভি মারিয়া মার্গারেট’ নামের জার্মানির পতাকাবাহী জাহাজে কর্মরত ছিলেন।
- বিষয় :
- ভারত মহাসাগর
- জলদস্যু
- সোমালিয়া
- জাহাজ
- এমভি আবদুল্লাহ
- জিম্মি